সাইফুদ্দিন আহমেদ নান্নু: আমাদের মিডিয়া- কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সমাজের বিশিষ্টজন, ভিআইপি, ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের করোনায় মৃত্যুবরণ করা, তাদের আক্রান্ত হবার খবর বরাবরই গুরুত্বের সঙ্গে ক্রমাগত প্রচার করে গেছেন। কিন্তু একই সময়ে তাদের বাইরে সাধারণ, খেটে খাওয়া মানুষেরাও যে করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন, আক্রান্ত হয়েছেন তার কোনো একজনেরও মৃত্যুর খবরও আলাদা করে দেখায়নি, বলেনি।
যাদের দেখিয়েছে সবাই সমাজের উঁচুতলার মানুষ, বিশিষ্টজন। ফলে নিম্নআয়ের খেটেখাওয়া মানুষের মাঝে একটি ধারণা এমন গভীরভাবে গেঁথে গেছে যে, গরিব, খেটেখাওয়া সাধারণ মানুষের করোনা হয় না, করোনা বড়লোকদের রোগ। শিক্ষিত, দায়িত্বশীল মানুষেরাও সেটা বিশ্বাস করেছেন। টকশোতেও এমন কথা অনেককেই বলতে শুনেছি। কিন্তু সে ধারণা যে চরম ভুল, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর সংক্রমণের হারের দিকে তাকালেই বোঝা যায়। এসব জেলায় সংক্রমণের হার ৫০ থেকে ৬০-৬৫ শতাংশ। এই ব্যাপক সংক্রমনের বড় অংশই কিন্তু সাধারণ মানুষ, খেটেখাওয়া মানুষ, উঁচুতলার বিশিষ্টজনেরা নন।
বুঝে, না বুঝে মিডিয়া গত একবছরে খুব ক্ষতিকর একটা মেসেজ সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মনে পুশ করে ফেলেছে। এখন মিডিয়ারই দায়িত্ব ফোকাসটা বদলে ফেলা। দরিদ্র, খেটে খাওয়া মানুষদের করোনায় আক্রান্ত হওয়া, মৃত্যুবরণ করা,তাদের চিকিৎসা সংকটকে সামনে আনা। তাতে সিংহভাগ মানুষের ভুল ধারণা ভাঙে, তারা সচেতন হন, বুঝেন যে, করোনা কাউকে ছাড়ে না।
[২] একদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ সীমান্তবর্তী অনেক জেলার করোনা পরিস্থিতি ভীষণ উদ্বেগজনক। হাসপাতালে সিট নেই, অক্সিজেনের সংকট তীব্র। অন্যদিকে রাজধানীসহ অন্য জেলার মানুষদের মাঝে কোনো উদ্বেগ নেই। আমাদের মানিকগঞ্জে ঈদের আগে যতোজন মানুষ মাস্ক পরেছেন এখন তার অর্ধেক মানুষও মাস্ক পরে না। সামাজিক দূরত্বের তো বালাই-ই নেই। আমাদের এবং আমাদের নীতিনির্ধারকদের ধারণা চাঁপাইনবাবগঞ্জ মনে হয় সাতসমুদ্র তেরো নদীর ওপারে,বহুদূরে। যে করোনা তিন মাসের মধ্য চীন থেকে দেশে আসতে পারে, সেই করোনার নাতিপুঁতিসহ চাঁপাই থেকে ঢাকা, মানিকগঞ্জে আসতে সময় নেবে না। দয়া করে মাস্কটা পরুন। নিজেকে খুনির ভূমিকায় নামাবেন না। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :