শিরোনাম
◈ গাজীপুরে হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু  ◈ বিশৃঙ্খলার পথ এড়াতে শিশুদের মধ্যে খেলাধুলার আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী ◈ তাপপ্রবাহের কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসও বন্ধ ঘোষণা ◈ সোনার দাম কমেছে ভরিতে ৮৪০ টাকা ◈ ঈদযাত্রায় ৪১৯ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি ◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সেই সম্পত্তি দিয়ে দেবো (ভিডিও)

প্রকাশিত : ২৮ মে, ২০২১, ০৯:৫৬ সকাল
আপডেট : ২৮ মে, ২০২১, ০২:৩১ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] মার্কিন সেনা প্রশিক্ষণের পর আফ্রিকায় ১৩ বছরে ৭টি ক্যু সংঘটিত

রাশিদুল ইসলাম : [২] মালিতে সামরিক অভ্যুত্থান সাম্প্রতিক উদাহরণ মাত্র। ল্যাটিন আমেরিকায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী ডানপন্থী গেরিলা বাহিনীকে প্রশিক্ষণের জন্য কুখ্যাত, জি ফাইভ সাহেল দেশগুলির জন্য ফ্লিনটলক অনুশীলন সহ আফ্রিকায় পেন্টাগনের সামরিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচী খুব কমই পরিচিত। তবে গত ১৩ বছরে এসব দেশে অন্তত ৭টি অভ্যুত্থান ঘটেছে। স্পুটনিক

[৩] সর্বশেষ মালিতে যে সামরিক অভ্যুত্থান হয়ে গেলে তা হচ্ছে গত ৯ মাসের মধ্যে দ্বিতীয়। অভ্যুত্থানের পর অন্তবর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করা হয়।

[৪] পশ্চিমা ভাবধারায় সামরিক প্রশিক্ষণের পর বিভিন্ন দেশগুলোর মধ্যে সামরিক অভ্যুত্থানের পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে।

[৫] ২০০৮ সালে ইউএস আফ্রিকা কমান্ড গঠনের পর এসব দেশের সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণা দেওয়ার পর সংঘটিত বিভিন্ন সামরিক অভ্যুত্থানের জন্যে সরাসরিক দায়ী করা হচ্ছে এ কমান্ডকে। বেশিরভাগ অভ্যুত্থান ঘটে পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোতে।

[৬] ২০০৮ সালের আগস্টে মৌরতানিয়ায় জেনারেল মোহামেদ আউল্ড আব্দেল আজিজ সামরিক অভ্যুত্থান ঘটালে দেশটির প্রেসিডেন্ট সিদি আউল্ড শেখ আব্দাল্লাহি ক্ষমতাচ্যুত হন। ইউএস ইউরোপিয় কমান্ডের মুখপাত্র জানান যুক্তরাষ্ট্র জেনারেল আজিজের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। জেনারেল আজিজের সঙ্গে নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। তিন বছর আগে জেনারেল আজিজ আরেক সামরিক অভ্যুত্থানে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন।

[৭] ২০১১ সালে লিবিয়ায় মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে অপারেশন ওডিসি ডনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। তিনি আফ্রিকার দেশগুলোতে ইউএস আফ্রিকা কমান্ডের সদর দপ্তর স্থাপনের ঘোর বিরোধী ছিলেন। প্রথম বৃহত্তম সামরিক অভিযান ছিল।

[৮] ২০১২ সালে মালিতে প্রেসিডেন্ট আমাদো তোমানি তোরিকে ক্ষমতাচ্যুত করেন আমাদো স্যানোগো। আমাদো স্যানোগে বেশ কয়েকবার উচ্চতর সামরিক প্রশিক্ষণের জন্যে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া সহ বিভিন্ন স্থানে যান।

[৯] ২০১৩ সালে মিসরে আব্দেল ফাত্তাহ এল-সিসি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও সেনাবাহিনী প্রধান হিসেবে প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে। জেনারেল সিসি ১৯৮১ সালে জর্জিয়ার ফোর্ট বেটিং-এ বেসিক প্রশিক্ষণ কোর্স সহ মার্কিন সেনা ওয়ার কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করা হলে ওয়াশিংটন এটি অভ্যুত্থান হিসাবে স্বীকৃতি দেয়নি।

[১০] ২০১৫ সালে সাবেক সামরিক কর্মকর্তা গিলবার্ট ডিয়েনডেরে বুর্কিনা ফাসোতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পদচ্যুত করেন। গিলবার্ট আফ্রিকমের সামরিক প্রশিক্ষণে একাধিকবার অংশ নিয়েছেন।

[১১] নাইজার, চাদ, মালি কিংবা মৌরতানিয়ার মত দেশগুলোতে গত ২০ বছরে একাধিক ক্যু যারা ঘটিয়েছেন তারা কেউ না কেউ মার্কিন কমান্ডের অধীনে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।

[১২] ইইউ বিদেশ নীতি প্রধান জোসেপ বোরেল বলেন আমরা সেনাবাহিনীকে সরকার পতনের প্রশিক্ষণ দেই না তবে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে আমাদের মিশন অনুযায়ী অনুশীলন করানো হয়।

[১৩] শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয় ইউরোপের দেশ যেমন ফ্রান্স ছাড়াও চীন ও রাশিয়া এধরনে মিশন অনুযায়ী আফ্রিকার বিভিন্ন দেশকে সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।

[১৪] নাইন ইলেভেনের পর পেন্টাগন অপারেশন জুনিপার শিল্ড বা অপারেশন এন্ডুরিং ফ্রিডম নামে বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে। আফ্রিকার এক ডজনের বেশি দেশে সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্র।

[১৫] আফগানিস্তানে গত দুই দশকে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয়ের পর এধরনের ভঙ্গুর রাজ্যে সেনা প্রশিক্ষণ বা অস্ত্রশস্ত্রের জন্যে অর্থ দেওয়ার বিষয়টিকে মার্কিন নীতিনির্ধারকরা ফের আফগানিস্তানের পুনরাবৃত্তি হওয়ার ঝুঁকি হিসাবে গণ্য করছেন।

[১৬] ২০০১ সালে মার্কিন কংগ্রেস সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনীর ব্যবহারের অনুমোদন দিলে অঘোষিত যুদ্ধক্ষেত্রে হামলা চালানোর পক্ষে সুযোগ দেয় এবং আল-কায়েদার মত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অন্তর্গত বা তার সাথে যুক্ত রয়েছে এমন বিবেচনায় এধরনের হামলা বৈধ করা হয়।

[১৭] বিশেষজ্ঞরা বলছেন বিস্তৃত মার্কিন প্রশিক্ষণ কর্মসূচিগুলি এমনভাবে তাদের লক্ষ্য তৈরি করে বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে এমন সমস্যা তৈরি করে যা উচ্চ প্রশিক্ষিত, সশস্ত্র সামরিক বাহিনী তাদের যে ইচ্ছা তা বিভিন্ন দেশের দুর্বল সরকারগুলিতে চাপিয়ে দেওয়ার সুযোগ নেয়। এসব ক্ষেত্রে পশ্চিমা সংযোগ থাকায় একবার ক্ষমতায় আসার পরে তাদের ক্যাডাররা বিভিন্ন দেশের ক্ষমতার শীর্ষে অবস্থান করে এবং বিশ্বব্যাপী কথা এমনভাবে কথা বলে যা পশ্চিমা সরকারগুলোর পক্ষে যায়, স্থিতিশীল সরকার লাভজনক ব্যবসার জন্য একটি নতুন অংশীদার সরবরাহ করে, এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে তাদের সামরিক উপস্থিতি প্রসারিত করার সুযোগ পায়।

[১৮] তবে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক একাডেমি এধরনের সামরিক প্রক্রিয়াকে ব্যয়বহুল এবং সহজেই বিদ্রোহীদের দ্বারা ভেঙে ফেলা যায় বলে সমালোচনা করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই কৌশল থেকে দূরে সরে না গেলেও রাশিয়া এবং চীনের সাথে সামরিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ায়, পেন্টাগন আফ্রিকার প্রশিক্ষণ মিশন থেকে এবং সেনাবাহিনীকে ইউরোপীয় ও ইন্দো-প্যাসিফিক ঘাঁটির দিকে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে। এর পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১শ মিলিয়ন ডলারের একটি বার্ষিক বাজেট দিয়ে ১২৭-ইকো নামে একটি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম গ্রহণ করছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়