শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ২৪ মে, ২০২১, ১০:২৭ দুপুর
আপডেট : ২৪ মে, ২০২১, ১০:২৭ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

করোনাকালে অনলাইন শিক্ষাকে আরও গতিশীল করা দরকার : ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

আমিরুল ইসলাম : [২] এই শিক্ষাবিদ আরও বলেন, করোনা শেষে শিক্ষাকার্যক্রম চলতে পারে মিশ্র পদ্ধতিতে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নির্ভর করেছে করোনা মহামারির গতিপ্রকৃতির ওপর

[৩] প্রত্যেক শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে ইন্টারনেট সংযোগসহ ল্যাপটপ পৌঁছে দিতে হবে  [৪] একটা মেগা প্রকল্প স্থগিত রেখে হলেও এই কাজটা করা উচিত [৫ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে এখন আমাদের হাতে কোনো বিকল্প পছন্দ নেই।

[৬] ভারতে করোনা মহামারি অনেকটা কাটিয়ে উঠেছিলো কিন্তু আবার যখন করোনা বাড়লো তখন মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকের সব ধরনের শিক্ষাকার্যক্রম বাতিল করেছে। অনেক উন্নত দেশ, জাপানের মতো দেশও এখন হাবুডুবু খাচ্ছে। কোরিয়াতেও স্কুল, কলেজ বন্ধ করা দেওয়া হয়েছে। সবখানে অনলাইনে পড়ানো হচ্ছে। শ্রেণিকক্ষে ফিরিয়ে যাওয়াটা যেখানে অনেক উন্নত দেশের জন্যও অপকল্পনীয় বিষয় দাঁড়িয়েছে। সেখানে আমাদের পক্ষে তো এটা একটা আকাশ-কুসুম কল্পনা যে আমাদের ছেলেমেয়েরা আবার শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাবে। এটা সম্ভব না।

[৭] মহামারি যতোদিন পর্যন্ত শেষ না হবে আমাদের বসে থাকতে হবে। কিন্তু বসে থাকা মানে অলস বসে থাকা নয়। সেজন্য সরকারের উচিত হবে প্রত্যেক সন্তানের হাতে একটা করে ল্যাপটপ পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা। যারা দরিদ্র ও প্রান্তিক অঞ্চলের ছেলেমেয়ে তাদের হাতে যেন বিনামূল্যে ল্যাপটপ পৌঁছে দেওয়া হয়। এর জন্য ৪-৫ বিলিয়ন টাকা খরচ করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। যারা একটু সচ্ছল তাদের কিস্তিতে সুলভ মূল্যে ল্যাপটপ সরবরাহ করতে হবে।

[৮] বাংলাদেশে এই সক্ষমতা অনেক প্রতিষ্ঠানের আছে যারা স্থানীয়ভাবে ল্যাপটপ তৈরি করতে পারে। এর আগে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি দোয়েল নামে ল্যাপটপ তৈরি করেছিলো। মাত্র দশ হাজার টাকায় সবাই ল্যাপটপ পাচ্ছিলো। সরকার এবং এনজিও যারা দেশে বড় বড় প্রকল্প চালায়, তারা একসঙ্গে মিলে শিক্ষার্থীদের ল্যাপটপ বিতরণের প্রকল্প হাতে নিতে পারে।

[৯] ইন্টারনেট সংযোগটা বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের দেওয়ার জন্য আমরা বিটিসিএলকে ক্ষমতায়ন করতে পারি। যদি ইন্টারনেট সংযোগসহ প্রত্যেক সন্তানের হাতে একটা করে ল্যাপটপ পৌঁছ যায়, তাহলে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমটা সত্যিকার অর্থে অর্থবহ হবে। পরীক্ষা নেওয়াসহ সব শিক্ষাকার্যক্রম চালানো যাবে।

[১০] প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাফল্যে সহকারে অনলাইন শিক্ষাকার্যক্রম চালানো হচ্ছে। সেখানে কোনো কমতি নেই। শিক্ষার্থীরা একটু সচ্ছল পরিবার থেকে আসার কারণে তারা এটা করতে পারছে। আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন একটি অনলাইন কোর্স নেই তখন খুব বেশি হলে ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করতে পারে। সেলফোনের সাহায্যে ডাটা ক্রয় করে অংশগ্রহণ করায় তারা ভালোভাবে ক্লাস করতে পারে না। তাদের যদি বিনামূল্যে ইন্টারনেট সংযোগসহ ল্যাপটপ দেওয়া যেতো তাহলে প্রত্যেকেই অংশগ্রহণ করতে পারতো।

[১১] আগামী ছয় মাসের আগে আমরা কোনোক্রমেই শ্রেণিকক্ষে ফিরতে পারবো না। সরকারের উচিত এখন শিক্ষার্থীদের হাতে ল্যাপটপ পৌঁছে দেওয়া শুরু করা। গত একবছর ধরে এটা বলে আসছি, কিন্তু কেউ এটা কানে লাগাচ্ছে না। এতে করে কিছু ছেলে অনলাইন শিক্ষাকার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারছে, বাকিরা পারছে না। একটি ডিজিটাল বৈষম্য তৈরি করে আমরা আরও বৈষম্যমূলক সমাজ ব্যবস্থা নির্মাণ করছে। এমনিতেই করোনা মহামারি একটা বৈষম্য তৈরি করে দিয়ে গেছে।

[১২] যেহেতু করোনা নিয়েই আমাদের থাকতে হবে। অনলাইন শিক্ষাকার্যক্রম নিয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। এই সক্ষমতা আমাদের শিক্ষামন্ত্রণালয়ের রয়েছে। [১৩] যখন শ্রেণিকক্ষের শিক্ষাকার্যক্রম শুরু হবে তখন শিক্ষার্থীরা যেন ৪০-৫০ শতাংশের বেশি কম পড়েছে বলে প্রতীয়মান না হয়। আমরা যদি ৫০ শতাংশও শিক্ষার্থীদের পড়াতে পাড়ি, মহামারির পরিবর্তে আমরা যখন ছুটি কমিয়ে, শিক্ষার সময় বাড়িয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও গতিশীল করতে পারবো তখন হয়তো আমরা এটা কাভার করতে পারবো।

[১৪] বিজ্ঞান এবং ল্যাব্রোটারিভিত্তিক হাতে কলমে শেখানোর বিষয়গুলোকে আমাদের শ্রেণিকক্ষে শিখিয়ে মানবিক শিক্ষার বিষয়গুলোকে সুবিধামতো সময়ে আমরা অনলাইনে শিক্ষা দিতে পারবো। এই মিশ্র পদ্ধতির মাধ্যমে একবছরের ভেতর এই গ্যাপটা আমরা পূরণ করতে পারবো বলে আমার বিশ্বাস।

[১৫] সাধারণ মানুষগুলো যারা রাস্তায় যায় দোকান পসরা নিয়ে বসে, আমরা খুব বিরক্তি হই। যারা নিশ্চিন্তে বাড়িতে বসে আছে তারা এটাকে ভালোভাবে নেয় না। কিন্তু এই মানুষগুলো যদি কাজ না তাহলে তাদের সন্তান অভুক্ত থাকে। আমরা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে বিচার দিয়ে বসি। তাদের জায়গায় দাঁড়ালে আমরা বুঝতে পারতাম। আমাদের যারা কর্তৃপক্ষ আছেন তাদের উচিত হবে সাধারণ মানুষের দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টা দেখা। সাধারণ গ্রামের ছেলে মেয়ের দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাপারটা দেখা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়