শিরোনাম
◈ চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১২ ইউনিট ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১৯ মে, ২০২১, ০৫:৩৮ সকাল
আপডেট : ১৯ মে, ২০২১, ০৫:৩৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কাকন রেজা: সাংবাদিক রোজিনার বিধ্বস্ত চেহারা এবং আল জাজিরার গুড়িয়ে যাওয়া অফিস

কাকন রেজা: জায়নবাদী ইসরাইল ফিলিস্তিনের একটি ভবন গুড়িয়ে দিয়েছে। ওই ভবনটিতে এপি এবং আলজাজিরাসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের কার্যালয় ছিলো। ভবনটি গুড়িয়ে দেওয়ার ছবি ও ভিডিও আমরা দেখেছি। আর সেসব ছবি আর ভিডিওতে গণমাধ্যমের প্রতি জায়নবাদীদের আক্রোশটা পরিষ্কার ফুটে উঠেছে। আমরা অনুসন্ধানী সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের ছবি ও ভিডিও দেখেছি। তার গলা টিপে ধরার চিত্রও আমাদের দেখা। এখানেও আক্রোশটা পরিষ্কার।
এখন জায়নবাদের সঙ্গে রোজিনার প্রতি আক্রোশের কথা একসাথে কেন বললাম তা বলি। জায়নবাদ মানেই হলো একটা জাতিবাদী চিন্তা। নিজস্ব স্বার্থের চিন্তা। অন্য জাতিবাদী চিন্তার সাথে জায়নবাদের পার্থক্য হলো, এই চিন্তায় নিজের স্বার্থ ছাড়া অন্যসব স্বার্থ উপেক্ষিত। মানবিকতার পাঁচ পয়সা মূল্য নেই জায়নবাদে।

রোজিনার ক্ষেত্রে দেখেন অবস্থা কিন্তু তাই। গণমাধ্যমের সিংহভাগই যেখানে সরকারের পক্ষে কাজ করছে। যেখানে গণমাধ্যম নিয়ে অনেকটাই স্বস্তিতে সরকার। সাংবাদিকদের বিরাট একটা অংশ রয়েছেন সরকারের পক্ষে। বিভিন্ন সাংবাদিকদের সামাজিকমাধ্যমের প্রোফাইল অন্তত তাই বলে। এমন অবস্থায় রোজিনা ইসলামের মতন সাংবাদিককে এভাবে হেনস্থা করে গণমাধ্যমকে ক্ষেপিয়ে তোলার রিস্ক নেওয়াটার পেছনে কী রয়েছে। রয়েছে সব বাদ দিয়ে নিজের স্বার্থরক্ষার চিন্তা। যে চিন্তা সরকারের অবস্থানকেও বাজিতে ধরেছে। সাংবাদিক নেতাদের দেরিতে ঘুম ভাঙার পরও অবস্থা সামাল দেওয়া যায়নি। বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেছে মাঠে কাজ করা সক্রিয় গণমাধ্যমকর্মীরা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রেস ব্রিফিং বয়কট তার প্রমাণ।

এখানেই জায়নবাদীদের নিজ স্বার্থরক্ষার যে পলিসি তার সাথে মিল পাওয়া যায় ঘটনা পরম্পরার। সর্বশেষ প্রেস ব্রিফিংটাও তাই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কেন প্রেস কনফারেন্স না করে প্রেস ব্রিফিং করতে চাইলো। ব্রিফিং বিষয়টি হলো স্রেফ জানানো, এখানে প্রশ্ন করার কিছু নেই। আর কনফারেন্সে প্রশ্ন আর উত্তরের ব্যাপারটি রয়েছে। জানি না, এ বিষয়টিই বা গণমাধ্যমের চোখ কেন এড়িয়ে গেলো। অবশ্য এড়িয়ে যায় অনেক কিছুই। চশমা আঁটা অনেকের চোখই অনেক কিছু দেখতে পায় না। তবে রোজিনা ইসলামের ঘটনা অনেকের চোখের চশমা নামিয়ে দিয়েছে।

ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজমটা অনেকটা ইঁদুর-বিড়ালের খেলার মতন। কে কতটা চালাক হতে পারে। অফিস চাইবে তার গোপন বিষয় গোপন রাখতে। আবার ইভেস্টিগেটর চাইবেন সেটা বের করতে। এখন প্রশ্ন হলো রোজিনা ইসলাম যেটা বের করতে চাইলেন, বলা হলো তিনি নথি চুরি করেছেন, সেই নথিতে আসলে কী রয়েছে। ওই নথিতে এমন কিছু রয়েছে, যা প্রকাশ হলে খোদ সরকার বিপদে পড়বে। কিংবা রাষ্ট্রের এমন গোপন স্পর্শকাতর ব্যাপার যা প্রকাশযোগ্য নয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তো স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র কিংবা অর্থনীতির মতন কোনো মন্ত্রণালয় নয়, যেখানে স্পর্শকাতর এমন কিছু থাকা সম্ভব যাতে সব নড়ে যেতে পারে। তাহলে কী এমন নথি চুরি করলেন রোজিনা। সেই নথিটাও তো এখন প্রকাশ্য করা উচিত। এদেশের মানুষের জানার অধিকার রয়েছে দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এই মহামারীর কালে কী এমন গোপন নথি রয়েছে, যা নিয়ে এতো তুলকালাম কাণ্ড।

তবে মুশকিল হলো, যে নজির সৃষ্টি হলো, যাকে একটা নিদর্শনও বলা যায়। যা মূলত অবাধ তথ্য প্রবাহ বন্ধ করে অবাধ ‘ইয়ে’ প্রবাহ চালু করার কথাই বলে। সাতশ টাকার বালিশ সাত হাজারে কিনলেও তা আপনি জানাতে পারবেন না। অনেকটা সে রকম অবস্থা। ওই যে, বখাটে পোলাপানদের আকাজে বাধা দিতে গেলে তারা যে রকম বলে, ‘আমার বাপের টাকায় আমি যা খুশি করি, তাতে আপনার কী’। জানি না, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের কেউ কেউ এমন ভাবেন কিনা।

লেখক: সাংবাদিক ও কলাম লেখক।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়