ডেস্ক রিপোর্ট: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ইঙ্গিত করে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, জালিয়াতির নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই সবকিছু ‘ধ্বংস করে দিচ্ছেন’ তাঁরা।
২০২২ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে গত নভেম্বরের ভোট জালিয়াতির তদন্ত হওয়া দরকার বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। ওই নির্বাচনে জয়ী হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হয়েছেন ডেমোক্র্যাট নেতা জো বাইডেন। তাঁর দায়িত্ব গ্রহণের চার মাস হতে চললেও এখনো বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট সম্বোধন করতে শোনা যায়নি রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্পকে। প্রথম আলো
হোয়াইট হাউস থেকে বিদায়ের তিন সপ্তাহের মধ্যেই রাজনীতিতে আবার সক্রিয় হয়ে ওঠেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্ষমতা থেকে বিদায় নেওয়ার পরও নির্বাচনে হেরেছেন বলে স্বীকার করেন না তিনি।
নিউইয়র্কভিত্তিক রক্ষণশীল বেতারমাধ্যম ডব্লিউ এবিসি রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রশাসন নিয়ে নিজের মনোভাব তুলে ধরেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় রোববার প্রচারিত এ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দেশের অবস্থা এখন কী হয়েছে, তা দেখা যাচ্ছে। সীমান্ত ভেঙে পড়েছে। অপরাধী ও মাদকে দেশ সয়লাব হয়ে যাচ্ছে।
নিজের শাসনামলে সীমান্ত নিশ্ছিদ্র করতে পেরেছিলেন দাবি করে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, জালিয়াতি করে যাঁরা ক্ষমতায় এসেছেন, তাঁরা অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই সবকিছু ধ্বংস করে দিচ্ছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, বাইডেন প্রশাসনের শুরুতেই নেতৃত্বের দুর্বলতা ধরা পড়েছে। সমস্যাগুলো তাদের নিজেদেরই সৃষ্টি। তাঁকে অস্থিরতা নিয়ে দেশের এ বাজে অবস্থা দেখতে হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের উদার, রক্ষণশীল, ডেমোক্র্যাট, রিপাবলিকান—কোনো মহলই এখন আর বাইডেন প্রশাসনের ওপর সন্তুষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প।
সাংবাদিক রিতা কসবিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, দেশটি ‘মহান লোকজন’ পরিচালনা করছেন, এমন দেখাটাই তাঁর কাম্য। তিনি নিজে ‘মহৎ কাজ’ করেছেন। তারপরও জালিয়াতির নির্বাচনের মাধ্যমে তাঁকে হারানো হয়েছে।
নির্বাচনে হেরে ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউস থেকে বিদায় নেওয়ার আগমুহূর্তে গত ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে নজিরবিহীন হামলা চালান তাঁর সমর্থকেরা। ওই ঘটনায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়। হামলায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফা অভিশংসন প্রস্তাব গৃহীত হয়। তবে সিনেটে দুই–তৃতীয়াংশ আইনপ্রণেতার সমর্থন না থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিশংসন দণ্ড কার্যকর হয়নি।
এসব ঘটনার পরও দলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা আরও বেড়েছে। জাতীয়ভাবে রিপাবলিকান পার্টিতে তাঁর জনপ্রিয়তা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। দলকে আরও রক্ষণশীলতার দিকে নিয়ে গেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দলে তাঁর বিরোধীদের এখন নাজুক সময় যাচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরোধিতা করে দলীয় কংগ্রেসে নেতৃত্বে হারিয়েছেন এলেজাবেথ চেনি। অন্য যাঁরাই দলের মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরোধিতা করছেন, তাঁদের এখন নিজেদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাই কঠিন হয়ে উঠেছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, রিপাবলিকান দলের রাজনীতি নিয়ে এখন তিনি যা করছেন, তা নিজের জন্য নয়, দল ও দেশের কল্যাণের জন্য করছেন। রিপাবলিকান দলকে ‘ট্রাম্পের দল’ করার কোনো ইচ্ছা তাঁর নেই। আমেরিকাকে ‘মহান দেশ’ হিসেবে দেখাই তাঁর একমাত্র লক্ষ্য।
ট্রাম্প বলেছেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনে নিজে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তিনি দেখতে চান ২০২২ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে সমমনা লোকজন নির্বাচিত হচ্ছেন।
তিনি বলেন, নিজে যা করছেন, আনন্দের সঙ্গে করছেন। জনগণের এ নিয়ে খুশি হওয়ার কথা।
জনগণের জন্য অনেক সুখবর আসছে উল্লেখ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা সবাই মিলেই আনন্দের সঙ্গে ভালো কাজগুলো করব।’