নাঈমুল ইসলাম খান: [১] আমি সাংবাদিকতার অত্যন্ত আগ্রহী ও মনোযোগী শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা ও কর্মজীবন মিলিয়ে দীর্ঘ ৪২ বছর আমার শিক্ষার্থী জীবনই চলছে।
[২] সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা নিয়ে শিক্ষার্থীসুলভ অনুসন্ধিৎসু মন নিয়ে নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষা, পঠিত শিক্ষার কোথাও কোনো কোনো কনসেপ্টে অবিচল আস্থা, কোথাও পরিবর্তিত পাঠক চাহিদার প্রেক্ষিতে কালান্তরে সামঞ্জস্য বিধান ও পরিবর্তনের প্রয়োজনে একনিষ্ঠ এবং নিবেদিতভাবে নিজেকে এগিয়ে চলায় সক্রিয় রেখেছি।
[৩] এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং পরিবর্তনের প্রয়াসে আমি বিজ্ঞানী, উদ্ভাবক, গবেষকদের মধ্যে প্রচলিত Peer Review এর মতো, আমার কাজ কর্ম নিয়েও আলোচনা সমালোচনা প্রত্যাশা করি. প্রয়োজন অনুভব করি।
[৪] আমি বিশ্বাস করি যে, কোনো উদ্ভাবন ও পরিবর্তনের প্রচেষ্টায় এবং যেকোনো সৃজনশীল কাজের প্রয়াসে আলোচনা সমালোচনা অত্যন্ত জরুরি। শিল্প, বিজ্ঞান, সাহিত্য, চলচ্চিত্র, ক্রিড়া এবং সাংবাদিকতার মতো সকল ক্ষেত্রেই এই প্রয়োজন প্রযোজ্য।
[৫] আমাদের দেশে সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে নির্মোহ সমালোচনার সংস্কৃতি মোটেই প্রতিষ্ঠিত হয়নি, তাই আমি নিজেই উদ্যোগী হয়ে, যেচে যেচে সমালোচনা, স্মৃতিচারণ, মূল্যায়ন ইত্যাদি চেয়ে চেয়ে নিই। কুড়িয়ে, কুড়িয়ে সংগ্রহ করি। কখনও কখনও ভিক্ষে চাওয়ার মতোই চাই। একসময় বাংলাদেশ জার্নালিজম রিভিউ (বিজেআর) এবং মিডিয়া ওয়াচ করতাম একই উদ্দেশ্যে। দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকায় ‘ন্যায়পাল (ওমবুডস্ পার্সন’) নিয়োগ করেছিলাম ওই একই কারণে।
[৬] সমালোচনা ছাড়া আমি এগুতে পারি না। আমি বুঝতেও পারি না আমি কি করেছি বা করছি। স্মৃতিচারণের ভেতরেও কখনও ভুল-ত্রুটি, ভালো-মন্দ উন্মোচিত হয়। সতর্কতা ও সংশোধনের জন্য সেটাও প্রয়োজন। কেউ মূল্যায়ন করলে তার মধ্যে যদি কিছুটা ন্যায্য প্রশংসা থাকে সেটা আমাকে আরও কঠোর পরিশ্রম করতে সঞ্জিবনী জোগায়, উজ্জীবিত করে। কেউ যদি নির্মম সমালোচনাও করেন সেটাও ধারণ করার শিক্ষা ও সাহস আমি কর্মজীবনের গোড়াতেই পেয়েছি বলে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি।
[৭] আমি মরে যাওয়ার পর মূল্যায়ন চাই না। মৃত্যুর পর মূল্যায়নে, আমার অবদানে কোনো প্রভাব রাখবে না। আপনি যদি আমাকে কর্মজীবনেই মূল্যায়ন করেন, আমার বর্তমানেই মূল্যায়ন করেন সেটা হবে আমার বর্তমান ও ভবিষ্যতে পথচলার মূল্যবান পাথেয়। হবে দিক নির্দেশনাও। হবে আমার অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রাপ্তি।
অনুলেখক: ফাহমিদা তিশা