রাশিদুল ইসলাম : [২] মার্কিন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স নিউ ইয়র্ক টাইমসে লেখা এক কলামে প্রশ্ন তুলেছেন কেন কখনোই এই প্রশ্নটি জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে না যে, ‘ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার কি?’ তিনি বলেন যুক্তরাষ্ট্রের উচিত অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো।
[৩] বার্নি বলেন, বছরে পর বছর ধরে জেরুজালেমের শেখ জারাহ বসতিতে থাকা ফিলিস্তিনি পরিবারগুলো উচ্ছেদ হুমকিতে রয়েছেন। তাদেরকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার এক আইনি ব্যবস্থা করা হয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহে উগ্রপন্থি ইহুদি বসতি স্থাপনকারীরা তাদেরকে উচ্ছেদ করার জোর প্রচেষ্টা চালিয়েছে।
[৪] তিনি বলেন, বিয়োগান্তক বিষয় হলো, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নিষ্পেষণের বিস্তৃত ব্যবস্থার মাত্র একটি অংশ হলো এই উচ্ছেদ পরিকল্পনা। বছরে পর বছর ধরে আমরা পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমে ইসরাইলের দখলদারিত্বকে আরো গভীর হতে দেখছি। একই সঙ্গে তারা গাজার বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে ব্লকেড বা অবরোধ দিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে সেখানে বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের কাছে জীবন ক্রমশ অসহিষ্ণু হয়ে উঠেছে। গাজায় প্রায় ২০ লাখ অধিবাসীর মধ্যে শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ তরুণ, যুবক বেকার। ভবিষ্যত নিয়ে তাদের মধ্যে কোনো আশা নেই বললেই চলে।
[৫] বার্নি বলেন, ইসরায়েলি সরকার এমন সব আইন পাস করছে, যার ফলে পর্যায়ক্রমিকভাবে ইসরাইলে ইহুদি এবং ফিলিস্তিনি নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করা হচ্ছে।
[৬] তিনি বলেন, ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে একটি সার্বভৌম কর্তৃত্ব বজায় রেখেছে ইসরাইল। তারা শান্তি ও ন্যায়বিচারের জন্য প্রস্তুতির চেয়ে অসমতা এবং অগণতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণকে বিস্তৃত করেছে। নেতানিয়াহুর উগ্র ডানপন্থি শাসন এক দশকেরও বেশি সময় বিদ্যমান। নেতানিয়াহু ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতা এবং কর্তৃত্বপরায়ণ বর্ণবাদী জাতীয়তাকে লালনপালন করেছেন। ক্ষমতায় থাকার জন্য এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিচারকে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য তিনি উগ্র প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।
[৭] বার্নি বলেন, আমরা নতুন একটি প্রজন্মের অধিকারকর্মীদের উত্থান দেখতে পাচ্ছি, যারা মানবিক প্রয়োজন এবং রাজনৈতিক সমতার ভিত্তিতে সমাজ গড়তে চান। আমরা তাদেরকে দেখছি ইসরাইলে। ফিলিস্তিনিতেও।
[৮] বার্নি মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এখন একটি সুযোগ এসেছে। বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের পক্ষে লড়াই ও সংঘাতের বিরুদ্ধে সহযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রকে নেতৃত্ব দিতে হবে।
[৯] বার্নি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে আমরা বছরে প্রায় ৪০০ কোটি ডলার সহায়তা দিই ইসরায়েলকে। ফলে নেতানিয়াহুর উগ্র ডানপন্থি সরকার, তাদের অগণতান্ত্রিক ও বর্ণবাদী আচরণের দায় আমরা আমরা বহন করতে পারি না। আমাদেরকে অবশ্যই এই ধারা পরিবর্তন করতে হবে এবং নিরপেক্ষ ভূমিকা নিতে হবে। যে নিরপেক্ষ ভূমিকা বেসামরিক মানুষের সুরক্ষা বিষয়ক আন্তর্জাতিক আইন সমুন্নত ও শক্তিশালী করে। আমাদেরকে অবশ্যই ফিলিস্তিনিদের অধিকারের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে স্বীকার করতে হবে। ফিলিস্তিনিদের জীবনের দাম দিতে হবে।