ফাতেমা আহমেদ : ছেলেবেলায় গ্রামের ঈদটাই অন্যরকম ছিল। সকালে ঘুম ভাঙতো মায়ের চুমুতে। এরপর জোর করে বিছানা থেকে তুলে দিতেন। চোখে মুখে ঘুম নিয়ে সোজা পুকুর ঘাটে চলে যেতাম। ঈদের দিন সাতসকালে দলবেঁধে গোসল করা ছিল রেওয়াজ। এরপর ঘরে ফিরে নতুন জামা গায়ে দিতেই মা হাতে ধরিয়ে দিতেন এক গ্লাস ‘মলিদা’। ঈদের সকালে মলিদা না হলে যেনো ঈদের দিনই শুরু হত না।
ঈদের দিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে মায়ের মলিদা তৈরি উপকরণ যোগাতে হত। আগের রাতেই তিনি আতপ চাল পানিতে ভিজিয়ে রাখতেন। কোড়ানি দিয়ে নারকেল কুড়িয়ে রাখতেন। এরপর আতল চাল পাটায় বেটে তার সঙ্গে নারকেলের দুধ আর আদার রস আর আখের গুড় দিয়ে তৈরি হত এই শরবত। এটি পান করতে যেমন সুস্বাদু তেমনি সারা মাসের রোজার ক্লান্তি দূর করতেও সহায়ক ছিল এটি। ঈদের দিনের অতিথি অ্যাপায়ন পর্ব শুরু হত মলিদা দিয়ে।
এখনকার অনেকেই বুঝি মলিদার নামও জানেন না। যদিও আমার গ্রামেই এখন আর কেউ মলিদার শরবত তৈরি করে না। হারিয়ে যেতে বসেছে জনপ্রিয় এই পানীয়। চলুন জেনে নেয়া যাক মলিদা তৈরির রেসিপি- উপকরণ: ১ কাপ পোলাওয়ের চাল বাটা, ২ টেবিল চামচ নারিকেল বাটা, ১/২ কাপ ভিজিয়ে রাখা চিড়া, ২ কাপ ঠান্ডা তরল দুধ, ১ কাপ ডাবের পানি, ১ চা চামচ আদা বাটা, ১/২ কাপ চিনি, লবণ পরিমাণমতো।
প্রণালি: একটি পাত্রে প্রথমে পোলাওয়ের চাল বাটা, নারিকেল বাটা ও চিড়া মিশিয়ে হাত দিয়ে কচলে নিন যেন সবগুলো উপাদান একসাথে মিশে যায়। আরেকটি পাত্রে তরল দুধ, ডাবের পানি ও চিনি মিশিয়ে সম্পূর্ণরূপে চিনি না মিশে যাওয়া পর্যন্ত নাড়তে থাকুন।
দুধের মিশ্রণে চাল, নারিকেল ও চিড়ার মিশ্রণটি অল্প অল্প করে মিশিয়ে নাড়তে থাকুন। সবগুলো মিশ্রণ ঢালার পর লবণ ও আদা বাটা দিয়ে ৫ মিনিট ভালো করে নাড়ুন। চাইলে ব্লেন্ডারেও ব্লেন্ড করে তৈরি করে নিতে পারেন। এবার পছন্দমতো গ্লাসে ঢেলে সাজিয়ে পরিবেশন করুন সুস্বাদু মলিদা। সূত্র : ঢাকাটাইমস, জাগোনিউজ
আপনার মতামত লিখুন :