সোহাগ হাসান: [২] রক মেলন খেতে সুস্বাদু, পুষ্টিগুণ সম্পন্ন, রক ও হানিডিউ মেলনের বাজার সম্প্রসারিত হলে স্বল্প জমিতেই অল্প পরিশ্রমে লাভের মুখ দেখবেন বলে আশা কৃষক ও বিশেষজ্ঞদের। হানিডিউ তরমুজ দেখতে আকারে দেশিজাতের তরমুজের থেকে ছোট। এর গায়ের রঙ হলুদ। ভেতরটাও হলুদ রঙের।
[৩] সদর উপজেলার ছোনগাড়া ইউপি’র শাহানগাছা গ্রামে জাহিদুল ইসলাম মিলন হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে রক মেলন ও হানিডিউ চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন। তার সাফল্য দেখে অনেক চাষি এই ফল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। স্বাদ ও পুষ্টিগুণের দিক থেকেও অনেক উপকারী এই ফল দিনে দিনে জনপ্রিয়তা দ্রুত।
[৪] আড়াই মাস আগে দুই হাজার বর্গফুটের গ্রিন হাউজের (বিশেষ ঘর) এর মধ্যে হানিডিউ তরমুজের বীজ রোপণ করেন জাহিদুল। বীজ থেকে গাছ জন্মে সেই গাছে ফল ধরেছে। বর্তমানে তরমুজগুলো বিক্রি শুরু হয়েছে। এক বছর আগে পরীক্ষামূলকভাবে হানিডিউ তরমুজের চাষ করে সফল হন তিনি। শুধু হানিডিউ নয়, জাহিদুলের গ্রিন হাউজে হাসি ছড়াচ্ছে মিষ্টি কুমড়োর মত গোলাকৃতির রক মেলনও। এটা জাহিদুলের প্রথম দফা রক মেলন ও চতুর্থ দফা হানিডিউ তরমুজ চাষ।
[৫] পরিচর্যা কর্মীরা জানান,প্লাস্টিকের ব্যাগের মধ্যে নারিকেলের ছোবড়ার গুঁড়ার মধ্যে হানিডিউ ও রক মেলনের বীজ বপন করা হয়। এ পদ্ধতিতে মাটির প্রয়োজন হয় না। কেবল নারিকেলের ছোবড়া ও পানিতে গাছ জন্মায়। জাহিদুল ইসলাম মিলন পেশায় ছিলেন মেরিন ইঞ্জিনিয়ার। পরে আউটসোর্সিংয়ের কাজ শুরু করেন। তখন পরিচয় হয় এক বিদেশির সঙ্গে। তার পরামর্শে সিরাজগঞ্জে ২০১৬
সালে ১ একর জমিতে গড়ে তোলেন ফার্মডেক্স এগ্রো লিমিটেড। এই মৌসুমে হানিডিউ ও রক মেলন উৎপাদনে তার খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। যা থেকে তিনি ৩ লাখ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা আয় করার আশা করছেন। বারোমাস চাষ হওয়ায় লাভের অঙ্কটাও বেশি বলে জানান মিলন।
[৬] জাহিদুল বলেন, রক মেলন ও হানিডিউ চাষ করে আমি সফল হয়েছি। আমার দেখা-দেখি অনেক চাষি এই দুই জাতের তরমুজ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। স্বাদ ও রঙের কারণে রক ও হানিডিউ তরমুজ সবার দৃষ্টি কেড়েছে। স্বল্প জমিতে কম বিনিয়োগে অধিক লাভ হওয়ায় এ ফসলের চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার আশা জাগিয়েছে বেকার যুবকদের মধ্যেও। সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রোস্তম আলী জানান,উদ্যোক্তা মিলনের এই বিদেশি ফল চাষে সফলতার পর এখন অনেকেই এই পদ্ধতিতে চাষ শুরুমকরেছে। দেশিজাতের পাশাপাশি এখন ফলানো হচ্ছে থাইল্যান্ডের রক ও হানিডিউ তরমুজ। স্বল্প পুঁজি আর অল্প পরিশ্রমে রক ও হানিডিউ মেলন চাষ করে অনেক বেকার যুবক স্বাবলম্বী হতে পারে।
[৭] তবে এই চাষে সকল সরঞ্জামাদি বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এতে ভ্যাট ট্যাক্সের কারণে অনেক খরচ পড়ে। তাই কৃষি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে যাতে চাষীদের কৃষি সরঞ্জামাদি আনতে ভ্যাট ট্যাক্স মওকুফ করা হয়। এ ছাড়া এসব ফলের বাজার ও চাষাবাদ সম্প্রসারণে বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
আপনার মতামত লিখুন :