নাঈমুল ইসলাম খান: [২] ভারতে করোনা মহামারির এই ভয়ংকর বিপর্যয়ের সময়ে তারা জি সেভেন এর শীর্ষ বৈঠকে অংশ নিয়েছে। বৈশ্বিক সমালোচনা এবং নিন্দার মধ্যেও বড় বড় সমাবেশসহ পাঁচ রাজ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে কৌশলগত সহযোগিতা নিয়ে বৈঠক করছে। আর্ন্তজাতিক বাণিজ্য আরও জোরদার করছে এবং এটাই সংগত ও স্বাভাবিক।
[৩] বাংলাদেশ, ভারতের একটি বেসরকারি ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউটকে অগ্রীম মূল্য পরিশোধ করে ৩ কোটি টিকা কিনেছে, তার মধ্যে এ পর্যন্ত পেয়েছে মাত্র ৭০ লাখ। চুক্তি অনুযায়ী অবশিষ্টগুলো পাচ্ছে না, ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে। বন্ধ হয়ে গেছে বাংলাদেশের টিকা কার্যক্রম। দ্বিতীয় ডোজের টিকা প্রাপ্তি নিয়ে সংশয়। ১৫ লাখ প্রথম টিকা গ্রহণকারীদের জন্য দ্বিতীয় টিকা গ্রহণের নির্দিষ্ট সময় উত্তীর্ণ হওয়ার আশঙ্কা। এছাড়াও রয়েছে অন্যান্য কিছু জরুরি প্রয়োজন।
[৪] ভারতের বন্ধুত্ব নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের মনে ছিলো তীব্র শঙ্কা। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল ভারত বিরোধী পালে হাওয়া দেয়। অনেক বছরের প্রচেষ্টায় সেই পরিস্থিতি অনেকখানি সেরে গিয়েছিলো।
[৫] টিকা নিয়ে সর্বশেষ ভারতের নিষেধাজ্ঞা, বাংলাদেশিদের মনে আবারো শঙ্কা ও অনাস্থা জাগিয়ে তুলছে বলে মনে হয়। ভারত সরকারের উচিত হবে সেরকমটা না হতে দেওয়া। তারাতো জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক সব বিষয়েই মনোযোগ দিচ্ছে, এই জরুরি দিকটাতে কেন তবে নয়?
[৬] তাদের উচিত হবে আমাদের কেনা ভ্যাকসিন বিনা বিলম্বে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া।
[৭] ১৫ লাখ টিকা না হলে, ১৫ লাখ মানুষ দ্বিতীয় ডোজের টিকা না পেয়ে মানসিক অস্থিরতায় পড়বে, স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিতে পড়বে। এই বিশেষ অবস্থা বিবেচনা করে চলতি মে মাসের মধ্যেই অন্তত ১৫ লাখ টিকা বিশেষ উদ্যোগে বাংলাদেশকে দেওয়া ভারতের জন্য অতি জরুরি। অন্যান্য জরুরি ক্ষেত্রে ন্যূনতম আরও প্রয়োজন ১৫ লাখ ডোজ টিকা।
[৮] না দিলে বাংলাদেশ সরকার যদিওবা সেটা হজম করে বা মেনে নেয়, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ সেটা ইতিবাচকভাবে মেনে নেবে বলে মনে করার কারণ নেই। এবং তার নেতিবাচক চাপ বাংলাদেশ সরকারের ওপরেও পড়বে।
[৯] বাংলাদেশ- ভারত বন্ধুত্ব দুই দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ, ভারতের জন্য একটু বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই বাংলাদেশের বন্ধৃত্বপূর্ণ সহযোগিতার প্রতি সম্মান দেখিয়ে করোনার টিকা বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে ভারত সরকারকে অনুরোধ করছি। যেকোনোভাবে, অন্তত বিশেষ বিবেচনায় হলেও ৩০ লাখ ডোজ টিকা মে মাসের শেষ নাগাদ বাংলাদেশে পাঠানো ভারতের কৌশলগত স্বার্থ, চুক্তির বাধ্যবাধকতা এবং বন্ধুত্ব রক্ষায় আবশ্যিক দায়িত্ব।
[১১] অবশিষ্ট ২ কোটি কেনা টিকার জন্য জুন বা জুলাই পর্যন্ত ভারতকে ছাড় বা সময় দিতে বাংলাদেশ চেষ্টা করতে পারে।
অনুলেখক: ফাহমিদা তিশা
রচনার তারিখ: ৮ মে ২০২১
আপনার মতামত লিখুন :