শাহীনর খন্দকার: [২] করোনা মহামারির প্রেক্ষাপটে অনলাইনে জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে দিবসটি পালন করেছে বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি ও হাসপাতাল এবং ইয়ুথ ক্লাব অব বাংলাদেশ যৌথ ভাবে আন্তর্জাতিক থ্যালাসেমিয়া ফেডারেশন কর্তৃক গৃহীত বিশ্ব থ্যলাসেমিয়া দিবসের প্রতিপাদ্যের উপর ভিত্তি করে শনিবার সকাল ১১.৩০ মিনিটে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম জুমে “বাংলাদেশের থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসা ব্যবস্থা ও ভবিষ্যৎ” শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। এছাড়াও থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশন, সন্ধানী, মেডিসিন ক্লাব ও প্ল্যাটফর্ম।
[৩] বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান মতে, বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৭ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ লোক থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক। থ্যালাসেমিয়া বাহকদের পরস্পরের মধ্যে বিয়ের মাধ্যমে প্রতিবছর নতুন করে সাত হাজার থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশু জন্ম নিচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপরেজিষ্টার ডা. মীর্জা নাহিদা হোসেন বন্যা বলেন, থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রক্তের রোগ।
[৪] থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের শরীরে রক্তের লোহিতকণিকা পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈরি হয় না। ফলে এদের মারাত্মক রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। থ্যালাসেমিয়া রোগীরা প্রতি মাসে এক-দুই ব্যাগ রক্ত গ্রহণ করে বেঁচে থাকে। চিকিৎসা না করা হলে এই রোগী রক্তশূন্যতায় মারা যায়। তিনি বলেন, মানবকোষে রক্ত তৈরি করার জন্য দুটি জিন থাকে। কোনো ব্যক্তির রক্ত তৈরির একটি জিনে ত্রুটি থাকলে তাকে থ্যালাসেমিয়া বাহক বলে, আর দুটি জিনেই ত্রুটি থাকলে তাকে থ্যালাসেমিয়া রোগী বলে। শিশু জন্মের এক থেকে দুই বছরের মধ্যে থ্যালাসেমিয়া রোগ ধরা পড়ে।
[৫] এই রোগের লক্ষণগুলো হলো ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া, দুর্বলতা, ঘন ঘন ইনফেকশন, শিশুর ওজন বৃদ্ধি না হওয়া, জন্ডিস, খিটখিটে মেজাজ ইত্যাদি। ডা. নাহিদা হোসেন বন্যা বলেন, থ্যালাসেমিয়া রোগের কোনো সহজলভ্য স্থায়ী চিকিৎসা বা টিকা নেই। এ রোগ থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় হচ্ছে প্রতিরোধ। স্বামী-স্ত্রী দুজনই যদি থ্যালাসেমিয়া বাহক হন, শুধু তখনই সন্তানদের এ রোগ হতে পারে।
[৬] কিন্তু স্বামী-স্ত্রী দুজনের একজন যদি বাহক হন এবং অন্যজন সুস্থ হন, তাহলে কখনো এ রোগ হবে না। তাই বিয়ের আগে থ্যালাসেমিয়া বাহক কি না, তা সবার-ই জেনে নেওয়া দরকার। হিমোগ্লোবিন ইলেকট্রোফোরেসিস নামে একটি রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়া বাহক কি না, তা নির্ণয় করা যায় বলে জানালেন তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :