বিশ্বজিৎ দত্ত: চলতি ২০২০-২১ সালের বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে কোভিড কালীন ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ থেকে মাত্র আড়াই হাজার কোটি টাকা খরচ করতে পারছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আবার এই খরচের মধ্যে ৭৫০ কোটি টাকা প্রধানমন্ত্রী অনুদান হিসাবে গরিবদের দিয়েছেন।আর ৭৫০ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে টিকা ও পিসিআর কিট ক্রয়ে।
আগামী ২০২১-২২ সালের বাজটেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরো ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদের আগেই দেশের প্রায় ৩৫ লাখ দরিদ্র লোককে ২৫০০ টাকা করে অনুদান দিয়েছেন।
অর্থমন্ত্রণাল সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের বাজেটে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রণালয়ের জন্য প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। এরমধ্যে উন্নয়ণ প্রকল্পে ব্যয় রাখা হয়েছিল ১০ হাজার ৪৫ কোটি টাকা। এর বাইরে আরো ১০ হাজার কোটি টাকা রাখা হয়েছিল কোভিডকালীন বিশেষ পরিস্থিতিতে ব্যয় করার জন্য। কিন্তু উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়নের দিক থেকে যে সব মন্ত্রণালয় গত ৬ মাসে বিশেষ সফলতা দেখাতে পারেনি তার মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অন্যতম। গত ৬ মাসে মন্ত্রণালয়টি উন্নয়ন খাতের ২৪ শতাংশ ব্যয় করতে পরেছে।
এ বিষয়ে সিপিডির ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কোভিডকালীন বরাদ্দ ব্যায়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অন্যান্য মন্ত্রণালয়। যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ণ করেছে সেগুলোতেও অনিয়ম দুর্নীতি হয়েছে। তাদের টেন্ডারিং প্রসেস স্বচ্ছ নয়। জরুরী চিকিৎসার নামে যেসব পণ্য ক্রয় করা হচ্ছে সেগুলোও বাজার মূল্যের চেয়ে বেশি দামে ক্রয় করা হচ্ছে।
একই বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, আমরা স্বাস্থ্যখাতে জিডিপির ৩ থেকে ৪ শতাংশ বরাদ্দ দেয়ার কথা বলেছিলাম। কিন্তু বাস্তাবে স্বাস্থ্যখাতে সরকারের বরাদ্দ ১ শতাংশেরও কম। আবার এই ১ শতাংশ বরাদ্দও খরচ করতে পারছে না মন্ত্রণালয়। এরমধ্যেও রয়েছে দুর্নীতি।এ ক্ষেত্রে আমাদের প্রস্তাব হলো, কোভিডকালীন সময়কে কাজে লাগিয়ে ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত স্বাস্থ্যখাতকে ঢেলে সাজানোর। এ খাতের ফ্রন্টলাইনারদের যে বিশেষ সুবিধা গত বছর দেয়া হয়েছিল তা বাস্তবায়ণ করা।
স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর বাজেটে স্বাস্থ্যকর্মী, ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য কর্মীদের করোনায় মৃত্য বা অসুস্থ্য হলে তাদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়েছিল ৭৫০ কোটি টাকা। গত ৬ মাসে এ খাত থেক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মাত্র ৪২ জনকে ১৬ কোটি টাকা দিতে পেরেছে। স্বাস্থ্যখাতের কর্মী, ডাক্তার ও নার্সদের ১মাসের বেতন সমান বিশেষ সম্মানি দেয়ার জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত এই বরাদ্দও দিতে পারেনি।
জানা গেছে, আগামী২০২১-২২ সালের বাজটে স্বাস্থ্য খাতে গত বছরের চেয়ে আরো ৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়িয়ে মোট ২৬ হাজার কোটি টাকা করা হচ্ছে। আর উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ ১০ হাজার কোটি টাকা তেকে বাড়িয়ে করা হচ্ছে ১২ হাজার কোটি টাকা।
আপনার মতামত লিখুন :