শিরোনাম
◈ বিদেশে আশ্রয় আবেদনে শীর্ষে বাংলাদেশিরা: বাড়ছে আবেদন, কমছে স্বীকৃতি ◈ মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে গুম অধ্যাদেশের গেজেট প্রকাশ ◈ মাঝরাতে কক্সবাজারে ৪.৯ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত ◈ যেসব সুবিধা পান রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা  ◈ আইআরআই জরিপ: ইউনূস সরকারের প্রতি আস্থা অটুট, ৮০% বাংলাদেশি অবাধ–সুষ্ঠু নির্বাচনে আশাবাদী ◈ খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনায় মোদির বার্তা: চিকিৎসায় সর্বাত্মক সহযোগিতায় প্রস্তুত ভারত ◈ খালেদা জিয়াকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা করেছে সরকার ◈ ইন্টার মিলা‌নের জয়, জোড়া গোল করে ইতিহাস লাউতারোর ◈ প্রাথমিক শিক্ষকদের মঙ্গলবারও কর্মবিরতি, হবে না বার্ষিক পরীক্ষা ◈ ২০২৬ থেকে বাধ্যতামূলক সিবিএমএস: বন্ড ব্যবস্থাপনায় পূর্ণ ডিজিটাল যুগে এনবিআর

প্রকাশিত : ২৩ এপ্রিল, ২০২১, ০৯:২৬ সকাল
আপডেট : ২৩ এপ্রিল, ২০২১, ০৯:২৬ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রান্নার পাত্র নেই, তাই সবজি বিক্রি করলেন আসমা

এই লকডাউনের সময়টায় পেশাগত দায়িত্বে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় যাই। নির্দিষ্ট কোনো কাজ না থাকলে মোটরবাইক নিয়ে পথে পথে ঘুরি, মানুষের জীবনগল্পের সন্ধান করি। মানুষের সঙ্গে কথা বলতে ভালো লাগে বলেই দুঃসহ কষ্ট নিয়ে যারা দিন পার করেন, তাঁদের পাশে যাই। সাহায্য নিয়ে পাশে দাঁড়াতে না পারি, তাঁদের গল্পগুলো তো পৌঁছে দিতে পারি ছবির মাধ্যমে।

২২ এপ্রিল এমনই উদ্দেশ্যে ঢাকার রাস্তায় ঘুরছিলাম। সূর্য তখন মাথার ওপর। পুরান ঢাকা ঘুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তনের (টিএসসি) কাছাকাছি যখন এসেছি, হঠাৎ দৃষ্টি কাড়ল একজন। ফুটপাতে নিল পলিথিন পেতে বসে আছেন তিনি, সামনে দুই ফালি মিষ্টিকুমড়া, কিছু টমেটো আর ঢ্যাঁড়স আর এক মুঠো কলমিশাক। পায়ের কাছে শুয়ে আছে তাঁর শিশুসন্তান। মোটরবাইক থামিয়ে তাঁর কাছে যাই। ক্যামেরাটা কাঁধেই ছিল তাক করতে না করতেই ওড়নায় মুখখানা ঢেকে ফেলেন। আর বলতে থাকেন, ‘ভাই, ছবি তোলেন কেন?’

আসমা বেগম

ছবি তোলা থামিয়ে তাঁর কাছে যাই, পরিচয় দিই, আলাপ করি। তারপর হাসিমুখে মেয়েকে কোলে তুলে নিলেন, ছবি তুলতে রাজি হলেন। শোনালেন তাঁর জীবনগল্প।

নাম তাঁর আসমা বেগম। বয়স কতই হবে, ২৪ কি ২৫। স্বামী সুমনের সঙ্গে থাকতেন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম এলাকায়। সেখানে দিন কাটছিল কোনো রকমে। কিন্তু লকডাউন শুরু হলে স্টেডিয়াম এলাকা ছাড়াতে হয়। এখন আশ্রয় নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার এই ফুটপাতে। থাকার জায়গা হয়তো ব্যবস্থা করে নিয়েছেন, কিন্তু রান্নার ব্যবস্থা নেই, নেই রান্না করার হাঁড়িপাতিলও। কিছু যে কিনে খাবেন, সে অর্থও নেই। আসমা জানালেন, তাঁর স্বামী সুমন একসময় ঢাকা ওয়াসার ম্যানহোল পরিষ্কারের কাজ করতেন। গত বছর করোনা মহামারি শুরুর পর সে কাজও আর পাচ্ছেন না। এখন বাধ্য হয়ে তিনি পুরোনো জিনিসপত্র টুকিয়ে বিক্রি করেন। লকডাউনে সেটাও বন্ধ। এর মধ্যে তিন মাস আগে তাঁদের মেয়ে হালিমার জন্ম হয়েছে।

তাই আজ যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কোনো একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দেওয়া সবজিগুলো পেলেন, অনেকটা ‘সংকটেই’ পড়লেন আসমা। তিনি বলছিলেন, ‘তেল-লবণ নাই, রান্নার হাঁড়িপাতিলও নাই, কী করব লাউ-টমেটো নিয়া। কিছু ট্যাকা হইলে খাবার কিনে খাইতে পারি, বাচ্চাটার ওষুধ কিনতে পারি।’

তিন ঘণ্টা পর সে পথে আবার গিয়েছিলাম। আসমা তখনো সবজি বিক্রির অপেক্ষায়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়