শিরোনাম
◈ খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রা পেছাতে পারে আরও ◈ ফোন নজরদারিতে নতুন পদক্ষেপ: স্যাটেলাইট ট্র্যাকিং চালু করতে চায় ভারত ◈ মজুদ প্রচুর, তবুও দুই দিনে পেঁয়াজের দাম হঠাৎ বাড়ল ৪০ টাকা ◈ লবণ উৎপাদনে ধস: আমদানি অনুমতিতে দামপতন, বিপাকে চাষী–মিল মালিক ◈ খালেদা জিয়াকে লন্ডন নেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত আজ রাতে ◈ মান‌বিক সাহায্যের হাজার হাজার ত্রাণবাহী ট্রাক গাজার বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে উধাও ◈ ‌বিশ্বকাপ ফুটবল, শক্তিশালী নরওয়েকে নিয়ে কঠিন গ্রুপে ফ্রান্স ◈ ফুটবল নি‌য়ে বিপা‌কে তুরস্ক,  জুয়া-ম্যাচ ফিক্সিংয়ে গ্রেপ্তার ২৭ খে‌লোয়াড়  ◈ যুক্তরাষ্ট্রে বিমানবন্দরে যাত্রীদের পোশাক নিয়ে নতুন বিতর্ক, প্রতিবা‌দে যাত্রী‌রা পায়জামা প‌রে হা‌জির ◈ বিশ্বকা‌পে মেসির খেলা নি‌য়ে আবা‌রো বাড়‌লো জল্পনা 

প্রকাশিত : ২৩ এপ্রিল, ২০২১, ০৯:২৬ সকাল
আপডেট : ২৩ এপ্রিল, ২০২১, ০৯:২৬ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রান্নার পাত্র নেই, তাই সবজি বিক্রি করলেন আসমা

এই লকডাউনের সময়টায় পেশাগত দায়িত্বে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় যাই। নির্দিষ্ট কোনো কাজ না থাকলে মোটরবাইক নিয়ে পথে পথে ঘুরি, মানুষের জীবনগল্পের সন্ধান করি। মানুষের সঙ্গে কথা বলতে ভালো লাগে বলেই দুঃসহ কষ্ট নিয়ে যারা দিন পার করেন, তাঁদের পাশে যাই। সাহায্য নিয়ে পাশে দাঁড়াতে না পারি, তাঁদের গল্পগুলো তো পৌঁছে দিতে পারি ছবির মাধ্যমে।

২২ এপ্রিল এমনই উদ্দেশ্যে ঢাকার রাস্তায় ঘুরছিলাম। সূর্য তখন মাথার ওপর। পুরান ঢাকা ঘুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তনের (টিএসসি) কাছাকাছি যখন এসেছি, হঠাৎ দৃষ্টি কাড়ল একজন। ফুটপাতে নিল পলিথিন পেতে বসে আছেন তিনি, সামনে দুই ফালি মিষ্টিকুমড়া, কিছু টমেটো আর ঢ্যাঁড়স আর এক মুঠো কলমিশাক। পায়ের কাছে শুয়ে আছে তাঁর শিশুসন্তান। মোটরবাইক থামিয়ে তাঁর কাছে যাই। ক্যামেরাটা কাঁধেই ছিল তাক করতে না করতেই ওড়নায় মুখখানা ঢেকে ফেলেন। আর বলতে থাকেন, ‘ভাই, ছবি তোলেন কেন?’

আসমা বেগম

ছবি তোলা থামিয়ে তাঁর কাছে যাই, পরিচয় দিই, আলাপ করি। তারপর হাসিমুখে মেয়েকে কোলে তুলে নিলেন, ছবি তুলতে রাজি হলেন। শোনালেন তাঁর জীবনগল্প।

নাম তাঁর আসমা বেগম। বয়স কতই হবে, ২৪ কি ২৫। স্বামী সুমনের সঙ্গে থাকতেন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম এলাকায়। সেখানে দিন কাটছিল কোনো রকমে। কিন্তু লকডাউন শুরু হলে স্টেডিয়াম এলাকা ছাড়াতে হয়। এখন আশ্রয় নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার এই ফুটপাতে। থাকার জায়গা হয়তো ব্যবস্থা করে নিয়েছেন, কিন্তু রান্নার ব্যবস্থা নেই, নেই রান্না করার হাঁড়িপাতিলও। কিছু যে কিনে খাবেন, সে অর্থও নেই। আসমা জানালেন, তাঁর স্বামী সুমন একসময় ঢাকা ওয়াসার ম্যানহোল পরিষ্কারের কাজ করতেন। গত বছর করোনা মহামারি শুরুর পর সে কাজও আর পাচ্ছেন না। এখন বাধ্য হয়ে তিনি পুরোনো জিনিসপত্র টুকিয়ে বিক্রি করেন। লকডাউনে সেটাও বন্ধ। এর মধ্যে তিন মাস আগে তাঁদের মেয়ে হালিমার জন্ম হয়েছে।

তাই আজ যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কোনো একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দেওয়া সবজিগুলো পেলেন, অনেকটা ‘সংকটেই’ পড়লেন আসমা। তিনি বলছিলেন, ‘তেল-লবণ নাই, রান্নার হাঁড়িপাতিলও নাই, কী করব লাউ-টমেটো নিয়া। কিছু ট্যাকা হইলে খাবার কিনে খাইতে পারি, বাচ্চাটার ওষুধ কিনতে পারি।’

তিন ঘণ্টা পর সে পথে আবার গিয়েছিলাম। আসমা তখনো সবজি বিক্রির অপেক্ষায়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়