শিরোনাম
◈ ৩০০ আসনের লড়াই: আসন ছাড়ে অনীহা, জোট রাজনীতিতে বাড়ছে টানাপোড়েন ◈ হাদিকে গুলি: প্রধান অভিযুক্তের ‘জামিন বিতর্ক’ নিয়ে যা বললেন আইন উপদেষ্টা ◈ পে স্কেল নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে যে সিদ্ধান্ত নিল কমিশন ◈ মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ট্রাভেল পাস চাননি তারেক রহমান: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ◈ ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে বৈঠকে লন্ডন গেলেন জামায়াত আমির ◈ সরকারি গাড়িতে যুগ্ম সচিবকে জিম্মি, ৬ লাখ টাকা আদায়ের চেষ্টা ◈ হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ফয়সালের বাবা-মার স্বীকারোক্তি, মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য ◈ মেক্সিকো কংগ্রেসে উত্তপ্ত বিতর্কে হাতাহাতি, চুল টানাটানির ভিডিও ভাইরাল ◈ হাদির জন্য দোয়া ও দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার, সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ ◈ ‘আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে মামলা না থাকলেও গ্রেপ্তারের নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

প্রকাশিত : ২৩ এপ্রিল, ২০২১, ০৯:২৬ সকাল
আপডেট : ২৩ এপ্রিল, ২০২১, ০৯:২৬ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রান্নার পাত্র নেই, তাই সবজি বিক্রি করলেন আসমা

এই লকডাউনের সময়টায় পেশাগত দায়িত্বে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় যাই। নির্দিষ্ট কোনো কাজ না থাকলে মোটরবাইক নিয়ে পথে পথে ঘুরি, মানুষের জীবনগল্পের সন্ধান করি। মানুষের সঙ্গে কথা বলতে ভালো লাগে বলেই দুঃসহ কষ্ট নিয়ে যারা দিন পার করেন, তাঁদের পাশে যাই। সাহায্য নিয়ে পাশে দাঁড়াতে না পারি, তাঁদের গল্পগুলো তো পৌঁছে দিতে পারি ছবির মাধ্যমে।

২২ এপ্রিল এমনই উদ্দেশ্যে ঢাকার রাস্তায় ঘুরছিলাম। সূর্য তখন মাথার ওপর। পুরান ঢাকা ঘুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তনের (টিএসসি) কাছাকাছি যখন এসেছি, হঠাৎ দৃষ্টি কাড়ল একজন। ফুটপাতে নিল পলিথিন পেতে বসে আছেন তিনি, সামনে দুই ফালি মিষ্টিকুমড়া, কিছু টমেটো আর ঢ্যাঁড়স আর এক মুঠো কলমিশাক। পায়ের কাছে শুয়ে আছে তাঁর শিশুসন্তান। মোটরবাইক থামিয়ে তাঁর কাছে যাই। ক্যামেরাটা কাঁধেই ছিল তাক করতে না করতেই ওড়নায় মুখখানা ঢেকে ফেলেন। আর বলতে থাকেন, ‘ভাই, ছবি তোলেন কেন?’

আসমা বেগম

ছবি তোলা থামিয়ে তাঁর কাছে যাই, পরিচয় দিই, আলাপ করি। তারপর হাসিমুখে মেয়েকে কোলে তুলে নিলেন, ছবি তুলতে রাজি হলেন। শোনালেন তাঁর জীবনগল্প।

নাম তাঁর আসমা বেগম। বয়স কতই হবে, ২৪ কি ২৫। স্বামী সুমনের সঙ্গে থাকতেন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম এলাকায়। সেখানে দিন কাটছিল কোনো রকমে। কিন্তু লকডাউন শুরু হলে স্টেডিয়াম এলাকা ছাড়াতে হয়। এখন আশ্রয় নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার এই ফুটপাতে। থাকার জায়গা হয়তো ব্যবস্থা করে নিয়েছেন, কিন্তু রান্নার ব্যবস্থা নেই, নেই রান্না করার হাঁড়িপাতিলও। কিছু যে কিনে খাবেন, সে অর্থও নেই। আসমা জানালেন, তাঁর স্বামী সুমন একসময় ঢাকা ওয়াসার ম্যানহোল পরিষ্কারের কাজ করতেন। গত বছর করোনা মহামারি শুরুর পর সে কাজও আর পাচ্ছেন না। এখন বাধ্য হয়ে তিনি পুরোনো জিনিসপত্র টুকিয়ে বিক্রি করেন। লকডাউনে সেটাও বন্ধ। এর মধ্যে তিন মাস আগে তাঁদের মেয়ে হালিমার জন্ম হয়েছে।

তাই আজ যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কোনো একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দেওয়া সবজিগুলো পেলেন, অনেকটা ‘সংকটেই’ পড়লেন আসমা। তিনি বলছিলেন, ‘তেল-লবণ নাই, রান্নার হাঁড়িপাতিলও নাই, কী করব লাউ-টমেটো নিয়া। কিছু ট্যাকা হইলে খাবার কিনে খাইতে পারি, বাচ্চাটার ওষুধ কিনতে পারি।’

তিন ঘণ্টা পর সে পথে আবার গিয়েছিলাম। আসমা তখনো সবজি বিক্রির অপেক্ষায়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়