মিনহাজুল আবেদীন: [২] জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন মাহমুদ বলেন, শিশু পুষ্টি নিশ্চিত করতে দেশের প্রতিটি হাসপাতালে পুষ্টি কর্ণার স্থাপন করা হয়েছে। জেলা পর্যায়েও আলাদা শিশু পুষ্টি কর্ণার রয়েছে। শিশুদের স্বাস্থ্যগত ক্ষতি প্রতিরোধে কাজ চলছে।
[৩] মঙ্গলবার এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান অন্ধত্ব দূরীকরণে ভিটামিন এ সাপ্লিমেন্ট নিয়ে কাজ করে আসছে। যা অন্ধত্ব দূরীকরণে সফলতা এনেছে। বর্তমানে সহযোগী প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল মিউটিশনাল সার্ভিস এই বিষয়গুলো দেখাশোনার কাজ করছে।
[৪] প্রতিটি উপজেলায় প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু রয়েছে। ন্যাশনাল মিউটিশনাল সার্ভিস প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রশিক্ষণ পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়া মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করা হয়। স্বল্প এবং দীর্ঘ মেয়াদী পুষ্টি সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালুর জন্য পরিকল্পনা রয়েছে যা অচিরেই আরম্ভ করা হবে।
[৫] ডা. নাসির উদ্দিন বলেন, কোভিডকালীন মা ও শিশু স্বাস্থ্যের জন্য আলাদা কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। সেই লক্ষ্যে জনশক্তিকে প্রশিক্ষণ দেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের কাউন্সিলিং করা হচ্ছে। বিভিন্ন উপায়ে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তাদের প্রতি দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়। বিশেষ করে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রসূতী মাকে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেয়া হয়।
[৬] টেকসই উন্নয়নে দ্বিতীয় নাম্বারে থাকা ইরেস হাঙ্গার কনসেপ্ট নিয়ে সব কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির জন্য কাউন্সিলিংয়ের ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। এই কোভিড মহামারিতে মায়েদের কী ধরনের পুষ্টি ও স্বাস্থ্যসেবা এবং খাদ্য প্রয়োজন তা নির্ণয়ে কাজ চলছে। দেশের পুষ্টিমান বাড়ানোর জন্য আয়রণ ও আয়োডিনের ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। সারা দেশে সেটি মনিটরিং করা হচ্ছে। যাতে বাংলাদেশে আয়োডিনের ঘাটতিজনিত সমস্যার সমাধান হয়।
[৭] পরিচালক বলেন, পুষ্টি বিষয়ে সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সরাসরি কাজ করছে। পরোক্ষভাবে ২২টি মন্ত্রণালয় পুষ্টির সঙ্গে জড়িত রয়েছে। সবাই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। ক্ষুদ্রকায় শিশুর উচ্চতা বাড়ানো, অপুষ্টির হার কমানো, অন্ধত্ব দূরীকরণে কাজ চলছে।
[৮] কোভিডে মানুষের খাদ্যের মূল উপাদানের প্রতি নজর দিতে হবে। যেমন- স্নেহ, আমিষ, শর্করা, ভিটামিন, খনিজের পাশাপাশি বেশি করে প্রোটিন খেতে হবে। ভিটামিন সি যুক্ত শাক-সবজি ও ফলমূল বেশি করে খেতে হবে। করোনায় ভিটামিন ডি ব্যাপক মাত্রায় কার্যকর, যা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। সাধারণভাবে সূর্য রশ্মি থেকে পেয়ে থাকলেও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার আলাদাভাবে খেতে হবে।
[৯] এই মুহূর্তে গর্ভবতী মায়েদের বিশেষভাবে সচেতন থাকতে হবে। পর্যাপ্ত খাবার খেতে হবে। ভিটামিন সি, ডি, মাল্টি ভিটামিন এবং পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে। আমিষ জাতীয় খাবার বেশি করে খেতে হবে। প্রসূতি মায়েদের জন্য পুষ্টিকর কিছু খাবারের ‘বাস্কেট’ চালু করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ২২ এপ্রিল অনলাইনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ কর্মসূচি উদ্ধোধন করবেন এবং স্বাস্থ্যসচিব এতে সভাপতিত্ব করবেন। সম্পাদনা : মেহেদী হাসান
আপনার মতামত লিখুন :