নিউজ ডেস্ক: আগামী ২১ মে থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার করা রয়েছে। কিন্তু উদ্ভূত করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার ভর্তি পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ে হবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী-অভিভাবক এবং খোদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর মো. আখতারুজ্জামান বলেন, পরীক্ষা পেছাবে কি পেছাবে না, সে ব্যাপারে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো পরিস্থিতির উদ্ভব হয়নি। আগাম আভাস দেয়ারও কিছু নেই। এখনো এক মাস সময় হাতে আছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আমাদের সচেতনতা ও নজরদারি অব্যাহত রেখেছি। সময় হলেই সব জানতে পারবেন।
পূর্বের ঘোষিত শিডিউল অনুসারে, আগামী ২১ মে 'ক' ইউনিটের পরীক্ষার মাধ্যমে ঢাবিতে ভর্তি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। ২২ মে 'খ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা। ২৭ ও ২৮ মে যথাক্রমে 'গ' ও 'ঘ' ইউনিটের আর ৫ জুন 'চ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা।
ঢাবির সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছেন, করোনায় দেশে যে হারে মানুষের মৃতু্য হচ্ছে, তা নিয়ে সবার মধ্যেই এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠিত হলেও এখন পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলা হলেও অনেকে নাও আসতে পারে। এ ছাড়াও শিক্ষক এবং পরীক্ষা সংশ্লিষ্টদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টিও বিবেচনায় নিতে হবে। ফলে পরিস্থিতির উন্নতির জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া বিকল্প কিছু নেই। দিনে শতাধিক মৃতু্য অব্যাহত থাকলে ২১ মে থেকে ভর্তি পরীক্ষা শুরু করা সম্ভব হবে না। ভর্তি পরীক্ষার তারিখ পেছাতে হবে। নতুন তারিখ ও নতুন শিডিউল একাডেমিক কাউন্সিলের পরবর্তী সভায় নির্ধারিত হবে।
ভর্তি কমিটি সংশ্লিষ্টরা জানান, এবারের ভর্তি পরীক্ষায় আবেদন করেছেন ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৭১২ জন শিক্ষার্থী। তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির দায় ঢাবি কর্তৃপক্ষ নেবে না। মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কক্ষ ব্যবহার করার সময় শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা স্বাস্থ্যবিধি অনেক ক্ষেত্রেই মানেননি। এবার সে পরিস্থিতি মুখে পড়তে চায় না প্রশাসন।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক অনুষদের ডিনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশে করোনার মহামারির প্রকোপ কমে না আসলে ভর্তি পরীক্ষা পেছানো হতে পারে। তবে কতদিন পেছাবে, তা বলা মুশকিল। তারা বলছেন, এখনই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কিছু নেই। করোনা পরিস্থিতি কোন দিকে যায় সেটি দেখেই তারা সিদ্ধান্ত নিতে চান। পরিস্থিতি যে আগামী দুই-দশ দিনের মধ্যে পাল্টে যাবে, তাও তারা মনে করেন না।
ঢাবি বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডক্টর মুহাম্মাদ আব্দুল মঈন বলেন, পরীক্ষার এখনো এক মাস বাকি আছে। বিষয়টি নিয়ে এখনো ডিনস কমিটিতে আলোচনা হয়নি। তবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পরিস্থিতি যদি স্বাভাবিক না হয়, তাহলে পরীক্ষা পেছাতে পারে। তবে পরীক্ষার সার্বিক প্রস্তুতি শিডিউল মতো সম্পন্ন করে রাখা হচ্ছে।
ঢাবির ভর্তি কমিটি সূত্রে জানা গেছে, গত ২ এপ্রিল ঢাবিতে ভর্তি আবেদনের সময় শেষ হয়েছে। তাতে 'ক' ইউনিটে আবেদন করেছেন ১ লাখ ২৩ হাজার ৮০৬ জন। 'খ' ইউনিটে ৪৭ হাজার ৯৬২ জন, 'গ' ইউনিটে ২৭ হাজার ৭৫৬ জন, 'ঘ' ইউনিটে ১ লাখ ২১ হাজার ৫৩৭ জন এবং 'চ' ইউনিটে ২২ হাজার ৬৫১ জন ভর্তি ইচ্ছুক আবেদন করেছেন। তাদের আবেদন বৈধ বলে বিবেচিত হয়েছে। - যায়যায়দিন