শিরোনাম
◈ জাতিসংঘে সদস্যপদ প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর নিন্দা ফিলিস্তিনের, লজ্জাজনক বলল তুরস্ক ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের

প্রকাশিত : ১৯ এপ্রিল, ২০২১, ০৯:৩১ সকাল
আপডেট : ১৯ এপ্রিল, ২০২১, ০১:৪৮ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দীপক চৌধুরী: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানেন কখন ‘কী’ করা উচিৎ!

দীপক চৌধুরী: আমরা অতি সহজে বলে ফেলি, ‘এখানে কোনো কিছুই হবে না।’ অর্থাৎ ধৈর্য আমাদের এতোটাই ক্ষয়ে গেছে যে, ন্যূনপক্ষে সবুর করতে চাই না। গতবছর করোনার আক্রমণ শুরুর পর স্কুল-কলেজসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের ওপর চোটপাট শুরু করলাম। ‘কেনো বন্ধ করে দিচ্ছে না স্কুল-কলেজ। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া বড় নাকি জীবন বড়?’ শুরু হলো বিতর্ক। কোনো কোনো টিভির টকশোতেও একথা। গত নভেম্বরে আবার ঘ্যানঘ্যান, ‘সরকার স্কুল-কলেজ খুলে দিচ্ছে না কেনো? লেখাপড়ার তো সর্বনাশ হয়ে গেলো। বাচ্চারা শেষ হয়ে গেলো।’ একথাও বললাম আমরা কেউ কেউ। আবার দেশব্যাপী ঘুরবার প্রতিযোগিতায় নামলাম। নানাবাড়ি, দাদাবাড়ি, শ্বশুরবাড়ি, শালিকার বাড়ি ছুটেছি কেউ কেউ। এরপর দলবেঁধে কক্সবাজার, সিলেট, জাফলং, সুনামগঞ্জ ঘুরতে যাবার হিড়িক পড়ে গেলো। করোনার কথা যেনো বেমালুম ভুলেই গেলাম। এরমধ্যে এলো ভ্যাকসিন। ফলে আত্মীয়দের বাড়ি বেড়ানো যাওয়া, বিয়ে খাওয়া, আমোদ-স্ফূর্তি করার প্রতিযোগিতা কয়েকগুণ বাড়লো। এক কথায় বলা যায় যেনো, করোনা চলে গেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ঠেকানোর তাণ্ডব দেখলাম। ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন জেলায় তাণ্ডব দেখলাম, হেফাজতি তাণ্ডব। নারায়ণগঞ্জ রিসোর্টেও তাণ্ডব দেখলাম। এরপর, মার্চের শেষ দিক থেকে শুরু হওয়া কোভিড-১৯ আমাদের আতঙ্কিত করে। এখন কয়েকদিন ধরে শতাধিক মৃত্যু। শুরু হয়েছে লকডাউন।

কিন্তু লকডাউন কোনোভাবেই মানানো যাচ্ছে না। সুতরাং আমাদের ধৈর্য ক্ষয়ে যাওয়ার অসংখ্য উদাহরণ দেয়া যাবে। লেখার শুরুতে বলেছিলাম, ‘কিছুই হবে না এখানে?’ কারণ, হেফাজতের তাণ্ডব আমাদের অনেককে ‘ভীষণ আহম্মক’ বানিয়ে দিয়েছিলো। ঠাণ্ডামাথায় কাজ করার জন্য পরিবেশ দরকার। কিন্তু সেই পরিবেশের কথা আমরা বেমালুম ভুলে যাই। উদাহরণ টেনে কেউ কেউ বলতে শুরু করলেন, যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযম, সাকা চৌ, নিজামী, মুজাহিদ, সাঈদী, মীর কাশেমের মতো শক্তিধরেরা শাস্তি পেলো। ভয়ংকর যুদ্ধাপরাধী রাজাকাকারদের সর্বোচ্চ শাস্তি হয়েছে। ফাঁসি হয়েছে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় না থাকলে যা ছিলো কল্পনারও বাইরে। জাতি দেখেছে, পৃথিবীর কোনোশক্তি যুদ্ধাপরাধীর বিচার বন্ধ করতে পারেনি, কার্যক্রম থামাতে পারেনি। আর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার পরও বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার হুমকি দিচ্ছে হেফাজত, এটা কীভাবে হয়? কী রকম দুঃসাহস। বাংলাদেশবিরোধী দুঃসাহস। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি তাঁরাও অসহায়। সমালোচকদের কাউকেই বোঝানোর ক্ষমতা নেই যেনো কারো। কারণ, ইতিহাস থেকে আমরা শিক্ষা নেই না। আমরা ধৈর্য ধরতে জানি না। এটাই অমাদের বড় ব্যর্থতা। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সাহস, সততা, মেধা ও দূরর্শীতার কথা আমরা অনেকেই ভুলে যাই। তাঁর শরীরে তো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর রক্ত বইছে। হেফাজতের সেই তাণ্ডবের জবাব কীভাবে দিতে হবে তিনি তা জানেন, তাঁর সরকার জানে। তিনি জানেন, আইন নিজের গতিতে চলবে, শেখ হাসিনার গতিতে নয়। দেশে আইনের শাসন কীভাবে অব্যাহত রাখা যায় তাও প্রশাসন জানে। এজন্যেই বিলম্বে হলেও আইনের গতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশাসন পদক্ষেপ নিয়েছে। চোখের সামনে জাতি এরমধ্যেই দেখেছে, হেফাজত ইসলামের আজিজুল হক ইসলামাবাদী, ইলিয়াস হামিদি, সানাউল্লাহ নূরী, রফিকুল ইসলাম মাদানী, সাখাওয়াৎ হোসেন রাযি, ওয়াসেক বিল্লাহ নোমানী, লোকমান হোসাইন আমিনী, বশিরুল্লাহ, জুবায়ের, জালালুদ্দিন, ফখরুল ইসলাম, মঞ্জুর আফেন্দি, আতাউল করীম মাকসুদ, জুনাইদ আল হাবিব, শরীফ উল্লাহ, মামুনুল হক গ্রেফতার হয়েছেন।

মামুনুল হকের গ্রেফতারের বিষয়ে টেলিভিশনে ডিএমপির তেজগাঁও জোনের উপ-পুলিশকমিশনার হারুন-অর-রশিদ বলেছেন, মামুনুল হক ইতিমধ্যে দানবে পরিণত হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা রয়েছে।

আমি যেকথা বলতে চাই তা হচ্ছে সবুর। কৃষি, বাসস্থান, শিল্প, খাদ্য, স্বাস্থ্য তথা প্রতিটি সেক্টরের কথা উল্লেখ করলে দেখা যাবে যে, দেশের বহু উপকার সাধিত হয়েছে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণেই। শুধু উন্নয়ন-অগ্রগতিই নয়। তাঁর দূরদর্শিতাই তাঁর ওপর মানুষকে বিশ্বাসী করে তুলেছে। এটা প্রমাণিত যে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ হাসিনা এক আদর্শবাদী দূরর্শীসম্পন্ন জননেত্রী হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। কখনো কখনো তাঁর দুঃসাহসী নেতৃত্ব এদেশের জনগণকে আত্ববিশ্বাসী করে তুলেছে। সর্বশেষ ভয়ংকর করোনার প্রাদুর্ভাবে অতি সাধারণ মানুষ যখন দিশেহারা তখন কী করা যায় সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনিই। তিনি মন্ত্রী-সচিব, মুখ্যসচিব, কেবিনেট সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে কথা বলেছেন। যদিও সকল সেক্টর তাঁর নখদর্পনে। আগে মানুষের জীবন। ঘোষণা দিয়েছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতিতে নিম্ন আয়ের প্রায় ৩৫ লাখ পরিবারকে আড়াই হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া সম্প্রতি প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এক লাখ কৃষক পরিবার পাবে পাঁচ হাজার করে। এ জন্য সরকারের ৯৩০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম রোববার বার্তা সংস্থা বাসসকে এ তথ্য জানিয়েছেন। ৪ এপ্রিলের ঝোড়ো হাওয়া, শিলাবৃষ্টি ও ঘূর্ণিঝড়ে দেশের ৩৬টি জেলার ৩০ লাখ ৯৪ হাজার ২৪৯ হেক্টর ফসলি জমির মধ্যে ১০ হাজার ৩০১ হেক্টর ফসলি জমি সম্পূর্ণ এবং ৫৯ হাজার ৩২৬ হেক্টর ফসলি জমি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কাছ থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। এতে এক লাখ কৃষক সরাসরি ক্ষতিগ্রস্তহয়েছেন। কোভিড-১৯-এর ফলে কর্মহীন ও ক্ষতিগ্রস্ত এসব কৃষককে পাঁচ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনার সুপারিশ করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এ বাবদ ৫০ কোটি টাকা প্রয়োজন হবে। কৃষি মন্ত্রণালয় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা (নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও মুঠোফোন নম্বর) করছে। তালিকাটি চূড়ান্ত হলে প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ কম বা বেশি হতে পারে। অন্যদিকে বিগত ২০১৯-২০ অর্থবছরে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ পরিবারকে যাচাই-–বাছাই করে প্রায় ৩৫ লাখ পরিবারকে নগদ অর্থসহায়তা প্রদান করা হয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে নানাভাবে ষড়যন্ত্র চলছে-- স্বীকার করতেই হবে। চক্রান্তকারীরা নানারকম চক্রান্ত করছে। সুতরাং জনগণ মনে করে, ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তকারীদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে হবে। এটা প্রায়ই দেখা যাচ্ছে, নানা ইস্যুতে হিন্দু সম্প্রদায় তথা সংখ্যালঘুদের বাড়িতে, পূজামণ্ডপে ও মন্দিরে হামলা চালানো হয়ে থাকে। এদেশে এমন একটি ঘটনাও নেই যে, সাম্প্রদায়িক হামলাকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়েছে বা প্রতিহত করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে নিরীহ হিন্দুগ্রামবাসী বা সংখ্যালঘুরা পালিয়ে প্রাণে বাঁচার চেষ্টা করে থাকেন। দেখা যায়, দোষ যদি একজনও করে তাহলে পুরো সংখ্যালঘু গ্রামের ওপর ভয়ংকর তাণ্ডব চলে। তখন হামলা চলে একমুখী। প্রতিহত করার জন্য সংখ্যালঘুরাও লাঠিসোঠা ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে প্রতিহত করলে ভয়ংকর রক্তাক্ত ভূমিতে পরিণত হবে, এমনটাই আশঙ্কা থাকে। রক্ষা হয়নি হিন্দু গ্রাম। সুনামগঞ্জের শাল্লার হিন্দুগ্রামে হেফাজতের মামুনুলের অনুসারী হিসেবে শত শত মানুষ সশস্ত্র অবস্থায় ওই গ্রামে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা চালায়। এসময় স্বর্ণালঙ্কার, টাকাপয়সা লুটপাট করে, ভাঙচুর করে, প্রতিমাকে শুধু ভেঙ্গেই ক্ষান্ত হয়নি তারা, অশ্লীলভাবে প্রতিমাদের অপমান করে। কী জঘন্য কাণ্ড। হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিমা অবমাননার শাস্তি কী নেই? এই প্রশ্ন তো উঠতেই পারে! দিরাইয়ের সমাবেশে ( শানে রিসালাত সম্মেলন) দেওয়া বক্তব্যে হেফাজত নেতারা সরকার ও আওয়ামী লীগের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আসার বিরোধিতা করেন এবং এক জায়গায় হেফাজত নেতা বাবুনগরী চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন যে, “বাংলাদেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ঢুকতে দেওয়া হবে না।” কী রকম হাস্যকর আজব হুঁশিয়ারি। একদিকে সরকার বলছে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অবশ্যই আসবেন। অবশ্য নরেন্দ্র মোদি এসেছেন অংশগ্রহণ করেছেন আমাদের মুজিববর্ষে ও সুবর্ণজয়ন্তীতে। রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিগুলো ফের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কেন্দ্র (সিবিআইআর) গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, “আমরা মনে করি, এই অপশক্তিগুলো দেশবিরোধী অপতৎপরতায় লিপ্ত। অবিলম্বে তাদের আইনের আওতায় এনে চক্রান্তের মুলোৎপাটন করা অত্যন্ত জরুরি। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে যে সম্মৃদ্ধি ও স্বাতন্ত্র নিয়ে যেভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে তাকে অর্থবহ ও টেকসই করতেও এসব অপশক্তির বিষদাঁত উপড়ে ফেলা জরুরি। আমরা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সরকারকে এবিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।”

আমরা তো সবাই জানি, দেশ থেকে বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য ভাঙ্গার হুমকি দিয়ে ক্ষমতাসীন দলের তোপের মুখে পড়েন হেফাজত নেতা মামুনুল। প্রায় প্রতিটি জেলায় মামুনুলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গসংগঠনগুলো। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বক্তৃতা দিতে গিয়ে ফিরে আসেন এবং বাধার সম্মুখীন হন তিনি। তার বিরুদ্ধে এখনো বহু মামলা রয়েছে। অথচ দিরাইয়ে হেফাজতের সভায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কতিপয় নেতাও উপস্থিত থেকেছেন। এদের দিরাই-শাল্লাবাসী জানেন ও চিনেন। সেই সভার সূত্র ধরেই শাল্লায় হিন্দু সম্প্রদায়ের শতাধিক বাড়িঘর, প্রতিমা ভাঙচুর, স্বর্ণালঙ্কার, টাকা পয়সা সহায়-সম্পদ লুটপাট। আজকের দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, বিদেশীরা যখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ, বিদেশী রাষ্ট্রপ্রধানরা যখন বাংলাদেশে আসছেন, অনেক রাষ্ট্রপ্রধান ভিডিও বার্তার মাধ্যমে মুজিব শতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে দেশ এগিয়ে যাওয়ার প্রশংসা করছেন, তখন দেশে নতুনভাবে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে, তারা আজকে ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। এই অপশক্তিগুলো দেশবিরোধী অপতৎপরতায় লিপ্ত। অবিলম্বে তাদের আইনের আওতায় এনে চক্রান্তের মুলোৎপাটন করা অত্যন্ত জরুরি। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে যে সম্মৃদ্ধি ও স্বাতন্ত্র নিয়ে যেভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে তাকে অর্থবহ ও টেকসই করতেও এসব অপশক্তির বিষদাঁত উপড়ে ফেলা জরুরি। এই অপশক্তিগুলো কেবল মুক্তিযুদ্ধের মহান চেতনাকেই নস্যাৎ করতে উদ্যত নয়, তারা বাংলাদেশেকে বন্ধুহীন বিচ্ছিন্ন রাষ্ট্রে পরিণত করতেও অতিমাত্রায় সক্রিয়। সুতরাং সাধু সাবধান। মনে রাখতে হবে, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার চেতনা থেকেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। সাম্প্রদায়িকতাকে ‘কবর’ দিয়েছি ১৯৭১-এ।

লেখক : উপসম্পাদক, আমাদের অর্থনীতি, সিনিয়র সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়