মেহেদী হাসান: [২] ইরানের ডা. আফিফা ও ডা. মেহরান সম্প্রতি তাদের বিয়ে সম্পন্ন করেছেন।
[৩] সবচেয়ে কুৎসিত জিনিস হলো কারো পাতে উপচে পড়া খাবার। আর এই উপচে পড়া খাবারের সবচেয়ে বেশি অপচয় হয় বড়লোকদের বিয়ের পার্টিতে। মাওলানা রুমি বলেছিলেন- যে রান্নাঘরের টুংটাং আওয়াজ দরিদ্রের কানে যায়। কিন্ত খাবার তার পেটে যায়না- এরচেয়ে যন্ত্রণাদায়ক বাজনা পৃথিবীতে আর নেই।
[৪] ইরানের এই ডাক্তার নব দম্পত্তি এরকম অগণিত বুভুক্ষু মানুষ দেখেছেন। দেখেছেন- অর্থের অভাবে চিকিৎসাহীন অসংখ্য মৃতপথযাত্রী রোগী। একই সাথে দেখেছেন একেকটি বিয়ের পার্টিতে একেকদিনে কোটি কোটি রিয়েলের অপচয়।
[৫] বিয়ের আগে ডাঃ আফিফা ছোট একটা হিসাব করে দেখেন- দামী পোষাক, লাল কার্পেট, পার্টি সেন্টার, নানা বিলাসজাত সুগন্ধী, পার্লার, অলংকার, নিমন্ত্রিত অতিথিদের উপচে পড়া খাবার আর বিয়ের মোহরানা মিলে যে অর্থ ব্যয় হবে- তাতে কমপক্ষে ৩১৩ জন রোগীর সার্জারী করা সম্ভব। আর মেহরান তিনি নিজেই যেহেতু একজন ডাক্তার তাই স্বামীর কাছ থেকে তার আর্থিক কোনো দেনমোহর নেয়ার দরকার নেই।
[৬] যে জীবন যত বেশি সাধারণ, সহজ, সরল সে জীবন তত সুন্দর। আফিফা ও মেহরান এই সহজ, সরল সুন্দর জীবন বেছে নিয়েছেন।
[৭] ডা. আফিফা, মায়ের সাথে পরামর্শ করে তার হবু স্বামীকে জানালেন, তার মোহরানা হচ্ছে- অর্থাভাবে যাদের সুচিকিৎসা হচ্ছেনা এরকম ৩১৩ জন রোগীর জন্য স্বামীর কাছ থেকে বিনামূল্যে সার্জারী।
[৮] এই ডাক্তার দম্পত্তি হয়তো পুরো দেশের অভাব মুছে দিতে পারবেনা, পুরো দেশের মানুষের সুচিকিৎসার গ্যারান্টি দিতে পারবেনা। তবে, তাদের উদ্যোগ হয়তো ৩১৩ জন রোগীকে নতুন জীবন দিবে। নতুন জীবন ফিরে পাওয়া এইসর রোগীদের আশীর্বাদে তাদের গৃহ পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে। তাদের এই কাজ-অন্য মানুষের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
ইরানের ব্লগার নাসির আমীনের ভিডিও অবলম্বনে।
আপনার মতামত লিখুন :