শিরোনাম
◈ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি: কী পাচ্ছে বাংলাদেশ, কী হারাতে পারে? ◈ রাতেই সোহরাওয়ার্দীতে জড়ো হচ্ছেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা (ভিডিও) ◈ চাপাতি হাতে ব্যাগ ছিনিয়ে পুলিশের সামনেই হেঁটে গেলো ছিনতাইকারী, ভিডিও ভাইরাল ◈ রাশিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত ভারতের বৃহত্তম তেল শোধনাগার নায়ারা রিফাইনারির ওপর ইইউর নিষেধাজ্ঞা ◈ রাতের আকাশে ভেসে উঠলো ‘নাটক কম করো পিও’ (ভিডিও) ◈ জটিল ভয়ানক যে রোগে আক্রান্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! ◈ কুড়িগ্রামে চাঁদা দাবি করা জামায়াতের সেই নেতা সাময়িক বহিষ্কার ◈ বড়াইগ্রামে এক বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে দুই বিষয়ে দুই পরীক্ষার্থী ফেল! ◈ টাঙ্গাইলে পুলিশ হেফাজতে বিএনপি নেতার রহস্যজনক মৃত্যু ◈ এনসিপি’র মার্চ টু গোপালগঞ্জ তলিয়ে দেখা দরকার: শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি

প্রকাশিত : ১৬ এপ্রিল, ২০২১, ০৩:১৬ দুপুর
আপডেট : ১৬ এপ্রিল, ২০২১, ০৩:১৬ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] কয়লা থেকে গ্যাস নয়, বাংলাদেশের উচিত নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে মনোযোগ দেয়া: আইইইএফএ

লিহান লিমা: [২] নবায়নযোগ্য জ্বালানির খাতগুলো গ্যাস আমদানির চেয়ে অনেক বেশি সস্তা ও টেকসই, এছাড়া এটি উন্নয়নশীল দেশগুলোতে উন্নত শক্তি খাতের প্রয়োজনীয় জ্বালানি সুরক্ষা সরবরাহ করতে পারে বলে জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব এনার্জি, ইকোনমিকস এন্ড ফিনেন্সিয়াল অ্যানালাইসিস (আইইইএফএ)। রিলিফওয়েব

[৩] সংস্থাটির এনার্জি ফাইন্যান্স অ্যানালিস্ট সাইমন নিকোলাস এক আর্থিক বিশ্লেষণীতে বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মতো উদীয়মান বাজার অর্থনীতির দেশগুলো বিদেশী কোম্পানিগুলোর অর্থ উপার্জনের জন্য বেশ লোভনীয়। কিন্তু কয়লাভিত্তিক জ্বালানি প্রকল্প থেকে সরে গ্যাসের দিতে ঝোঁকের ফলে এই দেশগুলো অর্থনৈতিক ও পরিবেশগতভাবে হেরে যেতে পারে। এই ধরনের পরিবর্তন নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত করা ছাড়াও এই মহাদেশজুড়ে জলবায়ু অগ্রগতিতে মারাত্মক বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

[৪] সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্যাস উৎপাদক কোম্পানি জিই বাংলাদেশেরর সঙ্গে গ্যাস প্রযুক্তি বিক্রয় নিয়ে চুক্তি করেছে। এই চুক্তি মার্কিন এলএনজি রপ্তানির পথ আরো সুগম করবে। এদিকে জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) চলতি মাসের শুরুতে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে। চুক্তির আওতায় সংস্থাটি বাংলাদেশে নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র উন্নয়নে সহযোগিতা করবে। সেই সঙ্গে জাইকা জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশকে নিম্ন বা শূন্য কার্বন নিঃসরণকারী শক্তি ব্যবস্থা সম্পন্ন দেশ হিসেবে রুপান্তরে সহায়তা করবে।

[৫] যদিও এলএনজির গ্রীন হাউস গ্যাস নিঃসরণের হার প্রায় কয়লার মতোই। সেক্ষেত্রে পরিবেশগত দিক বিবেচনায় এই গ্যাস আমদানির বিষয়টি পুরোই ভুয়ো। এছাড়া আর্থিক ঝুঁকির দৃষ্টিকোণ থেকেও এলএনজির অনুসরণ বিতর্কিত। বাংলাদেশ নয়টি কয়লা প্রকল্প বাতিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে, কিন্তু এগুলোতে এলএনজি ব্যবহার করা হবে। এই ধরনের পদক্ষেপ হবে মারাত্মক এবং এটি দেশটিকে ক্রমবর্ধমান সক্ষমাতীত পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে পারে।

[৬] সাইমন বিশ্বাস করেন, বর্তমান জ্বালানি ও শক্তি উৎপাদন ব্যবস্থার ব্যাপক সংশোধনের মাধ্যমে চলমান পদ্ধতিগত বৈদ্যুতিক অদক্ষতাগুলো সমাধান করার সুযোগ বাংলাদেশের কাছে রয়েছে।

[৭]বর্তমানে বেশিরভাগ বিদ্যুত কেন্দ্র অসক্রিয় অবস্থায় থাকলেও সরকার সেগুলোকে অর্থ প্রদানে চুক্তিবদ্ধভাবে বাধ্য। পরিকল্পনার এই দুর্বলতার ফলে গ্রাহকদের বিদ্যুতের জন্য গড় ব্যয় বেড়ে যাবে। ইতোমধ্যেই এলএনজির অত্যাধিক দাম বাংলাদেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যদি বাংলাদেশ আরো বেশি এলএনজি নির্ভর হয়ে ওঠে তবে ব্যয় নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়বে।

[৮] বৈশ্বিক গ্যাস স্বল্পতার কারণে বিশ্বের বৃহত্তম গ্যাস আমদানিকারক দেশ জাপানে ২০২১ সালে বিদ্যুতের দাম রেকর্ড স্তরে উঠেছিলো। বাংলাদেশ বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি এড়াতে জীবাশ্ম জ্বালানিতে ভর্তুকি বাড়িয়েছে কিন্তু এটি দীর্ঘমেয়াদে সরকারী অর্থায়নের জন্য উপযোগী নয়।

[৯] সাইমন বলেন, গ্যাসের পরিবর্তনে নবায়নযোগ্য জ্বালানি বাংলাদেশে আর্থিক অবস্থান, চাহিদা ও জলবায়ুর প্রেক্ষাপটে অনেক বেশি উপযোগী। ছোট ছোট পদ্ধতিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। বিশ্বজুড়ে মূল্য বৃদ্ধি থেকে দেশকে রক্ষা করতে এই শক্তিই একমাত্র স্থিতিশীল সমাধান। সেই সঙ্গে এটিই একমাত্র শক্তির উৎস যা কর্ম কার্বন নিঃসরণ করে ও জলবায়ু বান্ধব।

[১০]বাংলাদেশ সরকারের নতুন খসড়া পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায় ন্যাশনাল সোলার এনার্জি রোডম্যাপ (এসএরইডিএ) ২০৪১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ৩০ মেগাওয়াটে উন্নীত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সংস্থাটির মতে, তাদের লক্ষ্যমাত্রার ৪০ভাগ আসবে ছাদে সৌরশক্তি থেকে, ৫ হাজার মেগাওয়াট আসবে গার্মেন্টস, টেক্সটাইল ও অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠানের ছাদ থেকে এবং ২ হাজার মেগাওয়াট আসবে সরকারী ভবনের ছাদগুলো থেকে।

[১১] যদিও এলএনজিতে বিনিয়োগ এই লক্ষ্যমাত্রাগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে। তাই সস্তা, নির্ভরযোগ্য ও শক্তির পরিচ্ছন্ন উৎসের জন্য নবায়নযোগ্য খাতগুলোতে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি অগ্রাধিকারমূলক পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা অত্যাবশ্যক।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়