রাশিদ রিয়াজ : মাত্র দুই সপ্তাহে এশিয়ার সেরা থেকে দুর্বলতম মুদ্রায় পরিণত হয়েছে ভারতীয় রুপি। সারা ভারত জুড়ে নতুন করে কোভিড সংক্রমণ ও পণ্য মূল্য বৃদ্ধি রুপিকে নাজুক অবস্থায় ঠেলে দিয়েছে। ব্যাংক অব ইন্ডিয়া তারল্য সংকটের দিকে ইঙ্গিত করে বলছে রুপির সংকট আরো গভীর হতে পারে। আগের ত্রৈমাসিকেও রুপি মুদ্রামানের দিক থেকে ভাল অবস্থানে ছিল। রুপির এ নাজুক অবস্থা ভারতের অর্থনীতিকে বেকায়দা ফেলে দিয়েছে। গত আট মাসে এই প্রথমবারের মত প্রতি মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ৭৫ রুপিতে নেমেছে। এ বছরের শেষ নাগাদ তা ডলারের বিপরীতে ৭৬ রুপিতে নামতে পারে বলে ফেডারেল ব্যাংক লিমিটেড আশঙ্কা করছে। দি প্রিন্ট।
ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির এমন অবমূল্যায়নে অনিচ্ছাকৃত মুদ্রা ঘাটতির পরিমান দাঁড়িয়েছে অন্তত ৫০ বিলিয়ন ডলার। কোভিড সংক্রমণ মোকাবেলায় মানুষের চলাচলে বিধি নিষেধ, কোথাও কোথাও আংশিক লকডাউন আরোপ ভারতের অর্থনৈতিক গতিবিধিকে অনেকটা স্থবির করে দেওয়ায় রুপির তেজীভাব হ্রাস পায়। অর্থনীতিতে চাহিদার ব্যাপক হ্রাস পাওয়ায় গত সাত দশকের মধ্যে ভারতীয় অর্থনীতি এখন সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় পড়েছে। মুম্বাইতে ফেডারেল ব্যাংক লিমিটেডের হেড অব ট্রেজারি ভি লক্ষণন বলেন আমরা যা আশা করেছিলাম অর্থনীতি তার চেয়ে অনেক বেশি প্রভাবিত হয়ে পড়েছে। কোভিডের কারণেই নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
গত এপ্রিলে ডলারের বিপরীতে রুপি ২.৬ শতাংশ অবমূল্যায়িত হয়। প্রথম ত্রৈমাসিকের শেষে রুপির অবমূল্যায়ন ঘটে আরো শূণ্য দশমিক ১ শতাংশ। অথচ গত তিনমাসে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে গতি সৃষ্টি হওয়ায় অন্যান্য এশীয় মুদ্রার তুলনায় রুপির অবস্থান বেশ শক্তিশালী ছিল। প্রবল বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহও ছিল। এখন রুপীর এ ধরনের অবমূল্যায়নে ব্যবসায়ীরা উদ্বেগ জানাচ্ছেন। পণ্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে আর্থিক ঘাটতির পরিমান আরো বাড়বে। তারল্য প্রবাহেও জট লাগছে। তারপরও বার্কলেস পিএলসি আশা করছে ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক তার বিশাল মজুদ ব্যবহার করে রুপিকে রক্ষা করবে। এফএক্স প্রধান ও বাজার কৌশল নিয়ে গবেষক আশীষ আগারওয়াল বলেন রিজাভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া মজুদ থেকে ডলার বিক্রি করে রুপির অবমূল্যায়নের রাশ টেনে ধরবে। আশীষ আশা করেন এর ফলে চলতি বছরের শেষ নাগাদ প্রতি ডলারের বিপরীতে ৭৩ রুপিতে শীঘ্রই দাঁড়াবে।
আপনার মতামত লিখুন :