ইমরুল শাহেদ: তিনি হলেন সঙ্গীত পরিচালক ফরিদ আহমেদ। এই ছবিটি তোলা হয়েছে আমার প্রযোজিত ‘কারাগার’ ছবির গান রেকর্ডিয়ের সময় শ্রæতি রেকর্ডিং ষ্টুডিওতে। যিনি ছবিটি তুলেছেন সেই ফিরোজ এম হাসান, যিনি মামা হিসেবে সর্বজন পরিচিত, তিনিও আজ প্রয়াত। ফরিদ আহমেদ সেদিন গায়ক আসিফ ও গায়িকা ডলি সায়ন্তনীকে যে গানটি রেকর্ড করেছিলেন সেটি লিখেছেন কবির বকুল।
গানের কথা ছিল এই রকল - ‘এই জন্মটা একবার, মৃত্যুও একবার....’। তাতে বাইবেলের একটি অধ্যায়ের প্রতিধ্বনি রয়েছে। পর্দায় গানটি এসেছে ফেরদৌস ও পপির লিপে। বেশ ক’দিনের শ্রম দিয়ে ফরিদ আহমেদ গানটির সুর রচনা করেছিলেন। সেই সুরের আজ যেন তিনি নিজেই বিলীন হয়ে গেলেন। কোভিড মহামারি তাকে সঙ্গীত প্রেমীদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে। তিনি ছিলেন নীরব এবং বিনয়ী একজন মানুষ। তবে কাজ পাগল।
প্রতিভার সঙ্গে শ্রম যুক্ত হলে একটা সুফল আসতে বাধ্য। তিনি তারই স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশের আগে তিনি ছিলেন বিশিষ্ট সঙ্গীত পরিচালক আলম খানের প্রধান সহকারী। তখন বেনামে অনজু ঘোষের একটি ছবির সঙ্গীত পরিচালনা করে দেন তিনি। ছবির টাইটেলে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে নাম গিয়েছে অনজু ঘোষেরই। তাতে খারাপ লাগছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, সে শর্তেই আমি কাজ করেছি।’ তবে তার মধ্যে দেখা গেছে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশের একটা প্রবল স্পৃহা।
তাকে বললাম, ‘আমার ইচ্ছা আছে, ছবি প্রযোজনা করব। আপনি হবেন আমার ছবির সঙ্গীত পরিচালক। যদি আমার দেরি হয়, তার মধ্যে যদি আপনার কাছে অফার আসে তাহলে কোনো দ্বিধা না করে নিয়ে নেবেন। আমার জন্য অপেক্ষা করবেন না।’ তিনি মুচকি হাসলেন। কোনো মন্তব্য করলেন না। আমি প্রথম ছবি ‘ঘায়েল’-এ তাকে নিতে পারিনি। কারণ আমার কথা বলা ছিল আলাউদ্দিন আলীর সঙ্গে। পরের ছবি বডিগার্ডে তাকে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে নিলাম।
কন্ট্রাক্ট ফর্ম সই করার পর আনন্দে তার দুই ফোটা অশ্রæ গড়িয়ে পড়তে দেখলাম। কারাগার ছিল তার তৃতীয় ছবি। দ্বিতীয় আমার চিত্রনাট্যে নির্মিত হওয়া প্রযোজক মিজানুর রহমান খান দিপুর ‘ওরা ৩ জন’। উল্লেখ্য, এখানে মুদ্রিত এই ছবিটিতে আসিফ, ডলি সায়ন্তনী, কবির বকুল, ফরিদ আহমেদ ও ছবির পরিচালক কালাম কায়সার রয়েছেন। কারাগার ছবিটি কালাম কায়সারেরও প্রথম ছবি।