শিরোনাম
◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ ভেটোর তীব্র নিন্দা,মার্কিন নীতি আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লংঘন : ফিলিস্তিন ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো

প্রকাশিত : ১২ এপ্রিল, ২০২১, ০১:২৮ দুপুর
আপডেট : ১২ এপ্রিল, ২০২১, ০১:২৮ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] হারিয়ে যাচ্ছে সুমিষ্ট আতাফল

আশরাফ আহমেদ: [২] আতা গাছে তোতা পাখি /ডালিম গাছে মৌ/ এত ডাকি তবু কথা/ কও না কেন বউ? ছড়ার ছন্দের সুমিষ্ট আতাফল গাছ কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে বাড়ির উঠোনে- সামনে, জঙ্গলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে একসময় ব্যাপক ছিল। কিন্তু একসময়ের এই ব্যাপক উৎপাদনশীল আতা ফলটি বর্তমানে প্রায় বিলুপ্তির পথে। কিন্তু এখন আর আতা ফলের চাষ ও বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন করা হয় না। অথচ এসব গ্রামের উৎপাদিত হাজার হাজার টাকার আতা ফল বিভিন্ন বাজারসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রয়ের জন্য সরবরাহ করা হতো। আতা ফলের চাষ করে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করে লাভবান হতো আতা ফল চাষীরা।

[৩] আতা সুপরিচিত ফল। এতে রয়েছে নানা গুণ। শুধু স্বাদের কারণেই নয়, স্বাস্থ্যের জন্য এটি দারুণ উপকারী ফল। ভিটামিন সির মতো নানা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে এতে। শরীরে রোগ সৃষ্টিকারী মুক্ত কণা থেকে মুক্তি দিতে পরে আতা। এ ছাড়া কোষ্ঠ পরিষ্কার, অরুচি দূর করা, ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়ানো ও দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখার প্রয়োজনে আতা খাওয়া যায়। আতা ফল হজমশক্তি বৃদ্ধি করে।

[৪] আতাফলে থাকা ফসফরাস খাবারের হজম শক্তিকে বাড়িয়ে তুলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া এর খাদ্যআঁশ হজমশক্তি বৃদ্ধি করে ও পেটের সমস্যা দূর করে। তাই যাদের হজমের সমস্যা আছে তারা আতা ফল খেলে অনেক উপকার পাবেন। দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় আতাফলে প্রচুর ভিটামিন এ আছে।অনেকের কাছে আতা খুব পছন্দের ফল। আতা খেতে ভারি মিষ্টি এ ফল খুব সজলভ্য। পাকা আতার শাঁস মিষ্টি হয়ে থাকে। খাওয়ার সময় জিভে চিনির মতো মিহি দানা দানা লাগে। পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ফলটি সহজে পেট ভরাতেও দারুণ সাহায্য করে। আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে গুণে ভরা আতাফল।

[৫] হোসেনপুর পশ্চিমপট্রির আতাফল চাষী কাজল জানায়, ‘এই ফল গাছটি আমরা বাড়িতে ও বাগানে চাষ করতাম, কিন্তু এখন আতা গাছে আর ফল হয়না সেই কারনে গাছ ও লাগাই না।’ শত শত আতা গাছ ছাড়া এসব গ্রামের কথা কল্পনাই করা যেত না। কিন্তু সেই আতা গাছ আজ আর নেই বললেই চলে। ইটভাটা, বিল্ডিং ও কৃষি জমির উপরে স্থাপনায় যেন হারিয়ে গেছে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য সু-স্বাদু ফল গাছ আতা।

[৬] প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে গেলে এখনও কিছু কিছু বসতবাড়িতে আতা ফল গাছ চোখে পড়ে। কোনো যত্ন ছাড়াই পরিত্যক্ত জমিতে আতা চাষ করে বছরে হাজার হাজার টাকা উপার্জন করা যেত। কিন্তু, বৈরী প্রকৃতি ও আবহাওয়ার কারনে এখন আর এসব এলাকায় আতা ফলের চাষ করা যাচ্ছে না বলেও জানায় আতা ফল চাষীরা। আতা ফল পাইকারী ব্যবসায়ীরা আতা ফলের ব্যবসা বাদ দিয়ে অন্যান্য ফলের ব্যবসায় ঝুকে পড়ছে।

[৭] ইদানিং সকলের কাছে ফলটি জনপ্রিয় হয়ে উঠায় বাড়ছে বিপুল চাহিদা কিন্তু সে পরিমানে আতা ফলের চাষ হচ্ছে না। বাজারে আতা ফল পাওয়া যাচ্ছে না। আর যদিও পাওয়া যায় তার দাম সাধারন ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার ঊর্দ্ধে। এজন্য হারিয়ে যাওয়া এই ফল চাষের বিস্তৃতি ঘটাতে সরকারের কৃষি বিভাগের পদক্ষেপ কামনা করেছে স্থানীয়রা।

[৮] বিশেষজ্ঞরা বলেন, আতা চাষকে পুনরায় আধুনিকায়ন ও গতিশীল করার জন্য কৃষকদেরকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা প্রয়োজন। শুধু কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর নয় গোটা দেশময় একসময়ের হারিয়ে যাওয়া এই জনপ্রিয় ফল গাছ আতা চাষের বিস্তৃতি ঘটাতে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে এমনটিই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের। সম্পাদনা: সাদেক আলী

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়