শুভ কামাল: [১] তিনি হোটেলের রেজিস্ট্রারে বউয়ের নাম লিখছেন, ‘আমিনা তৈয়বা’, সেইটা আসলে তার প্রথম বউয়ের নাম। ধরা খেয়ে পরে ভিডিওর মাঝে অন রেকর্ডে জনতাকে বলছেন, তার বউয়ের নাম আমিনা তৈয়বা, পাশের রুমে সেই মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদে নাম জানা গেলো জান্নাত আরা ঝর্ণা! আমার প্রশ্ন হচ্ছে, তিনি যদি তার দ্বিতীয় বউ নিয়েই যাবেন, তাহলে রেজিস্ট্রারে প্রথম বউয়ের নাম লিখলেন কেন? ও, সেইদিন আবার ড্রাইভার নিয়ে যাননি। নিজে ড্রাইভ করে গেছেন। (কাকাদের কতো সুবিধা, একজনের নাম লিখে আরেকজন নিয়ে ঢুকে যেতে পারেন, সিসি ক্যামেরার ভিডিওতেও সবাইরে সেইম লাগে, কোনটা কোন ভাইয়ের বউ সেইটা বুঝা যায় না!)
[২] জান্নাত আরা ঝর্ণা, সেইটা ছিল তার এসিস্ট্যান্ট হাফিজ শহীদুল ভাইয়ের বউ। জান্নাত আরার ছেলে অন রেকর্ডে এসে বলেছেন সেই মামুনুলই ধান্ধা করে সংসারটা ভেঙেছে, সংসার থাকা অবস্থায়ই মামুনুল কুপ্রস্তাবও দিয়েছিল। তার ভিডিও এখন ভাইরাল। (যেভাবে মামুনুলের পোস্টের কমেন্টে দেখি লোকে জীবন দিয়া দিচ্ছে, সেই তুলনায় হাফিজ সাহেবের বউ দিয়ে দেয়ার ঘটনাটা সামান্যই বলতে হয়!)
[৩] মিজানুর রহমান আজহারি এক বয়ানে আগে বলেছেন, গোপনে যে বিয়া হয় বাংলা সিনেমার মতো আকাশ বাতাস সাক্ষী রেখে, সেইটা আসলে বিয়া হয় না, সেইটা জেনা করা হয়, আর বিয়ে করতে হয় সমাজকে জানিয়ে, নইলে সেটা বিয়ে হয় না। এখনের যুগে সমাজকে জানানোর একটা প্রক্রিয়া হচ্ছে আইনগতভাবে বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা, অর্থাৎ কাবিন করা। মামুনুলের কাবিন তো নাই-ই, মামুনুল কবে দ্বিতীয় বিয়া করছে সেইটা তার দ্বিতীয় বউ নামধারী জান্নাত আরা ঝর্ণাও জানে না! মামুনুলের সাথে তার দ্বিতীয় রেকর্ডিং যেটা বাইর হইছে সেইটাতে জান্নাত আরাকেও সেটা নিয়ে কথা বলতে শোনা গেছে। ধরা খাওয়ার পরে সে তার আসল বউকে যে কল দিয়েছিল সেটাতেও মামুনুলকে একই কথা বলতে শোনা গেছে।
(যাইহোক, তার সাপোর্টাররা অবশ্য দাবি করছে সেসব ভুয়া রেকর্ডিং। যদিও আমরা সবাই জানি সরকার এখন সন্দেহভাজনদের সব কলই রেকর্ড করে। তারাও জানে, এখন চাটছে আরকি। কিছু সফেদ দাঁড়িওয়ালা লোকও সটান দাঁড়িয়ে বলে যাচ্ছে, তারা নাকি আগেই জানতো, কেউ আগ বাড়িয়ে বলছে সে নিজেই নাকি দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে অবকাশে যেতে বলেছিল। তাদের ধর্ম ব্যবসায়ের মূল সম্বলই হচ্ছে মিথ্যা কথা বলা, আর আল্লাহর নাম দিয়ে মিথ্যা কসম কাটা। এটা মামুনুল ইস্যুতে আবারও প্রমাণ হয়ে গেলো। হেফাজতের সুরা সদস্যরা [বাংলা সুরা শব্দের প্রতিশব্দ হচ্ছে মদ] বলছেন, মামুনুলের হোটেলবাজি ঠিকই আছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা যে শব্দটা ব্যবহার করেন সেটা হচ্ছে মজলিসে ‘শূরা’। কিন্তু যারা বলে জেনা করা ঠিকই আছে, তারা শূরা সদস্য না, তারা সুরা সদস্য।)
[৪] যাইহোক, নারায়নগঞ্জের হেফাজতকর্মীরা তাদের নেতার অবাধ মেলামেশায় তথা জেনা করায় বাধা দেওয়ায় অনেক ভাঙচুর করেছে। তারা জীবন দিয়ে হলেও হুজুরের জেনা করার অধিকার রক্ষা করবে বুঝা গেলো। এতে করে বুঝা গেলো কীভাবে কওমি মাদ্রাসায় শিশুরা কোনোরকম কনসিকোয়েন্স ছাড়াই পেছন দিকে নির্যাতনের শিকার হয়। আমার মনে হচ্ছে এসব জেনা, শিশুদের সাথে সমকাম ইত্যাদি লুতি কওমিদের সিলেবাসের ভেতরেরই জিনিস। তারা সেই সব অধিকার রক্ষার জন্য ভাংচুর করে দুই দিন আগেই দেখলেন!
যাইহোক, মামুনুল এর কাছ থেকে বাংলার বিবাহিত হোটেলবাজদের শিক্ষা নেয়ার আছে। খুব সুন্দর এক সিস্টেম। হোটেলে নেয়ার আগে অবশ্যই এমন ভাবে ঢেকে নিবেন যেন তার চোখ বাদে আর কিছু দেখা না যায়। তারপর হোটেল রেজিস্ট্রারে আসল বউয়ের নামই লেখবেন, ৯০% এর দেশে কেউ ঘোমটা খুলে চেক করার সাহস পাবেনা সেইটা আপনারই বউ নাকি হাফেজ সাহেবের বউ। তার পর ৫০১ নাম্বার রুমে গিয়ে যা করার করবেন!
ধরা খেলে বলবেন বিয়ে করা বউ। বেশী সমস্যা হলে এলাকার হেফাজতী ভাইদের খবর দিবেন। তারা লাঠিসোটা নিয়ে আপনার জেনা করার অধিকার হেফাজত করবেন! তারও বেশী সমস্যা হলে সুরা সদস্যরা তো আছেই, তারা ফতোয়া দিয়ে হোটেলবাজি হালাল করে দিবেন! তাই সময় থাকতে সব হোটেলবাজরা দলে দলে হেফাজতে যোগ দিন! যাইহোক, হাদিস সংরক্ষণের সময় বেশ কিছু প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয়েছে, যেমন ধরুন হাদিস বর্ণনাকারী এক রাবি ছিলেন যিনি তার ঘোড়াকে নির্যাতন করেছিলেন, তার বর্ণনা করা হাদিস গ্রহণ করা হয়নি। যুক্তি হিসেবে বলা হয়েছে- যে লোক ঘোড়াকে নির্যাতন করে তার দ্বারা বর্ণনা করা হাদিস বিশ্বাস করা যায়না।
তাহলে হোটেলবাজ মামুনুল যে হাদিসের বয়ান শুনাবে সেগুলা বিশ্বাস করা হবে কিভাবে? সেই লোক ইসলামের হেফাজত করবে সেটাই বা বিশ্বাস করবেন কেমনে?? আমার তো মনে হয় আগে পেছন দিকের যোদ্ধা আর হোটেলবাজদের কবল থেকে ধর্মকে হেফাজত করতে হবে, এরাই তো মুসলমানদের গায়ে সবচেয়ে বেশি কালি লাগাচ্ছে। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :