শিরোনাম
◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ জাতিসংঘে সদস্যপদ প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর নিন্দা ফিলিস্তিনের, লজ্জাজনক বলল তুরস্ক ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক

প্রকাশিত : ১০ এপ্রিল, ২০২১, ০২:৫২ রাত
আপডেট : ১০ এপ্রিল, ২০২১, ০২:৫২ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিআরটি প্রকল্পে দুর্ঘটনা: জমা পড়েনি তদন্ত প্রতিবেদন কাজ এখনো বন্ধ

নিউজ ডেস্ক: দুর্ঘটনার পর ২৭ দিন ঢাকার বিমানবন্দর এলাকায় বন্ধ রয়েছে বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের নির্মাণকাজ। বন্ধ থাকা নির্মাণকাজ শুরু করতে চীনের বিশেষজ্ঞ দলের জন্য অপেক্ষা করছে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। তবে তিন দফা সময় দিলেও এখনো দেশে পৌঁছায়নি এ বিশেষজ্ঞ দল। ক্রমবর্ধমান করোনা পরিস্থিতিতে তারা আসবেন কিনা, তা নিয়েও আছে অনিশ্চয়তা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে তা প্রকল্পের সার্বিক কাজে প্রভাব ফেলবে। অন্যদিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে জমা দেয়ার কথা থাকলেও দুর্ঘটনার পরদিন গঠিত তদন্ত কমিটি এখনো প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি।

গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্টের মাধ্যমে ঢাকার বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত ২০ দশমিক ২ কিলোমিটার দীর্ঘ বিআরটি করিডোর গড়ে তোলা হচ্ছে। করিডোরে বাস চলাচল নির্বিঘ্ন করতে গড়ে তোলা হচ্ছে ছয়টি ফ্লাইওভার। জয়দেবপুর চৌরাস্তা, ভোগরা, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, কুনিয়া, জসীম উদ্দীন ও বিমানবন্দর এলাকায় এসব ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে বিমানবন্দর এলাকায় ফ্লাইওভারের ওপর কংক্রিটের স্লাব বসানোর লঞ্চিং গার্ডার (বিশেষ ধরনের ক্রেন) ভেঙে যায়। দুর্ঘটনায় আহত হন ছয় শ্রমিক। এ দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে আব্দুল্লাহপুর এলাকায় একই প্রকল্পের সদ্য ঢালাই করা একটি পিয়ারের ক্যাপ ধসে পড়ে।

এ দুই ঘটনা তদন্তে ১৫ মার্চ একটি কমিটি গঠন করে দেয় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। সাত সদস্যের ওই কমিটির আহ্বায়ক করা হয় বিভাগের যুগ্ম সচিব আনিসুর রহমানকে। দুর্ঘটনার কারণ উদ্ঘাটন, স্পেসিফিকেশনের মানদণ্ড অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছিল কিনা, গার্ডার লঞ্চিংয়ের ক্ষেত্রে যথাযথ যন্ত্রপাতি, দক্ষ জনবল, প্রযুক্তি ও কৌশল অবলম্বন বা অনুসরণ করা হয়েছিল কিনা, প্রকল্পের পক্ষ থেকে মনিটরিং বা সুপারভিশনের ঘাটতি ছিল কিনা, ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্টদের গাফিলতি ছিল কিনা, তা তদন্ত করে দেখার কথা এ কমিটির। পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানোর লক্ষ্যে সুপারিশ প্রণয়ন করার কথা। কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দেয় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ।

তবে সাত কর্মদিবস পেরিয়ে আরো দুই সপ্তাহ অতিক্রম করলেও এখনো প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি তদন্ত কমিটি। এ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কমিটির আহ্বায়ক আনিসুর রহমান বলেন, আমরা তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। কিছু জটিলতার কারণে এখনো তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া সম্ভব হয়নি। শিগগির আমরা তদন্ত প্রতিবেদন মহাসড়ক বিভাগে দাখিল করব।

দুর্ঘটনার পর থেকে এখনো বিমানবন্দর এলাকায় বন্ধ রয়েছে বিআরটি প্রকল্পের ফ্লাইওভারের নির্মাণকাজ। দুর্ঘটনার আগে এখানে ফ্লাইওভারটির কয়েকটি পিয়ারের ওপর কংক্রিটের স্লাব স্থাপন করা হয়েছিল। এখনো সে অবস্থাতেই রয়েছে। প্রকল্প কর্তৃপক্ষ চীনের একটি বিশেষজ্ঞ দলের জন্য অপেক্ষা করছে। দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত লঞ্চিং গার্ডারটি পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো তারা খতিয়ে দেখবে। তাদের পরামর্শের পরিপ্রেক্ষিতে পুনরায় নির্মাণকাজ শুরু হবে।

এদিকে প্রায় এক মাস ধরে একটি ফ্লাইওভারের কাজ বন্ধ থাকায় পুরো প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি বিঘ্নিত হওয়ার শঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ২০১২-১৬ মেয়াদের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদিত হলেও প্রকল্পটির কাজ শুরুই হয় ২০১৭ সালে। পরে দুই দফা বাড়িয়ে মেয়াদ ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত নেয়া হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণে বিমানবন্দরে একটি ফ্লাইওভারের নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় তা প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতিতে প্রভাব ফেলবে। প্রকল্প কার্যালয়ের তথ্য বলছে, গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত বিআরটি লেনের অগ্রগতি হয়েছে ৪২ দশমিক ২ শতাংশ। আর প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারগুলোর কাজের অগ্রগতি ৭০ দশমিক ২ শতাংশ।

তবে ঢাকা বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলছেন, কাজ বন্ধ থাকা ফ্লাইওভারটির কারণে প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতিতে কোনো প্রভাব ফেলবে না। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফ্লাইওভারটি ছাড়া পুরো প্রকল্পের কাজ স্বাভাবিক গতিতে চলছে। প্রকল্পের সার্বিক কাজে কোনো ক্ষতি হচ্ছে না।

নির্মাণকাজ বন্ধ থাকার বিষয়টিতে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, লঞ্চিং গার্ডারটি দেখার জন্য গত ২১ মার্চ চীন থেকে একটি বিশেষজ্ঞ দল আসার কথা ছিল। পরে তারা আসার তারিখ পরিবর্তন করে ২৮ মার্চ নির্ধারণ করে। কিন্তু এখনো চীন থেকে বিশেষজ্ঞ দল বাংলাদেশে আসতে পারেনি। এ বিশেষজ্ঞ দলের কারণেই তদন্ত কমিটির কার্যক্রম বিলম্বিত হচ্ছে। দুর্ঘটনার কারণটি সবচেয়ে ভালোভাবে তারাই বের করতে পারবেন। আমরা চাই দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ বের করে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে। সবকিছু নির্ভর করছে চীন থেকে বিশেষজ্ঞ দল আসার ওপর। দুর্ঘটনায় যে লঞ্চিং গার্ডারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, চীনের বিশেষজ্ঞ দলের পরামর্শ ছাড়া সেটি ঠিক করা কঠিন। তাই এখনো বিমানবন্দর এলাকায় ফ্লাইওভারের নির্মাণকাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। -বণিক বার্তা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়