আশরাফ আহমেদ:[২] লোভ লালসার মোহে পড়ে মানুষ এখন বিবেকহীন। পরের ধন আত্মসাৎ করার ধ্যানে মগ্ন। ইদানিং স্বচ্ছ ও সৎ লোকদের খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তবে সৎ লোক আছে বলেই দুনিয়াতে এখনো বিশ্বাস শব্দটি রয়েছে।
[৩] এমনি একজন সৎ দিনমজুর প্রায় ৪ ভরি স্বর্ণালংকার ভর্তি একটি ব্যাগ পুলিশের মাধ্যমে প্রকৃত মালিকের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। সততার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করা ঘটনাটি ঘটেছে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার ধনকুড়া গ্রামে।স্বর্ণালংকার ফিরিয়ে দেয়া অহিদ মিয়া (৪৫) পাকুন্দিয়া উপজেলার চরকাওনা গ্রামের সাহেদ আলীর ছেলে।
[৪] জানা গেছে, উপজেলার ধনকুড়া গ্রামের ঝুমা মজুমদার স্বামীর সঙ্গে মোট সাইকেল যোগে বাবার বাড়ি থেকে শ্বশুরবাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায় যাওয়ার পথে স্বর্ণালংকার ভর্তি ব্যাগটি রাস্তায় হারিয়ে ফেলেন।
[৫] ব্যাগে এক জোড়া বালা, একটি হার, একটি চেইন, দুটি মঙ্গলসূত্রসহ প্রায় চার ভরি স্বর্ণালংকার ছিল বলে জানা যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ব্যাগটি না পেয়ে তার ভাই অয়ন চন্দ্র দে হোসেনপুর থানায় একটি জিডি করেন।
[৬] এদিকে দিনমজুর অহিদ মিয়া হোসেনপুর-পাকুন্দিয়া সড়কের কাওনা গ্রামের রসুল প্রধানের বাড়িসংলগ্ন এলাকায় স্বর্ণালংকার ভর্তি ব্যাগটি কুড়িয়ে পান। পরে প্রকৃত মালিক খুঁজে না পেয়ে তিনি ব্যাগটি বুধবার স্থানীয় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।
[৭] পুলিশ যাচাই-বাচাই করে বুধবার রাত ১০টার দিকে স্বর্ণালংকার ভর্তি ব্যাগটি প্রকৃত মালিকের কাছে বুঝিয়ে দেয়।স্বর্ণালংকার ভর্তি ব্যাগটি ফিরে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে ঝুমা মজুমদারের ভাই অয়ন চন্দ্র দে বলেন, এতগুলো গহনা হারিয়ে আমাদের মন অনেক খারাপ হয়ে গিয়েছিল। আমার বোন তো এই চিন্তায় খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিয়েছিলেন।
[৮] তিনি আরও বলেন, এরকম ভালো মানুষ এখনো দেশে আছে। তার (দিনমজুর অহিদ মিয়া) জন্য মন খুলে দোয়া করলাম।স্বর্ণালংকার ভর্তি ব্যাগটি ফেরত দেয়া সম্পর্কে দিনমজুর অহিদ মিয়া বলেন, ব্যাগটি পেয়ে খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম। কখন আসল মালিকের কাছে ফেরত দিব এ চিন্তায় রাতে ঘুমাতে পারিনি। এখন ফেরত দিতে পেরে অনেক তৃপ্তি পেয়েছি।
[১০] হোসেনপুর থানার ওসি শেখ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দিনমজুর অহিদ মিয়ার সততা দেখে আমরা মুগ্ধ হয়েছি। তার জমা দেয়া স্বর্ণালংকার ভর্তি ব্যাগটি যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত মালিকের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :