লিহান লিমা: [২] গত ৩০ বছর ধরেই ঝুলে রয়েছে বৈশ্বিক নূন্যতম কর্পোরেট করারোপের আলোচনা। যুক্তরাষ্ট্র বলছে ‘বৈশ্বিক কর চুক্তি’তে পৌঁছাতে পারলে দেশগুলো নিজেদের সীমান্তের মধ্যে লব্ধ লভ্যাংশের ভিত্তিতে কর্পোরেট মুনাফার ওপর আরো বেশি কর আদায় করতে সক্ষম হবে। ব্লুমবার্গ
[৩] যুক্তরাষ্ট্র ‘অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপরাশেন এন্ড ডেভেলপমেন্ট’ (ওইসিডি) এর আলোচনায় ‘ডিজিটাল কর ও বৈশ্বিক নূন্যতম কর’ নিয়ে ১৪০টি দেশের কাছে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছে। এই নথিটি এখনো উন্মুক্ত হয় নি। নাম না প্রকাশ করার শর্তে নথি সংশ্লিষ্ট একজন জানিয়েছেন, কোনো দেশের মধ্যে কোম্পানিগুলোর আয়কৃত অর্থের ওপর ভিত্তি করে এই করহার বরাদ্দের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
[৪] বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইন্টারনেট বা সেবা সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি মাধ্যমসহ নির্দিষ্ট কিছু খাতের ওপর এই কর আরোপ রয়েছে। কিন্তু মার্কিন প্রস্তাবে ডিজিটাল সংস্থাগুলি ছাড়াও বহুজাতিক কোম্পানি ও শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলোকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। এই পরিকল্পনায় কোম্পানিগুলো যে দেশে তাদের বেশি ভোক্তা ও সেবাগ্রহীতা রয়েছে সে দেশগুলোতে বেশি কর দেবে, এবং যেখানে কম রয়েছে অথবা সদরদপ্তর রয়েছে সেখানে কম কর দেবে।
[৫] এই গ্রীষ্মের মধ্যেই বৈশ্বিক কর ব্যবস্থাপনা নিয়ে চুক্তিতে উপনীত হতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে বিভিন্ন ইস্যুতে মতানৈক্যের কারণে এই চুক্তিতে একমত হতে পারে নি দেশগুলো। কারণ বর্তমানে এই করের হার একেক দেশে একেক রকম। যেমন-হাঙ্গেরিতে কর্পোরেট কর ৯ শতাংশ, আয়ারল্যান্ডে ১২.৫ শতাংশ, ফ্রান্সে ৩২ শতাংশ ও পর্তুগালে ৩১.৫ শতাংশ।
[৬] ওইসিডি’তে পাঠানো মার্কিন পরিকল্পনায় দুইটি বিষয় অন্তর্ভূক্ত রয়েছে, প্রথমত, কোন দেশ কর্পোরেট মুনাফার ওপর কর প্রয়োগের অধিকার রাখবে। দ্বিতীয়ত, কর্পোরেট বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করতে দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক প্রতিযোগীতায় লাগাম টানা। এই চুক্তির ফলে এককভাবে কোনো দেশ ডিজিটাল কর আরোপ করতে পারবে না। কোম্পানিগুলোও বলছে, লাভের ওপর দেশগুলোর এককভাবে করারোপ তাদের জন্য বিরুপ পরিস্থিতি তৈরি করছে। যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক নূন্যতম কর ২১ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে। পূর্বের প্রস্তাবগুলোতে যা ছিলো ১২.৫ শতাংশ।
[৭] ইউরোপিয় ইউনিয়নও মার্কিন অর্থমন্ত্রী জেনেট ইয়েলেরনের এই প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছে। তবে সংস্থাটি বলছে, বৈশ্বিক নূন্যতম কর্পোরেট করের হার ওইসিডি’র বৈঠকেই নির্ধারণ করা উচিত। রয়টার্স
[৮]এর আগে যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন কোম্পানি ফেসবুক, গুগল, অ্যালপাবেটসহ বিভিন্ন টেক মাধ্যমগুলোকে করের আওতায় না আনতে অন্যান্য দেশগুলোকে পরামর্শ দিয়েছিলো। তবে সম্প্রতি যুক্তরাজ্য, ইতালি, স্পেন, তুরস্ক, ভারত ও অস্ট্রিয়া মার্কিন মালিকানাধীন এই কোম্পানিগুলোকে করের আওতায় এনেছে। মার্কিন বাণিজ্য দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী অ্যাডওয়াল অ্যাডেমো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এককভাবে ডিজিটাল সংস্থাগুলোর ওপর করারোপকে সমর্থন করে যা, যা কি না এককভাবে মার্কিন কোম্পানিগুলোকেই লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :