ফজলুল হক: [২] বুধবার দুপরে উপজেলার সফিপুর রূপনগর এলাকায় নিজের ঘর থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাকে হত্যার অভিযোগে তার স্বামী, শ্বশুর ও ননাসকে আটক করা হয়েছে।
[৩] নিহত গৃহবধু হলেন, সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার চিলগাছা এলাকার ইউনুস আলীর স্ত্রী সুবর্ণা আক্তার (২১)।
[৪] এলাকাবাসী, নিহতের পরিবার ও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, গত পাঁচ মাস আগে সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার চিলগাছা এলাকার শুকুর আলী মেয়ে সুবর্ণা আক্তারের সঙ্গে পারিবারিকভাবে একই এলাকার নাজিম উদ্দিনের ছেলে ইউনুস আলীর বিয়ে হয়। এরপর স্বামী-স্ত্রী দুজনে জীবিকার খোঁজে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে আসেন। পরে তারা উপজেলার সফিপুরের রূপনগর এলাকার হাফিজ উল্লাহর বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছেন।
[৫] স্বামী ইউনুস আলী উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় ইকোটেক্স পোশাক কারখানায় কাজ করেন। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রী দুজনের মধ্যে পারিবারিক কলেহ চলে আসছিল। এর ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার রাতেও তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়।
[৬] প্রতিদিনের মতো বুধবার ভোরে স্বামী ইউনুস আলী বাসা থেকে বের হয়ে তার কর্মস্থলে যান। সকাল আটটার দিকে তার ননাস নাসরিন বেগম তাকে ডাকতে গেলে কোন সারা শব্দ পান না। তার দাবি, ঘরের দরজা ধাক্কা দিয়ে দেখতে পান সুবর্ণা আক্তার গলার রশ্মি দিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলে আছে। পরে বোনের ফোন পেয়ে ভাই ইউনুস আলী বাসায় আসেন। পরে ভাই-বোনে মিলেমিশে ওই গৃহবধুর লাশটি মাটিতে নামান। বিষয়টি টের পেয়ে ওই বাসার কেয়ারটেকার সন্তোষ মীর মৃধা কালিয়াকৈর থানা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে নিজের ঘর থেকে গৃহবধু সূবর্ণা আক্তারের লাশ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের লাশ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
[৭] তবে নিহতের মা ঝর্ণা বেগম ও বড় বোন সুমি আক্তার অভিযোগ করে বলেন, বিয়ের পর থেকেই সুবর্ণাকে তার স্বামী ইউনুস বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে আসছিল। গত রাতেও তাকে নির্যাতন করে তার স্বামী। পারিবারিক কলহের জেরেই সুবর্ণাকে হত্যার পর তাকে ঝুলিয়ে রাখার কথা বলছেন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এদিকে ওই গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগ তার স্বামী ইউনুস আলী, শ্বশুর নাজিম উদ্দিন ও ননাস নাসরিনকে আটক করেছে পুলিশ।
[৮] কালিয়াকৈর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শামসুদ্দোহা জানান, খবর পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা ময়নাতদন্তের পর সঠিক কারণ জানা যাবে। এছাড়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী, শ্বশুর ও ননাস আটক করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :