জাহিদুল হক চন্দন: ‘ঘরে বউ আছে, বাপ মা আছে, রিকশা চালাইয়া সংসার চালান লাগে। লক ডাউনের আগে প্রতিদিন পাঁচ থেকে সাতশো টাকা আয় করতাম। প্রতিদিন যা আয় রোজগার অয়তো তা সংসারে বাজার সদাই করতেই চইলা যাইতো। লকডাউনে তো এহনো কোনদিন একশো টাকাও আয় করতে পারি নাই। ঘরে বইসা থাকলে তো আয় রোজগার অইবো না। তাই রিকশা নিয়া বাইর হয়ছি। লকডাউন মানলে ভাত খামু ক্যামনে’।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার উকিয়ারা গ্রামের রিকশা চালক মো.পান্নু মিয়া এ প্রতিবেদককে এবাবেই কথাগুলো বলছিলেন।
করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে সাত দিনের লক ডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। মানিকগঞ্জে ঢিলেঢালাভাবে লকডাউন পালন হলেও এর প্রভাবে নিম্ন আয়ের মানুষের আয় কমেছে।
বেউথা এলাকার অটো চালক মো. ফরিদুল হক সরদার বলেন, লকডাউনে অটো চালানো নিষেধ আছে জানি কিন্তু অটো না চালালে সংসার চলবো ক্যামনে। প্রতি সপ্তাহে আটশো বিশ ও মাসে ৩ হাজার দুইশো টাকা কিস্তি দিতে হয়। তাছাড়া তো সংসারের খরচও আছে।
ভাটবাউর এলাকার ডাব বিক্রেতা মো. সোলায়মান বলেন, লক ডাউন না থাকলে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ টি ডাব বিক্রি হতো। এর বেশি ডাব আনলেও বিক্রি হতো। লকডাউনে পেটের দায়ে ডাব বিক্রি তরতে বের হয়ছি। তবে এখন ২০টি ডাবও বিক্রি হয় না। যা আয় হয় তা দিয়ে কোনো রকম খেয়ে দেয়ে বেঁচে আছি।
চর হিজুলী এলাকার রিকশা চালক মো. আরিফ বলেন, ইঞ্জিনের রিকশা কেনার সময় এনজিও থেকে ৪০ হাজার টাকা লোন নিছি। প্রতি সপ্তাহে এক হাজার টাকা কিস্তি দিতে হয়। লকডাউনের আগে আয় রোজগার ভালই ছিলো। তবে লক ডাউনের পর থেকে আয় রোজগার একেবারেই নেই। সকাল থেকে রিকশা নিয়ে বের হয়ছি। এখনো তেমন কোনো ট্রিপ দিতে পারি নাই।
জেলা প্রশাসক এস.এম.ফেরদৌস বলেন, লকডাউন থাকায় প্রায় সব শ্রেণির মানুষের আয় রোজগার কমে গেছে। তবে যারা একেবারেই অস্বচ্ছল বা যাদের খাওয়া দাওয়ার সমস্যা হচ্ছে তারা আমাদের কাছে আসলে তাদের সহযোগিতা করা হবে। সম্পাদনা: হ্যাপি
আপনার মতামত লিখুন :