মো. শামসুল ইসলাম: মামুনুল হকের ঘটনার মতো এরকম এক কেস স্টাডি পেয়ে জার্নালিজম ও মিডিয়া স্টাডিজের শিক্ষকরা বেশ খুশি। শিক্ষার্থীদের বলার মতো এরকম যুৎসই উদাহরণ খুব কমই পাওয়া যায়। আমাকেও এ সেমিস্টারে স্টেট ইউনিভার্সিটির জার্নালিজম ডিপার্টমেন্টে মিডিয়া ল, রাইটস ও এথিকস বিষয়ক একটি কোর্স পড়াতে হচ্ছে। সুতরাং আমিও এ বিষয় নিয়ে একটু খোঁজখবর নিচ্ছি। অনেকে প্রশ্ন করছেন, এটা কি নিউজ? অবশ্যই। সাংবাদিকতা শিক্ষার প্রথম দিনেই তো শেখানো হয় Name makes news । সেলিব্রিটিদের স্ক্যান্ডাল তো অবশ্যই সংবাদ। বিদেশি মিডিয়াতো ওমুক সেলিব্রিটি spotted with woman টাইপের সংবাদতো প্রায়ই দেখা যায়।
মামুনুল হক যা করেছেন তা illegal না unethical সে বিতর্কও উঠছে। মামুনুল হক বলছেন, তার বিয়ে শরীয়তসম্মত। ইসলামে আমি যদ্দূর জানি পুরুষের দ্বিতীয় বিয়েতে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি প্রয়োজন নেই। কিন্ত আমাদের দেশের আইনে প্রথম স্ত্রীর অনুমতির প্রয়োজন রয়েছে। ঘটনাপ্রবাহে দেখা যাচ্ছে মামুনুল হক সম্ভবত প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নেননি। সুতরাং তিনি বিয়ে করলেও তার বিয়ে আইনমাফিক হয়নি। ইসলামে লুকিয়ে বিয়ে করার বিধান নেই। বিয়ের সংবাদ অবশ্যই প্রচারিত হতে হবে। মামুনুল হক এক্ষেত্রে অনৈতিক কাজ করেছেন বলা যায়। আবার সাধারণ মানুষ কর্তৃক তার রুমে ঢুকে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ বা ফোনালাপ প্রকাশ প্রসঙ্গে ব্যক্তিস্বাধীনতার বিষয়টি অনেকে সামনে নিয়ে আসছেন। এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। পত্রিকাগুলোও বেশ মজার হেডলাইন করছে। ‘হেফাজত নেতা মামুনুল এখন পুলিশ হেফাজতে’ এরকম হেডলাইন অনলাইনে বেশ চোখে পড়লো! সাধারণ মানুষজন বেশ বিভ্রান্ত। এটা ঠিক যে হেফাজতের সমর্থক গোষ্ঠী বেশ বড়। তারা না পারছে মামুনুলের এ ঘটনা জাস্টিফাই করতে, না পারছে ইগনোর করতে। তবে ধর্মের হেফাজতকারী আর মর্যালিটির ধারকবাহক হিসেবে দাবি করা মামুনুল প্রমাণ করেছেন যে এদেশে তিনি অন্যদের চেয়ে আলাদা কিছু নন। ধর্মীয় নেতা হলেও তার জীবনাচরণ, কথাবার্তা আমার কাছে কখনো আধ্যাত্মিক-টাইপ মনে হয়নি।
আমি কোনো রায় দিচ্ছি না। মিডিয়ার পর্যবেক্ষক হিসেবে এটাই বলতে চাইছি যে সঙ্গত কারণেই মিডিয়া ল, রাইটস এণ্ড এথিকস কোর্সে মামুনুল হকের ঘটনাটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কেসস্টাডি হতে পারে। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :