আরিফ জেবতিক: এক টিকিটে দুই ছবির মতো আমাদের দেশে এক টেলিফোনে দুই শ্রোতা। কারা যেন নিয়মিত সব নাগরিকের ফোনকলে আড়ি পাতে। তার ফলাফল তেমন সুবিধা হওয়ার কথা নয়। কারণ এখন কেউ ফোনে মন খুলে কথা বলে না। যেমন ধরা যাক আমি, আমার ফোন কলে আমি এতো মিষ্টি মিষ্টি করে সরকারের প্রশংসা করি যে, যে ভদ্রলোক আড়ি পেতে আমার কথা শুনে (যদি শুনে থাকে আর কী) তাহলে সে নির্ঘাত লজ্জায় গাল ব্লাশ করে। একটা উদাহরণ দিলে ব্যাপারটা বুঝতে পারবেন। আমার ড্রাইভার ৩ দিনের কথা বলে বাড়ি চলে গিয়ে আজ ৩ সপ্তাহ ধরে আসছে না। তার সঙ্গে আমার কথোপকথন নিম্নরূপ : আমি : তুমি কবে আসবা? তোমার তো কোনো খবরই নেই। ড্রাইভার : ভাইজান, আদা তুলতেছি। আদা তোলা শেষ হয়নি।
আমি : মাশাআল্লাহ, খুব ভালো খবর। বর্তমান সরকারের অভূতপূর্ব কৃষি উন্নয়নের অবদানে তোমার ক্ষেতে আদা বেশি হয়েছে, সেটা তো অবশ্যই তুলবা। আদা তোলার পরে হলুদ লাগাও, মরিচ লাগাও। তারপর ইচ্ছা হলে ডিউটিতে আসো কোনো অসুবিধা নেই। যাই হোক, এই যে সরকারি নজরদারি, এটা আমাদের মেনে নিতে হচ্ছে। বিশেষ করে ২০১৫-১৬ সালের জঙ্গি হামলার রেশ ধরে সরকার অপরাধ দমনে সব মিডিয়ামে নজরদারি করবে, এটা খুব একটা অবাক হওয়ার বিষয় নয়। কিন্তু অবাক হওয়ার বিষয় হচ্ছে, এই ফোনালাপগুলো খুব সহজেই ফাঁস হয়ে যায়। এই ফাঁস হয়ে যাওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘন। এতে উলাøসিত হওয়ার কিছু নেই। কারা যেন চাইলেই যথেচ্ছা অরাজকতা করতে পারে না। যা আমার আপনার জন্য খারাপ, তা সবার জন্যই খারাপ। আমরা যদি একটি সিভিল রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখি, তাহলে এই খারাপকে খারাপ বলাটা শিখতে হবে আমাদের সকলেরই। লেখক : অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট
আপনার মতামত লিখুন :