জাহিদুল কবির: যশোরে পৃথক চারটি ফেনসিডিল চোরাচালান মামলায় এক নারীসহ পাঁচ মাদক ব্যবসায়ীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিয়েছে একটি আদালত। বুধবার (৩১ মার্চ) অতিরিক্ত জেলা জজ ২য় আদালতের বিচারক আয়শা নাসরীন পৃথক রায়ে এ সাজা দেন। সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, ঝিকরগাছার উত্তর পায়রাডাঙ্গা গ্রামের মৃতকাওছার মোড়লের ছেলে জামসেদ মোড়ল, ঢাকা যাত্রাবাড়ীর ধলপুর এলাকার খাজামিয়ার ছেলে মিলন মিয়া, মানিক গঞ্জ জেলার সদর উপজেলার সোনাকান্দর গ্রামের কাজল হোসেনের স্ত্রী সারমিন আক্তার, যশোর সদর উপজেলার চানপাড়ারমৃত খোকনবিশ্বাসের ছেলে বাবুল হোসেন ও ফরিদপুর সদরের মুন্সিবাজার (কাপুরা) গ্রামের গয়নাথ বিশ্বাসের ছেলে রনজিৎ বিশ্বাস। রাষ্ট্র পক্ষে মামলা গুলো পরিচালনা করেছেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম বকুল।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০০৮ সালের ২১ অক্টোবর ঝিকরগাছা থানা পুলিশ আসামি জামসেদ মোড়লের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় তাকে আটক ও তার ঘর থেকে ২শ’ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে এ এস আই শাহীন মাহমুদ বাদী হয়ে চোরাচালান দমন আইনে ঝিকরগাছা থানায় মামলা করেন। এ মামলায় তাকে ছয় বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ২০০৯ সালের ১৩ আগস্ট বেনাপোলের ২২ রাইফেল ব্যাটালিয়নের সদস্যরা ভারত থেকে আসার সময় মিলন মিয়াকে আটক ও তারকাছ থেকে ২০ বোতল ও ২ কেজি ৪শ’ গ্রাম ফেনসিডিল উদ্ধার করাহয়। এ মামলায় আসামি মিলন মিয়ার দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া ২০১৩ সালের ২৫ মার্চ বেনাপোলের বিজিবি আমড়াখালি চেকপোস্টে রাতসাড়ে ৯টার দিকে হানিফ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস তল্লাশি করা হয়। এ সময় সারমিনের ভ্যনিটি ব্যাগ থেকে ১৭ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করাহয়। এ মামলায় দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড, এক হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।
এ ছাড়া ২০০৭ সালের ২৫ মার্চ যশোর-৬ ক্যাম্পের র্যাব সদস্যরা বেনাপোল সড়কের মালঞ্চীর বদর উদ্দিন ব্রিকসের সামনে অবস্থান নেন। সকাল ৭টার দিকে বাবুল ও রনজিৎকে আটক করে। এবং মোটর সাইকেলের বক্স থেকে ১২০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। এ মামলায় প্রত্যেককে পাঁচ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড, পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।
সাজাপ্রাপ্ত বাবুল হোসেন, জামসেদ মোড়লবাদে বাকিরা পলাতক রয়েছেন।
এছাড়াও যশোর কেশবপুরের এক শিশুকেধর্ষণ চেষ্টার দায়ে তামিম হোসেন নামে এক কিশোরকে ছয় মাস আটকাদেশ দিয়েছে আদালত। বুধবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক টিএমমুসা এক রায়ে এ সাজা দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত তামিম হোসেন কেশবপুর উপজেলার বেলকাটী গ্রামের আব্দুল মোমিনের ছেলে।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, আসামি তামিমের পাশের গড়ডাঙ্গা গ্রামের এক বাড়ি এসে শিশু কন্যাকে আদর ও খাবার কিনে দিত। ২০১৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে তামিম ওই শিশুকে একা পেয়ে পাশের একটি বাগানে নিয়ে ধর্ষণ করে। শিশুর কান্নার শব্দে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে তামিম পালিয়ে যায়। গুরুতর জখম অবস্থায় ওই শিশুকে উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে ওই শিশুর পিতাবাদী হয়ে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি তামিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে ৬ মাসের আটকাদেশ দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত তামিম হোসেন আটক আছেন।
আপনার মতামত লিখুন :