বাসাইল(টাঙ্গাইল) প্রতিনিধিঃ [২] জেলায় অন্যান্য বছরের তুলনায় টমেটোর ফলন হয়েছে বেশ ভালো। কিন্তু এবার বাজারে টমেটোর দাম ও চাহিদা তুলনামূলকভাবে একেবারেই কম। ক্ষেত থেকে টমেটো তুলতে কর্মচারির খরচও উঠাতে পারছেন না চাষিরা। বাজারে নিয়েও বিক্রি করতে না পেরে টমেটো ফেলে দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে। বিক্রি করতে না পেরে ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে অসংখ্য কৃষকের টমেটো। ফলে বিপাকে পড়েছেন এ অঞ্চলের টমেটো চাষিরা।
[৩] জানা যায়, টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলায় এবার ৭শ’ ৭৩ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের টমেটোর আবাদ করা হয়েছে। এবার এ অঞ্চলে ফলনও হয়েছে বাম্পার। বাজারে টমেটো বিক্রির শুরুতে ৩শ’ থেকে সাড়ে ৩শ’ টাকা মণ দরে বিক্রি করা যেতো। কিন্তু বর্তমানে বাজারে সর্বোচ্চ ২শ’ টাকা মণ করে বিক্রি করা যাচ্ছে।
[৪] সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বাসাইল উপজেলার আদাজান গ্রামে গিয়ে চোখে পড়ে বিশাল চক। এই চকে টেমেটো, কাঁচা মরিচ, বেগুন, ডাটা, শসা, আলু, গম, ভূট্টাসহ বিভিন্ন ধরণের কৃষি আবাদ করা হচ্ছে। সেখানে কথা হয় টমেটো চাষি মালম খানের সাথে।
[৫] তিনি বলেন, ‘আমি প্রায় ৮০ শতাংশ জমিতে টমেটোর আবাদ করেছি। এ পর্যন্ত আমার খরচ হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা। বাজারে দুইশ’ টাকা মণ করে টমেটো বিক্রি করতে হচ্ছে। যেখানে অন্যান্য বছর বিক্রি করতাম ৬শ’ থেকে ৮শ’ টাকা মণ। টমেটো তুলতে কর্মচারি ও বাজারে নেওয়ার খরচই উঠছে না। এখন টমেটো ক্ষেতেই পচে যাচ্ছে।’
[৬] টমেটো চাষি আব্দুল লতিফ বলেন, ‘আমি ৫০ শতাংশ জমিতে টমেটোর আবাদ করেছি। এ পর্যন্ত আমার ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বাজারে টমেটোর দাম একেবারেই কম। বাজারে ২ থেকে ৩ টাকা কেজি দরে টমেটো বিক্রি হচ্ছে। অনেক সময় বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে না পেয়ে ফেলে দিয়েও আসতে হয়। টমেটো তুলতে কর্মচারি ও বাজারে নেওয়ার জন্য গাড়ির খরচই উঠছে না।’
[৭] সুলতান নামের আরও এক চাষি বলেন, ‘আমি ২৮ শতাংশ জায়গায় টমেটোর আবাদ করেছি। আমার খরচ হয়েছে ১৭ হাজার টাকা। এখন আর বিক্রি করতে পারছি না। এজন্য টমেটো ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে। এবার আমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।’
[৮] বাসাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজনীন আক্তার বলেন, ‘বাসাইলে প্রায় ২০ হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের হাইবিট ও স্থানীয় জাতসহ কৃষকরা টমেটোর আবাদ করেছেন। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ফলন বেশ ভালো। কৃষকরা এই মূহুর্তে বাজারে বিক্রি করছেন।
[৯] টাঙ্গাইলের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘এবার টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলায় ৭শ’ ৭৩ হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ করা হয়েছে। সরকার করোনাকালে কৃষকদের মাঝে সার ও বীজ বিতরণ করেছেন। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার টমেটোর ফলন ভালো হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় বাজারে টমেটোর দাম কম রয়েছে।’ সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :