শিরোনাম
◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ ভিত্তিহীন মামলায় বিরোধী নেতাকর্মীদের নাজেহাল করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী ◈ অপরাধের কারণেই বিএনপি নেতা-কর্মীদের  বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী  ◈ অ্যাননটেক্সকে জনতা ব্যাংকের সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিলের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি  ◈ ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবরে বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্ক ◈ বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের বাউন্ডারি ভেঙে বাস ঢু‌কে প্রকৌশলী নিহত

প্রকাশিত : ২৯ মার্চ, ২০২১, ১২:৪৩ রাত
আপডেট : ২৯ মার্চ, ২০২১, ১২:৪৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অগনিত ইয়াবা সম্রাট  এখনো অধরা,মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসন

ফরিদুল মোস্তফা খান:  কোন ভাবেই ঠেকানো যাচ্ছেনা ভয়ংকর মাদক ইয়াবার আগ্রাসন। একই সাথে ইয়াবার বিকল্প হিসেবে বানের পানির মত মিয়ানমার থেকে আসছে নতুন মাদক আইস।

কক্সবাজারের উখিয়া টেকনাফে এখনো চলছে এসব মাদকের জমজমাট বানিজ্য।

আটকের পর জেলে গেলেও জামিনের পর মাদক ব্যাবসায়ীরা কোন অবস্থায় ছাড়ছেননা মাদক ব্যাবসা।

জানা গেছে, সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ হত্যাকান্ডের পর কিছুদিন ইয়াবা পাচার কমে এলেও সম্প্রতি আবার তা ব্যাপক হারে  মাথাছাড়া দিয়ে উঠেছে।

ফলে ককসবাজার হয়ে মাদকের বস্তা বস্তা চালান ফের পৌঁছে যাচ্ছে গন্তব্যে।

সড়ক পথের পাশাপাশি আকাশ ও নৌপথেও পাচার হচ্ছে মাদক। চাহিদা থাকায় আর এজন্য মাদক কারবারিরা নিত্যনতুন রুট পরিবর্তন ও করছে। সীমান্তের বিভিন্ন পাহাড়ি সড়ক ব্যবহার করে নিরাপদে পাচার করছে কোটি টাকার ইয়াবা।

গত বছরের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ। এ ঘটনার পর কিছু দিন কমে আসে ইয়াবা পাচার। কক্সবাজার জেলা পুলিশে গণহারে বদলিসহ বিভিন্ন ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে ইয়াবা পাচারকারী সিন্ডিকেট রুট পরিবর্তন করে ইয়াবা পাচার করছে। মিয়ানমার সীমান্তবর্তী সড়ক টেকনাফ হয়ে উখিয়ার বালুখালী ও বাইশফাঁড়ি সড়ক ব্যবহার করছে পাচারকারীরা। একইভাবে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন শৈলরডেবা সড়ক হয়ে রত্মাপালং ভালুকিয়া, হলদিয়াপালং পাতাবাড়ি সড়ক দিয়ে প্রবেশ করে ইয়াবার চালান যাচ্ছে চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।

টেকনাফের হ্নীলা ডিস আলম,হোয়াইকং নয়া বাজার এলাকার মৌলভী মফিজ প্রকাশ গুটি মফিজ সহ টেকনাফ - কক্সবাজারের শতাধিক মাদক সম্রাটের নেতৃত্বে চলছে মাদকের জমজমাট এই ব্যাবসা।

অভিযোগ উঠেছে,পুলিশের কিছু অসৎ সদস্যের সাথে গোপন সম্পর্ক থাকায় সব ধরনের অভিযানে এরা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যান।

টেকনাফ ২ বিজিবি’র অধিনায়ক লে. কর্ণেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান সাংবাদিকদের জানান,মাদকের বিরুদ্ধে বিজিবি সবসময় সোচ্চার।

এ কারনে প্রতিদিন মাদক ব্যাবসায়ীদের আটক করা হচ্ছে। অভিযান চলছে রাত দিন।

কক্সবাজার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, মাদক ব্যবসায়ীরা সীমান্তের বিভিন্ন অলিগলি, ছোট সড়কগুলোকে নিরাপদ রুট হিসাবে বেছে নিয়েছে।

এ কারণে এসব সড়ক চিহ্নিত করে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এছাড়াও পাচারের পেছনে কারা জড়িত তা তৃণমূল পর্যায়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, পাচারকারি সিন্ডিকেট পুলিশের অবস্থান লক্ষ্য করে বার বার পাচারের রুট পরিবর্তনের কারণে ইয়াবা পাচারকারীদের ধরা সম্ভব হচ্ছে না। তবে পুলিশ বাহিনীকে মাদক পাচার প্রতিরোধে সর্তক অবস্থানে থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সীমান্তের নিভর্রযোগ্য সূত্র জানা যায়, পুলিশ, বিজিবি ও র্যাবসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা থাকা সত্ত্বেও উখিয়া ও টেকনাফ সীমান্তের ৩৫টি পয়েন্ট দিয়ে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আসছে বাংলাদেশে। শুধু স্থলপথ নয়, আসছে সাগরপথেও। নিত্যনতুন কৌশলে মাদকের চোরাচালান আসছে। কখনও ত্রাণবাহী কিংবা জরুরি পণ্যবাহী যানে; মাছ ধরার ট্রলার, কাভার্ড ভ্যান, কখনও পায়ুপথে, কখনও যানবাহনের ইঞ্জিনের কাভারে করে গন্তব্যে পৌঁছে যাচ্ছে ইয়াবা। করোনার মধ্যে মাদকসেবীদের জন্য হোম ডেলিভারিও হচ্ছে।

টেকনাফের সেন্টমার্টিন, শাহপরীর দ্বীপ, দমদমিয়া, লেদা, রঙ্গিখালী, উলুচামারী, মৌলভীবাজার,হ্নীলা, ফুলের ডেইল, নোয়াখালীয়াপাড়া, শাপলাপুর, সাতঘরিয়াপাড়া, উখিয়ার আমতলি, ডেইলপাড়া, ডিগলিয়া, টাইপালং, দরগাহবিল, থাইংখালী, পালংখালী, বালুখালী, রহমতের বিল, মরিচ্যা পাতাবাড়ী, রেজুখাল, নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম, গর্জনবুনিয়া, তুমব্রুসহ অন্তত ৩৫টি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে ইয়াবা ঢুকছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গারা ইয়াবা পাচারে সম্পৃক্ত হওয়াতে পাচারকারীরা বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপদে আশ্রয় নেয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান ও পর্যবেক্ষণের উপর ভিত্তি করে পাচারকারী সিন্ডিকেট তাদের মজুদ করা ইয়াবার চালান পাচার করছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় অনেকেই জানিয়েছেন, উখিয়া ও টেকনাফ সীমান্তে ইয়াবাসহ মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযান অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছে। যার ফলে এ পর্যন্ত বড় কোনও ইয়াবা কারবারি আটকের খবরও পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি আত্মসমর্পণকারী সীমান্তের ইয়াবা গডফাদারদের অনেকেই জামিনে বের হয়ে বহাল তবিয়তেই ইয়াবা কারবার চালাচ্ছে নতুন করে। ‘ইয়াবার গেটওয়ে’ হিসেবে পরিচিত টেকনাফের খুব কাছাকাছি মিয়ানমার সীমান্তের অভ্যন্তরে প্রায় ৪০টি ইয়াবা কারখানায় উৎপাদিত ইয়াবার চালান আসে একমাত্র টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে।

এ ব্যাপারে কক্সবাজারের দায়িত্বপ্রাপ্ত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সৌমেন মন্ডল জানান, সীমান্তে যেকোন মূল্যে ইয়াবাসহ সব ধরনের মাদকের চোরাচালান বন্ধে কঠোর হচ্ছে সরকার। ইয়াবা পাচারকারীদের গ্রেফতারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সবসময় অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি ইয়াবার চালান বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে আমাদের। আমরা বসে নেই, প্রতিনিয়ত চলছে আমাদের মাদকবিরোধী অভিযান ও ধর পাকড়।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ৬০ জন গডফাদারসহ ১১৫১ জন মাদক কারবারির তালিকা প্রকাশ করে সরকার। এই তালিকায় টেকনাফ সীমান্তেরই রয়েছে ৯ শতাধিক ইয়াবা কারবারি।

তৎমধ্যে অগনিত ইয়াবা সম্রাট রয়েছে, যারা জীবনে একবার ও গ্রেফতার হননি,বরং পুলিশকে পরামর্শ দিয়ে লোকজন গ্রেফতার করান।

কেউ কেউ প্রকাশ্যে থানায় দালালীর পাশাপাশি এলাকায় নেতাগিরী করছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়