রাশিদ রিয়াজ : সৌদি আরবের বৃহত্তম তেল কোম্পানি আরামকো’র ক্রুড টারমিনালে হামলার পর তেলের দর বাড়তে শুরু করে। আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্ক ব্রেন্ট’এর মূল্য ২.৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ব্যারেল প্রতি উঠেছে ৭১ ডলারে। গত বছর জানুয়ারির পর এটাই আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের সর্বোচ্চ দর। ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের দর অবশ্য ২৫৩ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। রোববার সৌদি আরবের রাস তানুরায় আরামকো’র ওই টারমিনালে ড্রোন হামলা চালায় ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। বিশে^র সবচেয়ে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা থাকার পরও এধরনের হামলা ঘটে। বিশে^র প্রতিদিনের তেল চাহিদার ৭ শতাংশ অর্থাৎ সাড়ে ৬ মিলিয়ন ব্যারেল তেল উৎপাদন হয় এ টারমিনাল থেকে। কিছুদিন আগে ব্যাংক অব আমেরিকা কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতি ও টিকাদান কর্মসূচি বিশ্লেষণ করে আভাস দেয় তেলের দাম অচিরেই ব্যারেলে ১শ ডলার উঠতে যাচ্ছে।
শুধু রাস তানুরা নয় ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা সৌদি আরবের বিভিন্ন তেল ক্ষেত্র ও বিমান বন্দরে ধারাবাহিকভাবে ড্রোন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ২০১৪ সালে সৌদি আরব ইয়েমেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। এরপর ইয়েমেনের এডেন বন্দর সহ বিভিন্ন এলাকা অবরোধ করে রাখায় দেশটিতে দুর্ভিক্ষময় পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ২০১৯ সালে এধরনের এক হামলায় সৌদি আরবের তেল ক্ষেত্র বিনষ্ট হলে বেশ কিছুদিন তেলের সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে। সৌদি আরবের দাহরানে আরামকো’র স্থাপনাগুলো হুথিদের হামলার শিকার হচ্ছে ধারাবাহিকভাবে।
রাস তানুরায় সর্বশেষ হামলায় কোনো প্রাহহানির ঘটনা ঘটেনি। রিয়াদ থেকে ১’শ মাইল পূর্বে আবকাইক তেল পরিশোধানাগারেও হামলার ঘটনা ঘটে। এধরনের হামলার ফলে সৌদি আরবের ৫০ শতাংশ তেল উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। সৌদি আরবের জিজান শহরকে লক্ষ্য করে হুথিদের হামলার পর ১০টি ড্রোনকে বাধা দিতে সক্ষম হয় রিয়াদ। গত রোববার সৌদি আরবে ১৪টি ড্রোন ও ৮টি ব্যালাস্টিক মিসাইল হামলার দায় স্বীকার করেছে ইয়েমেনের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ইয়াহিয়া সারিয়ি। সৌদি আরবের তরফ থেকে বলা হচ্ছে এধরনের হামলায় তেল উৎপাদনে জটিল পরিস্থিতি ও সংকট সৃষ্টি হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে তেলে দাম বাড়ছে। সৌদি আরবের তেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে দারহামে আরামকোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসিক কমপ্লেক্সে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর পুরো শহর প্রচণ্ড শব্দে কেঁপে ওঠে।
আপনার মতামত লিখুন :