মো রাফি: [১] সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের আইনজীবী উম্মে শবনম মুস্তারী মৌসুমী। পাশাপাশি ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের আইনজীবী তিনি। অন্য অধিকাংশ নারীর মতো তিনিও পারতেন গৃহিনী হিসেবে পরিবারকে সময় দিতে। কিন্তু শুধু নিজের পায়ে দাঁড়াবেন বলে আইন পেশাকে বেছে নিয়েছিলেন।
[২] ময়মনসিংহের গৌরীপুরের মেয়ে উম্মে শবনম মুস্তারী মৌসুমী। স্বামীর চাকরির সুবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় এসে এখানকার মানুষকে আপন করে নিয়েছেন। তাই পদোন্নতি পেয়ে স্বামী অন্যত্র চলে গেলেও সন্তারদের নিয়ে মৌসুমী রয়ে গেছেন এজেলাতেই। মানুষের বিপদে আপদে হতদরিদ্র ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। বিশেষ করে করোনার মহামারীতে নারী নেতৃত্বে তিনি ছিলেন অগ্রভাগে। তার মানবিক কর্মকাণ্ড সাধারণ মানুষের নজর এড়িয়ে যায়নি। ভিন্ন জেলার মেয়ে হয়েও মানবিক কাজে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
[৩] পিতা-মাতার সরকারি চাকুরী সুবাধে চট্রগ্রামের পাহাড়তলীতে জন্ম উম্মে শবনম মুস্তারী মৌসুমীর। সেখানেই বেড়ে উঠা। তিন বোনের মধ্যে মৌসুমীই সবার বড়। পড়াশোনার শুরু চট্রগ্রামের সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলের মাধ্যমে। মাধ্যমিকে পড়াশোনা শেষে উচ্চ মাধ্যমিকে সেন্ট স্কলাস্টিকা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে ১ম স্থান অর্জন করেন।
[৪] ২০০১সালে চট্রগ্রাম কলেজ থেকে তিনি প্রথম বিভাগে এইচএসসি পাশ করেন। মৌসুমী চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে এলএলবি অনার্স ও এলএলএম অর্জন করেন। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন উম্মে শবনম মুস্তারী মৌসুমী। সেসময় চট্রগ্রামের প্রয়াত মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন তিনি। তৎকালীন সময় চট্রগ্রাম বিশবিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র শিবির ও ছাত্রদলের আধিপত্য ছিল।
[৫] প্রয়াত মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর পরামর্শে ২০০৭ সাল থেকেই চট্রগ্রাম জেলা জজ আদালতে আইন পেশায় প্রেকটিস শুরু করেন তিনি। এবছরই তৎকালীন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (আইসিটি মন্ত্রণালয়ের বর্তমান উপসচিব) মোহাম্মদ শামসুজ্জামানের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ে হওয়ার পরও তিনি বসে থাকেননি। ২০০৮ সালে আইনজীবী হিসেবে চট্রগ্রামের নিম্ন আদালতে সনদ লাভ করেন। ২০০৯ সালে অ্যাডভোকেট মৌসুমী প্রথম ছেলে সন্তানের মা হন।
[৬] কিন্তু দুই বছর যাওয়ার পর বুঝতে পারেন তার ছেলেটির হাইপার অ্যাক্টিভে ভোগছেন। তারপরও তিনি তার কার্যক্রম চালিয়ে গেছেন। মৌসমী চট্রগ্রামে কর আইনজীবী সমিতির সদস্য, জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সদস্য ছিলেন। ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিনি চট্রগ্রাম আদালতে আইন পেশায় নিযুক্ত ছিলেন। এরআগে ২০১৫ সালে মৌসুমী হাইকোর্ট এর হাইকোর্ট ডিভিশনের আইনজীবী হিসেবে সনদ ভুক্ত হন এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সদস্য পদ লাভ করেন। সম্পাদনা:অনন্যা আফরিন
আপনার মতামত লিখুন :