শিরোনাম

প্রকাশিত : ০৬ মার্চ, ২০২১, ০৪:২৩ সকাল
আপডেট : ০৬ মার্চ, ২০২১, ০৪:২৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] তিউনিয়ায় পুলিশের গ্রেফতারি অভিযানেও দমন করা যাচ্ছে না বিক্ষোভ

দেবদুলাল মুন্না: [২] বিক্ষোভকারীদের নির্দিষ্ট এজেন্ডা নেই। দেশটিতে জানুয়ারি থেকে বিক্ষোভ চলছে। সহিংস বিক্ষোভের জেরে এখন পর্যন্ত প্রায় সাত হাজার বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দেশটির গণতান্ত্রিক বিপ্লবের দশম বর্ষপূর্তি ঘিরে এ বিক্ষোভ দেখা দেয়। জানা গেছে এক মেষ পালককে মারধরের ঘটনা এ বিক্ষোভের সূত্রপাত। এ মেষ পালককে মারধরের ঘটনা ঘটে ১৬ জানুয়ারি। খবর, বিবিসি ও পলিটিকো।

[৩] জানুয়ারি ও ফেব্রয়ারি জুড়ে বিক্ষোভকারীরা রাজধানী তিউনিসের কেন্দ্রস্থলে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন শহরেও বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। চলমান বিক্ষোভে তিউনিসিয়ার কর্তৃপক্ষকে সংযম দেখানোর আহŸান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে রাতে তিউনিসিয়ার বিভিন্ন শহরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

[৪] প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, সেনাবাহিনী মোতায়েনের পর সারা দেশের পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ জিকরি বলেন, উত্তরে বিনজার্তে, পূর্বের সুসা এবং কেন্দ্রীয় তিউনিসিয়ায় কাসরিন ও সিলিয়ানায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাহায্যের জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এ দিকে তিউনিসের বুরগুইবা অ্যাভিনিউতে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হয়ে আগের দিন গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তির দাবি জানায়। এ সময় ‘ভয় নয়, রাস্তা জনগণের’ স্লোগান দিতে থাকে তারা।

[৫] বিক্ষোভকারীদের কাছ থেকে কোনো সুনির্দিষ্ট দাবি উপস্থাপন করা হয়নি বা কোনো রাজনৈতিক দলকেও তাদের সমর্থনে দেখা যাচ্ছে না। এই বিক্ষোভ চলমান থাকা বা প্রশমিত হওয়ার কোনো লক্ষণ এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

[৬] তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একজন মেষ পালককে এক পুলিশ কর্মকর্তার তিরস্কার ও নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে এ বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই মেষ পালকের ভেড়া স্থানীয় সরকারি কার্যালয়ের ভেতর ঢুকে পড়েছিল।

[৭] জার্মানীর বন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও অধ্যাপক ড. মারুফ মল্লিক পলিটিকোকে বলেন, বিক্ষোভের কারণগুলো লক্ষ করলে দেখা যাবে, প্রতিটি বিক্ষোভের সঙ্গেই অর্থনৈতিক ইস্যু জড়িত। তিউনিসিয়াতে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি, দুর্নীতি, অনিয়মের প্রতিবাদে বুআজিজি নামের এক ফেরিঅলা গায়ে আগুন দিয়েছিল। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নিয়মকে যদি বদলাতে না পারো, তবে নিজেকেই ক্ষোভের আগুনে পুড়িয়ে দাও।সেই ক্ষোভের আগুনে পুড়ে খাক হয়েছিল অভিমানী আজিজি।

[৮] তিনি মনে করেন,একটি কথা কিছুদিন ধরে বারবারই উচ্চারিত হচ্ছে, নয়া উদারবাদী অর্থনৈতিক কাঠামো আর কাজ করছে না।প্রথমত, সমাজে এখন আয় ও সম্পদের চরম বৈষম্য বিরাজ করছে। জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসুচির হিসাব অনুসারে, ১৯৯০ সালের তুলনায় উন্নয়নশীল ও দরিদ্র দেশগুলোতে বৈষম্য চরম আকার ধারণ করেছে। এই দেশগুলোর সংখ্যাগরিষ্ট জনসাধারণই বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। জাতিসংঘ সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, এই অবস্থা চলতে থাকলে বিশ্বের দশমিক ১ শতাংশ মানুষের আয় মধ্য আয়ের ৪০ শতাংশ মানুষের আয়ের সমান হয়ে যাবে।

[৯] এক দশক আগে দারিদ্র্য, দুর্নীতি ও অবিচারের বিরুদ্ধে বিপ্লবের মাধ্যমে তিউনিসিয়ায় গণতন্ত্রের উত্তরণ হলেও দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা এখনও শোচনীয়। রাষ্ট্রীয় সেবা ব্যবস্থার দুর্গতির সঙ্গে সঙ্গে তিউনিসিয়ার অর্থনীতি মারাত্মক বিপর্যয়ের প্রান্তে রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়