খাদিজা হোসেন লোপা: একটি পত্রিকার বিশেষ পাতায় দুজন কৃষ্ণবর্ণ নারীর ছবি দিয়ে শিরোনাম করেছে ‘কালো, তবুও সুন্দর’। মানে কি ভাই? যার গায়ের রঙ ফর্সা, কেবল সেই সুন্দর! আর যাদের গায়ের রঙ কালো, তাদের সান্তনা দিচ্ছে যে ‘তোমরাও সুন্দর হতে পারো যদি নিজেদের ঠিকভাবে ক্যারি করতে পারো’। মানে যাদের গায়ের রঙ সাদা, তারা সপ্তাহে একদিন গোসল করলে, মুখে দুর্গন্ধ থাকলে, উল্টাপাল্টা কাপড়চোপড় পরলে, মাথায় উকুন থাকলে আর অশুদ্ধ, নোংরা ভাষায় কথা বললেও তারা সুন্দর। কারণ তাদের গায়ের চামড়া সাদা। আর যারা কালো, তাদের সুন্দর লাগার জন্য এসবকিছু মেনে চলতে হবে। নইলে লোকে ফিরেও তাকাবে না, ‘ভালো পাত্র’র সঙ্গে বিয়ে হবে না, তাই না? ছবির দুজনই নারী৷ মানে গায়ের রঙ কালো হওয়া নিয়ে ভাববে নারীরা৷
পুরুষ তো পুরুষই৷ তারা কালো হইলেও কোনো টেনশন নেই। তাই না? এতো গোবর মগজের ভেতরে ঢুকাইসেন কোন দিক দিয়ে ভাইয়া/আপু? ইন্ডিয়াতে একটা সাবানের বিজ্ঞাপন আছে, যেখানে দেখায় কতোগুলো ছোট্ট শিশু পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে চোখ বন্ধ করে একটা সাদা চামড়ার মেয়ের কাছে যায় যে সেই বিশেষ সাবান দিয়ে গোসল করে। সেই মেয়ের চেহারা নাকি তাদের জন্য ‘লাকি’। কারণ সে সুন্দর (পড়ুন সাদা)। কী ভয়ংকর বর্ণবাদ শেখানো হচ্ছে কোমলমতি শিশুদের! যার ত্বক উজ্জ্বল নয়, সে কারও জন্য ‘লাকি ফেস’ হতে পারে না?! সুন্দর বা সৌন্দর্য্যরে সংজ্ঞা কী? কে সুন্দর আর কে অসুন্দর? সৌন্দর্য মাপার কোনো যন্ত্র আছে কি? কোনো বিশেষ নিয়মনীতি আছে, যার সঙ্গে মিললে আপনি কাউকে সুন্দর আর কাউকে অসুন্দর বলতে পারেন? কয়েকদিন পর দুজন মোটা নারী-পুরুষের ছবি দিয়ে হয়তো অন্য কোনো পত্রিকায় এরকম শিরোনাম দেখবো- ‘মোটা, কিন্তু কিউট’। আবার এমনও দেখতে পারি - ‘সাদা, কিন্তু শয়তান’। কোনোকিছুই আর অসম্ভব মনে হচ্ছে না লেখাপড়া জানা মূর্খদের দেশে...। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :