শিরোনাম
◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবো ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না: সুপ্রিমকোর্ট ◈ তীব্র গরমে স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা আরও ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা ◈ সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত ◈ সরকার চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে, পতন অনিবার্য: রিজভী  ◈ সরকারের বিরুদ্ধে অবিরাম নালিশের রাজনীতি করছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের ◈ বুশরা বিবিকে ‘টয়লেট ক্লিনার’ মেশানো খাবার খাওয়ানোর অভিযোগ ইমরানের ◈ গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক

প্রকাশিত : ০২ মার্চ, ২০২১, ১১:৩৯ দুপুর
আপডেট : ০২ মার্চ, ২০২১, ১১:৩৯ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] মরিচ চাষেই যাদের স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা

আনোয়ার হোসেন: [২] গাইবান্ধার বালু চর অধ্যুষিত ভাঙন কবলি উপজেলা ফুলছড়ি। এক সময় চর ও নদী ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষের বেঁচে থাকার জন্য সামন্য বোরে ফসলই ছিল এক মাত্র ভরসা। প্রাকৃতিক সব দূযোর্গ মোকাবেলা করে স্বপ্ন পূরনে পথে হাটছেন তারা। অনেকেই ধরেই নিয়েছিলেন ফুটান্ত বালু কনায় কোন ফসলই ভালো হয় না। চর অঞ্চলের মানুষের চেষ্টা আর চোখের জ্যোতির কোনায় লুকানা স্বপ্ন দিন দিন পূরনে অপেক্ষায়।

[৩] ফুলছড়ি উপজেলার ভৌগলিক এলাকার দুই তৃতীয় অংশই চর। চরে যে কোন দিকেই তাকালে দেখা যায় সমুদ্রের ছোট ছোট ঢেউয়ে মত দুলছে মরিচের গাছ। আর এই সমুদ্রের ঢেউয়ে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। অন্যান্য আবাদের চেয়ে লাভ বেশী হওয়ায় মরিচ চাষে আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। মরিচ বিক্রির বাড়তি অর্থে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনে এসেছে স্বাচ্ছন্দ্য। অনেকেই সংসার খরচ মিটিয়ে সঞ্চয়ও করতে পারছেন।

[৪] ফুলছড়ি উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত চরাঞ্চলীয় ইউনিয়ন ফজলুপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ খাটিয়ামারী গ্রামের কৃষক ছফের আলী এ বছর ৬ বিঘা জমিতে বগুড়ার দেশি জাতের লম্বা মরিচ লাগিয়েছেন। তার ওই ৬ বিঘা জমিতে পরিমাণ মতো গোবর সার ব্যবহার করার ফলে মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। তিনি বলেন, তার ৬ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করতে প্রায় ১ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। ওই ৬ বিঘা জমি থেকে কাঁচা মরিচ উৎপাদন হবে প্রায় ৩'শ থেকে ৩'শ ২৫ মণ।

[৫] বর্তমান বাজারে কাঁচা মরিচের মণ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা দরে। সে হিসেবে কাঁচা মরিচ বিক্রি হবে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা। আবার ওই মরিচেই যদি শুকানো যায় তাহলে ৬০ থেকে ৭০ মণ শুট মরিচ হবে। পুরনো শুকনো মরিচের মন বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রায় ১২ হাজার টাকা। সে হিসাব অনুযায়ী দাম হচ্ছে প্রায় সাড়ে ৮ লাখ টাকা। তবে কাঁচা মরিচ শুকনো করতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয় কৃষকদের। তাই অনেক কৃষক কাঁচা মরিচই বিক্রি করে দিচ্ছেন আর ওই টাকা দিয়ে ভুট্টা ও বোরো ধানের আবাদে খরচ করছেন।

[৬] এদিকে বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, ঢাকা থেকে বিভিন্ন কোম্পানি ও আড়ৎ এর লোকেরা (মরিচের ব্যাপারীরা) চরাঞ্চলে এসে মরিচের ক্ষেত দেখেন। যেসব মরিচ চাষি মরিচের ক্ষেত বিক্রি করতে ইচ্ছুক তাদের আবাদকৃত জমি আগাম কিনে নিচ্ছেন। কিছু দিন পর তাদের লোকজন এসে ক্ষেত থেকে মরিচ তুলে নিয়ে যাবে। শুধু ছফের আলীই নয়, তার মতো একই গ্রামের আরো শতাধিক কৃষক এবার মরিচ চাষ করেছেন। ফুলছড়ি ইউনিয়নের কালুরপাড়া গ্রাামের কৃষক আব্দুল মতিন বলেন, তিনি এবার তিন বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছেন। প্রতি বছর তার উৎপাদিত মরিচ প্রাণ কোম্পানি ক্রয় করে নিয়ে যায়।

[৭] উত্তর অঞ্চলের সবচেয়ে বড় মরিচের হাট গাইবান্ধার ফুলছড়ি। এই হাটটি নদী সংলগ্ন হওয়ায় প্রচুর মরিচের আমদানি হয়। প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার এ হাটে কাঁচা মরিচ কিনতে আসেন নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, ঢাকা, রংপুর,বগুড়া, জয়পুরহাট থেকে মরিচের ব্যাপারীরা। কারণ হিসেবে তারা জানান, ফুলছড়ির চরাঞ্চলের মরিচগুলোর ঝাল বেশি। প্রতি হাটে প্রায় ১৩০ থেকে ১৪০ মণ কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে বলে জানান হাটের ইজারাদার। গজারিয়া ইউনিয়নের কৃষক আবেদ আলী জানান, সার কম ব্যবহার হয় খরচও অনেক কম অথচ লাভজনক এমন ফসল হিসেবে চাষিরা মরিচ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তিনি নিজেও এবার ৪ বিঘা জমিতে মরিচের চাষ করেছেন।

[৮] ফুলছড়ি উপজেলা কৃষি অফিসার ফাতেমা কাওছার মিশু বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার চলতি মৌসুমে ফুলছড়ি উপজেলায় ৭শ ৬০ হেক্টর জমিতে কৃষকরা মরিচের আবাদ করেছেন। মরিচের ফলনও ভালো হয়েছে। কম খরচে বেশি লাভের ফলে চরাঞ্চলের কৃষকেরা দিনদিন মরিচ চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। সম্পাদনা: সাদেক আলী

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়