শিরোনাম
◈ ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবরে বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্ক ◈ বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের বাউন্ডারি ভেঙে বাস ঢু‌কে প্রকৌশলী নিহত ◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ ভেটোর তীব্র নিন্দা,মার্কিন নীতি আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লংঘন : ফিলিস্তিন ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০২ মার্চ, ২০২১, ১১:১৭ দুপুর
আপডেট : ০২ মার্চ, ২০২১, ১১:১৭ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রায় এক কোটি ৮০ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকির তথ্য উদঘাটন, মামলা দায়ের

সুজন কৈরী : মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য খালাসের অভিযোগে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পশ্চিম নাখালপাড়ায় অবস্থিত তানাজ এন্টার প্রাইজ নামক একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকির তথ্য উদঘাটিত হয়েছে।

ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়ায় ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মঙ্গলবার মামলা করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা। তানাজ এন্টার প্রাইজের মূসক নিবন্ধন নং- ০০০০৬০২৭৮-০১০১

ভ্যাট গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ জানায়, একজন গ্রাহক সুনির্দিষ্ট ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ করায় ভ্যাট গোয়েন্দার উপপরিচালক নাজমুন নাহার কায়সারের নেতৃত্বে একটি দল তানাজ এন্টারপ্রাইজে অভিযানটি চালায়।

ভ্যাট গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ জানায়, আমদানিকারক ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইসিডি কাস্টম হাউস দিয়ে ব্যাটারির একটি চালানে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্য খালাস করার বিষয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ভ্যাট গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধান শুরু করে।

ভ্যাট গোয়েন্দার অভিযানকালে ৭৬ পশ্চিম নাখালপারার ৯ তলা ভবনের ৯ম তলায় একটি কক্ষে প্রতিষ্ঠানটির অফিস যা তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। ভবনের সিকিউরিটি গার্ড জানান, প্রতিষ্ঠানটির মালিক একই ভবনের ৭ম তলায় থাকেন। গোয়েন্দা দল ওই ফ্লোরে গিয়ে সরকারি কাজে সহযোগিতার আহ্বান জানালে প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষ সাড়া দেয়নি। পরে ডিএমপি’র তেজগাঁও বিভাগের পুলিশের সহায়তা নেয়া হয়। তেজগাঁও থানা পুলিশের উপস্থিতিতে ৯ম তলায় অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির অফিস কক্ষের তালা ভেঙে প্রবেশ করে ভ্যাট গোয়েন্দার দল। অভিযানকালে প্রতিষ্ঠানের অফিস কক্ষে রাখা বাণিজ্যিক কাগজপত্রাদি জব্দ করা হয়।

ভ্যাট গোয়েন্দা বলছে, স্থানীয় ভ্যাট সার্কেল অফিস ও অন্যান্য সূত্রে প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট সংক্রান্ত দলিলাদি সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব দলিলাদি পর্যালোচনা শেষে ভ্যাট গোয়েন্দার দল ওই আমদানিকারকের বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পেয়েছে।

ভ্যাট গোয়েন্দার তদন্ত অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ উপকরণ-উৎপাদনসহ দাখিল না করে ২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১ বছরে ১ কোটি ৩৫ লাখ ৩৯ হাজার ৯৪৮ টাকা রেয়াত গ্রহণ করে। যা মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৪৬ মোতাবেক অবৈধ।

এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির গত বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে প্রতিষ্ঠানটি ২ কোটি ৬৫ লাখ ৪২ হাজার ৬৬১ টাকার পণ্য সরবরাহ করে। এতে ৩৯ লাখ ৮১ হাজার ৬৬১ ভ্যাট ফাঁকি উৎঘাটন করা হয়। এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাস ভিত্তিক ২ শত্াংশ হারে সুদ ৪ লাখ ৯০ হাজার ২৪৩ টাকা আদায়যোগ্য হয়েছে। তদন্তে অবৈধ রেয়াত বাবদ ১ কোটি ৩৫ লাখ ৩৯ হাজার ৯৪৮ টাকা। এতে ভ্যাট ফাঁকি দেয়া হয়েছে ৩৯ লাখ ৮১ হাজার ৬৬১ টাকা। ফলে প্রযোজ্য সুদ বাবদ হয়েছে প্রায় ৪ লাখ ৯০ হাজার ২৪৩ টাকা। মোট ১ কোটি ৮০ লাখ ১১ হাজার ৫৯০ টাকা ফাঁকি উদঘাটন করা হয়েছে।

ভ্যাট গোয়েন্তা বলছে, ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ আইন অনুসারে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই টাকা আদায়ে আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণের জন্য মামলাটি কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, ঢাকা উত্তরে পাঠানো হবে। মামলাটি ন্যায় নির্ণয়নে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আমদানিকারকের বিরুদ্ধে এই দাবিকৃত টাকার অতিরিক্ত দ্বিগুণ পরিমাণ জরিমানা হতে পারে।

উল্লেখ্য, আমদানিকারক তানাজ এন্টারপ্রাইজ ভ্যাট গোয়েন্দার গত বছরের ৯ অক্টোবর একটি অনুসন্ধানের নোটিশ হাইকোর্টে রিট (নং ৬০২৪/২০২০) দায়ের করে স্থগিত করে। পরে ভ্যাট গোয়েন্দার পক্ষ থেকে চেম্বার জজ আদালতে সিএমপি (নং ৬৬৮/২০২০) দায়ের করে ওই স্থগিতাদেশ স্থগিত করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভ্যাট গোয়েন্দার অভিযানটি পরিচালনা করা হয়।

তদন্তে ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়ায় বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির সামগ্রিক বাণিজ্যিক কার্যক্রম ভ্যাট গোয়েন্দার অডিটের আওতায় আনা হয়েছে। ভ্যাট গোয়েন্দার ধারণা, কাস্টম হাউসে আন্ডার-ইনভয়সের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি পণ্য খালাস করে ভ্যাট কর্তৃপক্ষের কাছে কম মূল্য সংযোজন ঘোষণা করেছে। ফলে সরকার বিপুল পরিমাণ ভ্যাট রাজস্ব হারিয়েছে।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়