শিরোনাম
◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দুঃখজনক: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার বিষয়ে  সরকার অনেক দূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল ◈ জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের কাছাকাছি বাইডেন ◈ আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ ৮ মে

প্রকাশিত : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১১:০৩ দুপুর
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১১:০৩ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আলী রীয়াজ: মুশতাক নেই, কিংবা বলতে পারেন শেষ পর্যন্ত মুশতাক ‘জামিন’ পেয়েছেন, ‘মুক্তি’  পেয়েছেন!

আলী রীয়াজ: কী লিখবেন? কী লিখবো? মুশতাকের নাম লিখবেন? লিখবো মুশতাক আহমেদ নামে একজন লেখক ছিলেন? ‘রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র’-এর অভিযোগ মাথায় নিয়ে কার্যত বিনাবিচারে তাকে মরতে হয়েছে কারাগারের প্রকোষ্ঠে, আদালত তাকে জামিন দেয়নি। কেননা জামিনের ‘যোগ্য’  বলে বিবেচিত হননি, সেই সময়ে অনেকেই জামিন পেয়েছেন। মুশতাকের জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করেছেন রাষ্ট্রের প্রতিনিধি, এটা তো আমরা জানি। রাষ্ট্র চায়নি, কিন্তু রাষ্ট্র তো একটা বায়বীয় বিষয় নয়। কে চায়নি সেটা তো বুঝতে পারি সরকার চায়নি। গত মে মাস থেকে তাকে যে আইনের অধীনে কারাগারে থাকতে হয়েছে, সেই আইনের উদ্দেশ্য বুঝতে যদি এতোদিনেও কারও সংশয় থাকে তবে আরেকবার মনে করুন-এই আইন কাকে নিরাপত্তা দেয় আর কার জীবন ‘নিরাপত্তাহীন’ করে তোলে, কাকে ‘মৃত্যুর দিকে’ ঠেলে দেয়? মুশতাক কীভাবে মারা গেছেন তার চেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, তিনি রাষ্ট্রের হেফাজতে ছিলেন।

তার দায়িত্ব নিয়েছিলো সরকার- এই মৃত্যুর দায়, হত্যার দায় সরকারের। কিন্তু এটা দায়িত্বহীনতার বিষয় নয়, এর মধ্যে একটা বার্তা আছে। আপনি আমি সেই বার্তা পাচ্ছি তো? আপনি-আমি সচেতনভাবে স্বীকার করি না করি আমাদের হাড়ে-মাংসে-মজ্জায়-শিরায় সেই বার্তা পৌছে যায়নি? আমাদের মগজে সেই বার্তা পৌঁছায়নি? এই আইনে আপনি আটক হলেন কিনা, আপনি কারাগারে গেলেন কিনা, আপনি নির্যাতিত হলেন কিনা সেগুলো এখন আর বিষয় নয়। কেননা আপনার/আমার মগজের ভেতরে ভয় তৈরি করে দেওয়া হয়েছে কী লিখবেন, কী লিখবেন না- সেটা রাষ্ট্র আর বলবে না, সরকার আর বলবেনা; বলার দরকার হবে না।

প্রতিটি অক্ষর লেখার সময় আপনি মনে করবেন মুশতাকের কথা- সেটাই রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য, সরকারের উদ্দেশ্য। সহিংসতার উদ্দেশ্য কেবল একজন ব্যক্তিকে হত্যা নয়, অন্যদের জানিয়ে দেওয়া যে এই পরিণতি তারও হতে পারে। এরপরেও যারা বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কল্প-কাহিনি শোনান, তাদের নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথা নেই, কিন্তু যারা এখনও ভাবছেন যে কেবল মানবিকতার আবেদনই যথেষ্ট, তারা বুঝতে অনীহ যে মানবিকতা দিয়ে ক্ষমতার উগ্র আকাক্সক্ষা দমন করা যায় না। মুশতাকের মৃত্যুর পর পোস্ট-মর্টেম হবে কিনা, তা স্বচ্ছ হবে কিনা জানি না, কিন্তু এটা বুঝতে পারি পোস্ট-মর্টেম দরকার আমাদের, চিন্তার, কাজের। বাংলাদেশে অপঘাতে মৃত্যুর ঘটনা স্বাভাবিক, চিন্তার কারণে হত্যা করার ঘটনা বিরল নয়, বিচার বহিভর্‚ত হত্যার ঘটনা ঘটে অহরহ। কিন্তু আইনের মোড়কে ঢাকা হয়েছে মুশতাকের বিচার বহিভর্‚ত হত্যাকে, এটা বোঝা জরুরি। মুশতাক নেই, কিংবা বলতে পারেন শেষ পর্যন্ত মোশতাক ‘জামিন’  পেয়েছেন, ‘মুক্তি’  পেয়েছেন। আপনি কিন্তু জামিন পাননি, আমরা কেউ জামিন পাইনি। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়