রাশিদ রিয়াজ : মার্কিন চেম্বার অব কমার্স চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক হ্রাস ও দুটি দেশই যদি পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ পাল্টাপাল্টি অব্যাহত রাখে তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে তা শত শত বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি বয়ে আনবে। চীনে মার্কিন বিনিয়োগ অর্ধেকে নেমে আসলেও পরিণতি হবে ভয়াবহ। ইউএস চেম্বার অব কমার্স এক জরিপে এধরনের সতর্ক উচ্চারণ করে বলছে চীনে মার্কিন বিনিয়োগ যদি অর্ধেকে নেমে আসে তাহলেও কম করে ক্ষতি হবে ২৫ বিলিয়ন ডলার। একই সঙ্গে মার্কিন বিনিয়োগ কমে যাওয়ার বিষয়টি লুফে নেবে মার্কিন উদ্যোক্তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিরা। এতে যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি’র এককালীন ক্ষতি হবে অন্তত ৫শ বিলিয়ন ডলার। মার্কিন চেম্বার অব কমার্স বলছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের এধরনের বিনিয়োগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি হবে অনেক বেশি ব্যয়বহুল। আরটি
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। তাই একটি দেশ অন্যটির অর্থনীতি থেকে সরে দাঁড়ালে এর ক্ষতি অকল্পনীয়। দুটি দেশ যদি অব্যাহতভাবে একে অপরের পণ্যের ওপর আরো ২৫ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধি করে তাহলে এজন্যে ক্ষতি গুণতে হবে আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে ১৯০ বিলিয়ন ডলার। এখন পর্যন্ত যে পরিমান শুল্ক আরোপ করেছে দুটি দেশ তা সরিয়ে নেওয়া হয়নি। সরকারিভাবে দুই দেশের বিনিয়োগের পরিমান যা দেখানো হচ্ছে বাস্তবে এর পরিমান দ্বিগুণ। ইউএস চেম্বারের সমীক্ষা আরো বলছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কে যেভাবে বাণিজ্য বিমুখ হয়ে উঠছে তাতে দুটি দেশের মানুষের উভয় দেশে যাতায়াতের ওপর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ফেলছে। শিক্ষা ও পর্যটন খাত থেকে আয় হ্রাস পেয়েছে। করোনাভাইরাসের আগের পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রে চীনের পর্যটক ও শিক্ষার্থীরা যে ব্যয় করতেন সে ব্যয়ের অর্ধেক হ্রাস পেলেও বছরে তা হবে ১৫ থেকে ৩০ বিলিয়ন ডলারের সমান। সমীক্ষা প্রতিবেদনে মার্কিন জাতীয় স্বার্থের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ চারটি শিল্পে দুটি দেশের মধ্যে এ বাণিজ্য যুদ্ধের সম্ভাব্য পরিণতির দিকেও আলোকপাত করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিমান শিল্প চীনের বাজার হারালে বছরে লোকসান গুনবে ৩৮ থেকে ৫১ বিলিয়ন ডলার এবং ২০৩৮ সাল পর্যন্ত এ লোকসান দাঁড়াবে ৮৭৫ বিলিয়ন ডলার। চীনের সেমিকণ্ডাক্টর বাজারে যুক্তরাষ্ট্র বাজার হারাবে ৫৪ থেকে ১২৪ বিলিয়ন ডলার। ঝুঁকিতে পড়বে ১ লাখ মার্কিন শ্রমিক। রাসায়নিক শিল্পে একই সংখ্যক মার্কিন শ্রমিক কাজ হারাবে এবং শুল্ক আরোপে ক্ষতি গুণতে হবে ৩৮ বিলিয়ন ডলার। চীনের স্বাস্থ্য সেবা খাতে মার্কিন মেডিকেল ডিভাইস বিক্রি বন্ধ হলে বছরে রাজস্ব হারাতে হবে ২৩.৬ বিলিয়ন ডলার। এক দশকে এ লোকসান পৌঁছাবে ৪৭৯ বিলিয়ন ডলার।
মার্কিন চেম্বার এও বলছে একেবারে মোটামুটি মূল্যায়নের ভিত্তিতেও এ দুটি দেশের বাণিজ্য বিরোধের খেসারত অস্বস্তিকরভাবে বেশি। বরং চীনের সঙ্গে এ বাণিজ্য বিরোধ মিটিয়ে ফেলতে বিকল্প উৎসের সন্ধান করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ইউএস চেম্বার এও বলছে অর্থনৈতিক ব্যয়কে হ্রাস করতে সমমর্যাদার অংশীদারদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত।