এএইচ রাফি: [২] শীত বাড়ার সাথে সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী সরকারি এই হাসপাতালে শিশু বিভাগে ভর্তি থাকা ৬১ রোগীর মধ্যে নিউমোনিয়া আক্রান্ত ৫০জন শিশু।
[৩]হঠাৎ শীত বাড়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি জেনারেল হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে শিশু ও নবজাতক রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণে মেঝেতে দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা।
[৪] জেলার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শীতের প্রকোপ বাড়ার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বিভিন্ন রোগও বেড়ে চলছে।
[৫] সে কারণে শ্বাসকষ্ট, কোল্ড ডায়রিয়া এবং নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় প্রতিদিন অর্ধশতাধিক শিশু ও নবজাতক হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।
[৬] এছাড়া প্রতিদিন হাসপাতালের জরুরী ও বহিঃবিভাগে ৩/৪শত শিশুকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
[৭] সরকারি এই হাসপাতালে অধিকাংশ ওষুধ সরবরাহ থাকলেও নিউমোনিয়ার কার্যকর এন্টিবায়োটিক মেরোপেনাম ইঞ্জেকশন ৫০০মি.লি. বাইরে থেকে ৫০০-৭০০ টাকা কিনে আনতে হচ্ছে শিশুর স্বজনদের।
[৮] অথচ হাসপাতালের কয়েকটি ওয়ার্ডে এই মেরোপেনাম ইঞ্জেকশন থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। গত প্রায় এক বছর যাবত শিশু ওয়ার্ডে মেরোপেনাম ইঞ্জেকশন সরবরাহ করা হয় না। আসন সংখ্যা সীমিত থাকায় দ্বিগুন রোগী ভর্তি হওতায় এই ঠান্ডার রোগ নিয়ে শিশুরা হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালে অক্সিজেনের ঘাটতির কারণে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুরা পর্যাপ্ত অক্সিজেন পাচ্ছে না বলে জানা গেছে।
[৯] হাসপাতালের শিশু বিভাগে কর্তব্যরত নার্স ফেরদৌসী বেগম জানান, তাপমাত্রা কমে ঠান্ডা বেড়ে যাওয়ায় শিশু ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিন নতুন রোগী আসছেন, আবার অনেকে ছাড়পত্র নিয়ে চলে যাচ্ছেন। ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে আসা রোগীদের নিয়মিত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। তবে হাসপাতাল থেকে প্রায় সব ঔষধ দেওয়া হলেও সরবরাহ না থাকায় মেরোপেনাম ইঞ্জেকশন দেওয়া যাচ্ছেনা। সর্বশেষ গত বছরের ফেব্রুয়ারির ৩ তারিখ শিশু ওয়ার্ডে ১০০ পিছ মেরোপেনাম ইঞ্জেকশন সরবরাহ করা হয়েছিল।
[১০] জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এবিএম মোসা জানান, তীব্র ঠান্ডায় শিশু ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে হাসপাতালে আসছে। তাদের চিকিৎসা দিয়ে প্রয়োজন হলে শিশু কনসালটেন্টের কাছে পাঠানো হচ্ছে।
[১১] হাসপাতালের শিশু কনসালটেন্ট আকতার হোসেন জানান, অনেক বাবা-মা নিউমোনিয়া, সর্দি, জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে হাসপাতালে আসছেন।
[১২] প্রতিদিন গড়ে অর্ধশতাধিক শিশু শ্বাসকষ্ট ও ঠান্ডা জনিত সমস্যা নিয়ে শিশু বিভাগে ভর্তি হচ্ছেন। শীত বাড়ায় হাসপাতালের জরুরী বিভাগ ও বহিঃবিভাগসহ ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত ৩শ থেকে ৪শত শিশুকে প্রতিদিন সেবা দেওয়া হচ্ছে ।
[১৩] তিনি বলেন, মেরোপেনাম ইঞ্জেকশন সরবরাহ থাকলে ভাল হতো। জানতে পেরেছি, শিশু ওয়ার্ডে মেরোপেনাম ইঞ্জেকশন নেই। মেরোপেনাম না থাকলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেফট্রিয়াকজন ইঞ্জেকশন কাজ করে।
[১৪] ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক শওকত হোসেন বলেন, হাসপাতালে দ্বিগুন রোগী ভর্তি থাকলেও আমাদের সাধ্য অনুযায়ী শিশুদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। সকল ঔষধ সরবরাহ করা হচ্ছে। মেরোপেনাম আমাদের সাপ্লাই নেই। সাপ্লাই থাকলে তা প্রতিটি ওয়ার্ডে সরবরাহ করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :