ডেস্ক রিপোর্ট : ‘কিসের জন্য ভোট দিবি? ভোট আমার নাগরিক অধিকার। তুই কে? আমি আমার জীবন দিয়েছি আওয়ামী লীগের জন্য। তুই আমাকে জিজ্ঞেস করবি না? তুই আমাকে চিনিস না আমি এই কেন্দ্রের যুগ্ম আহ্বায়ক।’
বুধবার অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএমে) নিজের ভোট নিজে দিতে না পেরে এভাবেই এক ছাত্রলীগ কর্মীর সাঙ্গে তর্ক করছিলেন বাকলিয়া টিচার্স ট্রেনিং কলেজের আওয়ামী লীগের কেন্দ্র ভোট পরিচালনা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. জসীম উদ্দিন।
চসিকের ১৭নং বাকলিয়া ওয়ার্ডের কলেজের প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় আজ সকাল ১০টার দিকে ২নং বুথে এ এই ঘটনা ঘটে।
এ সময় দ্য ডেইলি স্টারের এই প্রতিবেদক সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
নিজের ভোট নিতে দিতে না পেরে তিনি ছাত্রলীগের কর্মীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ালে অন্য স্থানীয় নেতা-কর্মীরা ও এজেন্টরা এসে তাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন।
‘তুই আমাকে জিজ্ঞেস করে ভোট দিবি। তুই কে? বলে তিনি তেড়ে গেলে অন্যরা তাকে ‘চিনতে পারেনি’ বলে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। এ সময় ভোট কক্ষে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে এই প্রতিবেদকে তিনি বলেন, ‘আমি ইভিএমে ভোট দেওয়ার আগেই তারা সেটি চাপ দিয়ে দেয়।’
সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে জসীম পরে এটিকে এড়িয়ে যেতে অনুরোধ করেন।
একই জায়গায় আরেকটি ভবনে নারী ভোট কেন্দ্রে নিজের ভোট নিজে দিতে না পেরে এক নারী ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
ফাতিমা সুলতানা ঝিনু নামের ওই নারী ভোটার অভিযোগ করেন, কার্ড দিয়ে ইভিএমে আঙ্গুলের ছাপ দেওয়ার পর আরেক নারী নৌকা প্রতীকের বোতাম চেপে তার ভোট দিয়ে দেয়। পরে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করতে করতে কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে যান।
বাকলিয়ার ওই কেন্দ্রের বাইরে এবং ভিতরে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর রেজাউলের কার্ড ঝুলিয়ে অনেক নেতা-কর্মীকে ভোট কেন্দ্র ও ভোট কক্ষের ভিতরে এবং বাইরে অহরহ আসা যাওয়া করতে দেখা গেছে। এ সময় পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও তাদের তেমন সক্রিয় দেখা যায়নি।
তবে, কলেজের সব কেন্দ্র ঘুরে বিএনপির কোনো নির্বাচনী এজেন্টকে সেখানে পাওয়া যায়নি। কলেজের একাডেমিক ভবন-২ নারী ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার সঞ্জয় কুমার শীল সকালে বলেছিলেন, সকাল নয়টা পর্যন্ত মোট ভোটের ১০ শতাংশ মত ভোট পড়েছে, যেখানে তার কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা তিন হাজার ছয়শ।
ওই কেন্দ্রে বিএনপি মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন নিজের ভোট দিতে সকাল সোয়া দশটার দিকে উপস্থিত হন এবং ভোট দেন। এ সময় বিএনপির নারী এজেন্ট নাজমা বেগম তার কাছে অভিযোগ করেন, সকাল থেকে তাদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়নি সরকার দলীয় নেতা-কর্মীরা। এমনকি ঢুকতে চাইলে তাদেরকে হকিস্টিক দিয়ে আঘাত করে তাড়িয়ে দেয়।
সূত্র- ডেইলি স্টার
আপনার মতামত লিখুন :