সারোয়ার জাহান: [২] রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তাকে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন প্রদানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে করোনাভাইরাস টিকাদান কর্মসূচি। বিবিসি বাংলা
[৩] বুধবার (২৭ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এই টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। বিকেল চারটার কিছু পর কুর্মিটোলা হাসপাতালের সিনিয়র নার্স মিজ কস্তাকে টিকা প্রদানের মধ্যে দিয়ে কর্মসূচিশুরু হয়।
[৪] এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কস্তার সাথে কুশল বিনিময় করেন। শেখ হাসিনা কস্তাকে জিজ্ঞাসা করেন, `ভয় পাচ্ছ না তো'। জবাবে কস্তা বলেন, 'জ্বি না'।
[৫] পরে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে আরও চারজনকে টিকা প্রদান করা হয়। এদের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা-সহ আরো একজন ডাক্তার, একজন পুলিশ কর্মকর্তা এবং একজন সেনা কর্মকর্তা ছিলেন।
[৬] বাংলাদেশে গত কয়েকদিন ধরে নানা জন নানারকম সংশয়ের কথা জানিয়েছে ভারত থেকে আসা এই করোনাভাইরাস টিকাকে ঘিরে। এমনকি বিরোধী বিএনপির তরফ থেকেও দাবি জানানো হয়েছিল, সংশয় দূর করতে প্রধানমন্ত্রীর উচিৎ প্রথম টিকা নেয়া।
[৭] এসব সংশয়ের প্রেক্ষাপটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগএকটি জরিপ চালায় যেখানে দেখা যায়, বাংলাদেশের ৩২% মোটে মানুষ টিকা কার্যক্রম শুরুর সাথে টিকা নিতে আগ্রহী। ৫২% আগ্রহী, কিন্তু এখনই নয়, তারা দেখে শুনে পরে নিতে চান।
[৮] কিন্তু বুধবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, কোভিশিল্ড নামের যে টিকাটি বাংলাদেশে দেয়া হচ্ছে, 'এ পর্যন্ত এটিই সবচেয়ে নিরাপদ ভ্যাকসিন অন্য সব ভ্যাকসিনের তুলনায়'।
[৯] প্রধানমন্ত্রী টিকা নিয়ে সংশয় ও অনাস্থা প্রকাশকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য হলো কিছু কিছু লোক থাকে যারা সবকিছুতেই নেতিবাচক ধারণা পোষণ করেন। হয়তো মানুষ তাদের কাছে কোন সাহায্য পায় না, কিন্তু কোন কাজ করতে গেলে সেখানে বিরূপ সমালোচনা, মানুষের মধ্যে সন্দেহ ঢোকানো, মানুষকে ভয়ভীতি দেয়া, এ ধরনের কিছু কাজের কারো কারো অভ্যাস আছে। আমি চাই, তারাও সাহস করে আসবেন। আমরা তাদেরকেও ভ্যাকসিন দেব, যাতে তারাও সুরক্ষিত থাকেন। তাদের কিছু হলে আমাদের সমালোচনা করবে কে?
[১০] উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে সব কিছু স্থবির হয়েছিল। আমাদের অর্থনীতিও স্থবির হয়েছিল। সেই অবস্থা থেকে আমরা এগিয়ে গেছি। এক সময় করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কারের কাজ চলছিল। আমরা তখন খোঁজ নিচ্ছিলাম কোথা থেকে দ্রুত করোনার টিকা সংগ্রহ করা যায়। তখন আমরা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার সন্ধান পাই। আমরা বেক্সিমকোকে দ্রুত চুক্তি করতে বলি। টিকার জন্য আমরা এক হাজার কোটি টাকা আলাদা বরাদ্দ রেখেছিলাম। বলেছিলাম, যত টাকা লাগবে দেব। আমাদের দেশের মানুষের সুরক্ষাটাই আমাদের লক্ষ্য।
[১১] প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন করোনা দেখা দিল এমন আতঙ্ক দেখা দিল, মায়ের লাশ পর্যন্ত ধরল না সন্তান, বাবার লাশ ফেলে দিল। তখন স্বাস্থ্যকর্মীসহ কিছু মানুষ এগিয়ে এসেছিল। আজকের দিনে সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই, মানুষের জন্য মানুষ এই ভেবে তারা কাজ করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, টিকা আনার জন্য আমরা যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করেছিলাম, আজকে যাত্রা শুরু করেছি। এনটিভি
আপনার মতামত লিখুন :