শাহীন খন্দকার:[২] তিনি আরও বলেন,জাতীয় চিড়িয়াখানাকে ৫টি জুনে বিভক্ত করার পরিকল্পনার কাজ ২০২১ সালের মধ্যেই শেষ হবে। কিউরেটর ডা.মো.আব্দুল লতিফ বলেন ১৮৬ একর সম্পত্তি নিয়ে ১৯৭৪ সালে ২৩ জুন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে দর্শনার্থীদের জন্য দুটি লেকসহ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
[৩] কিউরেটর বলেন,বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনায় আর্ন্তজাতিক মানের এই চিড়িয়াখানা নতুন প্রজন্মকে উপহার দেওয়ার জন্য,তা বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে চিড়িয়াখানা কতৃপক্ষ সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে মাষ্টার প্লানের কাজ করছে। যা চলতি বছর জুনের মধ্যে শেষ হবে বলে জানালেন তিনি।
[৪] আর্ন্তজাতিক খ্যাতি সম্পন্ন সিঙ্গাপুর ভিত্তিক সংস্থা বার্নাড হেরিসন এন্ড ফ্রেন্ডস লিমিটেড মাষ্টার প্লান্ডের পরিকল্পনায় কাজটি সম্পন্ন করা হচ্ছে। মাষ্টার প্লান্ডের র মধ্যে রয়েছে চিড়িয়াখানাকে পাঁচটি জুনে বিভাক্ত করে ঢেলে সাঝানো। (১) যার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য বাংলাদেশ হ্যাবিটেড অর্থাৎ বাংলাদেশের সুন্দরবন কেন্দ্রিক যতো প্রাণী রয়েছে তার সঙ্গে দেশ-বিদেশী দর্শনার্থীদে পরিচয় করিয়ে দেওয়া।
[৫] (২) আফ্রিকান হ্যাবিটেড অর্থাৎ আফ্রিকান অঞ্চলের প্রাণীদের নিয়ে একটি জোন। (৩) ট্রপিকেল জোন অর্থাৎ উষ্ণ মরুভ‚মি অঞ্চলের প্রাণীদের নিয়ে একটি জোন। (৪) পিটএনিমেল এন্ড অ্যাকটিভ জোন যেখানে থাকবে গৃহপালিত পোষা, পশু-প্রাণীদের নিয়ে একটি জোন।
[৫] সাফারি জোন নিশাচর রাতের পশু পাখীদের নিয়ে একটি জোন। লেক দুটোতে ভাসমান রেস্তোরাসহ ডলফিন শো-সহ নানা প্রজাতির মাছ এবং পাখীদের নানা কশরত। দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্যে হাতির ফুটবল খেলাসহ পাখীদের নানা খেলা যা শিশুদের বিনোদন দিবে।
[৬] সেই সঙ্গে লেকের ওপর দীর্ঘতম রোপ-ওয়ে চালু করা পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া থাকছে প্রতিবন্ধিসহ বৃদ্ধদের জন্য ট্রাভেলকার। যদিও প্রতিবন্ধিদের জন্য চালু রয়েছে হুইল চেয়ার। ডা. আব্দুল লতিফ জানালেন ইতিমধ্যে শিশুদের জন্য নতুন দুটি ইলেকট্রনিক্স রাইট সংযোগ হয়েছে। রাইট দুটো হচ্ছে ট্রেন ও মেরিগো রাউন্ড। প্রশ্নের জবাবে আরও বলেন, করোনাকালীন সময়ে কোন প্রাণীর মৃত্যু ঘটেনি।
[৭] প্রাণীদের খাদ্য চাহিদাসহ অন্যান্য চাহিদা মাফিক প্রয়োজনীয় বরাদ্ধ সরকার দিচ্ছেন। মাংসভ‚জি প্রাণীদের জন্য প্রতিদিন সকালে একটি করে ষাড় গরু জবাই করার পূর্বেই একজন পশু চিকিৎসকের মাধ্যমে তার স্বাস্থ্যের পরীক্ষা করার পরেই জবাই করা মংস প্রাণীদের খাদ্য দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, এটি একটি সরকারের লাভজনক প্রতিষ্ঠান। অপর এক প্রশ্নের জবাবে জানান, গত বছর নভেম্বরের আগেই চিড়িয়াখানার যাবতীয় সংস্কার করেছি। হকারমুক্ত ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন [৭] রাখার চেষ্টা করছি। নভেম্বর থেকেই দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। চিড়িয়াখানা সকাল ৮ থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে এবং প্রতি রোববার সাপ্তাহিক বন্ধ থাকে এবং প্রতি মাসের প্রথম রোববার জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিক উপলক্ষে মৎস ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে সর্বশ্রেনীর দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকে।
[৮] চিড়িখানায় ১৩৯ প্রজাতির ২ হাজার ৭৯২ প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ হাজার দর্শনার্থী আসছে। তবে করোনার পূর্বে ২০ থেকে ৩০ হাজার দর্শনার্থী আসতেন। এছাড়াও বিভিন্ন উৎসবে ঈদ পুজোঁতে ৫০ হাজার ছাড়িয়ে যেতো।
[৯] হকারমুক্ত পরিচ্ছন্ন চিড়িয়াখানা দেখে সন্তুষ্টি জানালেন, সিলেট থেকে আগত দর্শনার্থী তাবাসুম। তিনি বলেন, আমি প্রতিবছরই ঢাকায় অফিসের কাজে আসলেই সন্তানদের নিয়ে আসা হয়। তাদের দেশী-বিদেশী প্রাণীদের সাথে পরিচয় করে দেওয়াসহ মেধাবিকাশের লক্ষ্যে। তবে অন্যান্য বছরের চেয়ে এবছর অনেক নিরাপদ মনে হচ্ছে বলে জানালেন তিনি। হকারদের যন্ত্রণা নেই চিড়িয়াখানার ভিতরে ক্যাণ্টিনের ব্যাবস্থা রয়েছে বলে জানালেন তিনি।