শিরোনাম
◈ চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১২ ইউনিট ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২৭ জানুয়ারী, ২০২১, ১১:৪১ দুপুর
আপডেট : ২৭ জানুয়ারী, ২০২১, ১১:৪১ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ঘুমন্ত ঢাকায় নির্মমতার ক্ষত, রাত নামতেই বাড়ে অপরাধীদের তৎপরতা

ডেস্ক রিপোর্ট: গত শনিবার রাত ৯টা হাইকোর্ট মাজার এলাকা। ডিস ব্যবসায়ী হামিদুল ইসলাম (৫৭) কর্মচারী সাদিক মিয়াকে নিয়ে জামালের দোকানে চা-পান করেন। কিন্তু সাদেকের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সেগুনবাগিচায় নিজ বাসায় যাওয়ার পথেই বাজে বিপত্তি। হাইকোর্টের সামনে আসতেই তাকে ঘিরে ধরে ৩/৪ জন ছিনতাকারী। একপর্যায়ে টাকার জন্য বাম হাত এবং উরুতে করে ছুরিকাঘাত। পরের দিন হতভাগ্য হামিদুলের লাশ ঢামেক হাসপাতাল মর্গে শনাক্ত করে তার পরিবারের সদস্যরা। অপরদিকে, গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কেও ছিনতাইকারীদের নির্মমতার শিকার হন সবজি ব্যবসায়ী আপন মিয়া। ছিনতাইয়ের পরে রাস্তায় ফেলে দিলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। গুরুতর আহত হন সাথে থাকা আরেক ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম।

রাজধানীতে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হরহামেশাই ঘটছে এরকম নানা ঘটনা। রাতে ঝিমিয়ে থাকা রাজধানীতে সজাগ হয়ে ওঠে অপরাধীরা। বেড়ে যায় অপরাধীদের উৎপাত। সাধারণত, জরুরি না হলে মানুষ গভীর রাতে বের হন না। হাসপাতালে রোগী আছে অথবা এ ধরনের জরুরি কারণেই রাতে বাধ্য হয়েই বের হন রাজধানীর মানুষ। ফলে বিপদে পড়ে রাতে বের হওয়া মানুষজনই ডাকাত ও ছিনতাইকারীদের সহজ শিকারে পরিণত হচ্ছেন।

এদিকে, সবজি ব্যবসায়ী আপন মিয়ার হত্যাকান্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গত ৬ জানুয়ারি তদন্তে নামেন গোয়েন্দারা। তদন্তে বেরিয়ে আসে ভয়ঙ্কর সব তথ্য। ভাড়া গাড়িতে ছদ্মবেশে রাতে ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবীদের ফাঁদে ফেলে সর্বস্ব কেড়ে নিচ্ছে ডাকাতরা। বিমানবন্দর এলাকার ঘটনায় সরাসরি জড়িত ৪ জন এবং একই চক্রের আরও দুজনসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগ। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়, নগদ টাকা, চাকু ও মোবাইল ফোন।

গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশের পর, ডাকাতির শিকার আরও অনেকেই যোগাযোগ করছেন গোয়েন্দাদের সাথে। তাদেরই একজন ব্যাংক কর্মকর্তা শওকত বিন কাশেম। গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর রাতে খিলক্ষেত থেকে তাকে মিনি ট্রাকে ওঠায় একই চক্রটি। কেড়ে নেয় সর্বস্ব। তবে, ৩০০ ফুট এলাকায় লাফিয়ে প্রাণে বাঁচেন তিনি।

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, রাজধানীতে কোনো অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পর জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হচ্ছে। কখনো কখনো ঢাকার বাইরে থেকে অপরাধীরা ঢাকায় এসে অপরাধ করে আবার চলে যায়। সে ক্ষেত্রে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কিছুটা সময় লেগে যায়। রাতের বেলায় টহল পুলিশ কাজ করলেও অপরাধীরা ছিনতাই, ডাকাতি ও অপহরণসহ নানা অপরাধ করছে। সে ক্ষেত্রে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। রাজধানীতে নানা প্রয়োজনে রাতের বেলায় যারা বের হন তাদের সর্তক থাকার আহ্বান জানান তিনি।

মালিবাগের বাসিন্দা পেশায় রিকশাচালক আমির হোসেন বলেন, রাতে গাড়িঘোড়া কম থাকে। এসময় রিকশা নিয়ে বের হলে বেশ ভালো পয়সা পাওয়া যায়। বিশ টাকার ভাড়া একশ টাকায়ও যায় মানুষ।

রাতের রাজধানীর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে তিনি বলেন, অনেক সময় সারারাত রিকশা চালিয়ে যা কামাই, ভোর রাতে দুই-তিনজন এসে ছোঁ মেরে সব নিয়ে যায়। মাসে দু-চার দিন এমন ঘটনা সব রিকশাচালকদেরই ঘটে। তবে যাত্রীদের সর্বস্ব লুট করার ঘটনা বেশি ঘটে। ছিনতাকারী বা ডাকাত দল যাত্রীদের সঙ্গে টাকা-পয়সা, মালপত্র যা পায় তা তো নেয়ই, আবার যাদের সঙ্গে এটিএম কার্ড, ভিসা কার্ড থাকে, তাদের বুথে নিয়েও টাকা বের করে নেয়। মালিবাগ,যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, দয়াগঞ্জ এবং শনিরআখড়া, রায়েরবাগ এ এলাকাগুলোতে প্রতিদিনই কোনো না কোনো ছিনতাই, ডাকাতির ঘটনা ঘটে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ডিএমপির মাঠ পর্যায়ের বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, রাতে আমরাই মাঠ পর্যায়ে কাজ করি। আমাদের অভিজ্ঞতায় যেটা দেখা গেছে, যেখানে আমাদের অবস্থান থাকে, অপরাধীরা এর চেয়ে একটু নিরাপদ দূরত্বে অপরাধ সংঘটিত করে। পুলিশ ওই জায়গায় পৌঁছতেই ছিনতাইকারী পালিয়ে যায়। এক্ষেত্রে আমরাও নানা কৌশল অবলম্বন করি। যেমন ধরেন, একই জায়গায় বেশিক্ষণ অবস্থান না করে টহলের মধ্যে থাকি। এ ছাড়া আরও কিছু টেকনিক অবলম্বন করে অপরাধীদের আটক করি। তারপরও মাঝেমধ্যে দু’একটি দুর্ঘটনা ঘটে যায়। সূত্র: দৈনিক ইনকিলাব

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়