সুজন কৈরী : ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে রাজধানীর মিরপুরের শেওয়াপাড়ায় দুজন ফার্নিচার ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে পৃথক মামলা করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর। প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করেছিলো বলে অভিযোগ ভ্যাট গোয়েন্দার। প্রতিষ্ঠান দুটি হচ্ছে- জৈনপুর ফার্নিচার ও হোমউড ফার্নিচার।
ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর জানায়, একজন গ্রাহকের অভিযোগের ভিত্তিতে সংস্থার সহকারী পরিচালক মাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি দল গত ২৮ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানগুলোতে আকস্মিক অভিযান চালায়। অভিযানকালে গোয়েন্দা দল দেখতে পান, প্রতিষ্ঠানগুলো নিবন্ধিত হলেও যথাযথ ভ্যাট চালান প্রদান করে না। গোয়েন্দা দল প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রাঙ্গন থেকে গোয়েন্দা দল বাণিজ্যিক কাগজপত্র জব্দ করে। দীর্ঘ তদন্ত শেষে গোয়েন্দা দল জব্দকৃত কাগজপত্র তাদের রিটার্নের সাথে যাচাই করে দেখতে পায়, তারা প্রকৃত বিক্রয় হিসাব গোপন করে কম মূল্য প্রদর্শন করে ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে আসছে।
ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর আরও জানায়, জৈনপুর ফার্নিচার মার্চ ২০১৮ থেকে মার্চ ২০২০ পর্যন্ত দুই বছরে ভ্যাট দিয়েছে মাত্র ৫৩ হাজার টাকা।এই হিসেবে জৈনপুর ফার্নিচার মাসিক ভ্যাট দেয় মাত্র ২ হাজার টাকা। কিন্তু ওই সময় জব্দকৃত বিক্রি গোপন করেছে ৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এতে ভ্যাট আরোপযোগ্য হয়েছে ৫৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। সময়মতো সরকারি কোষাগারে ভ্যাট জমা না দেওয়ায় ওই টাকার উপর মাসে ২ শতাংশ হারে ২৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা সুদসহ মোট ৮১ লাখ ৬৩ হাজার টাকা আদায়যোগ্য।
অপরদিকে হোমউড ফার্নিচার গত বছরের আগষ্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চার মাসে ভ্যাট দিয়েছে মাত্র ৩২ হাজার টাকা। এই হিসেবে মাসিক ভ্যাট দিয়েছে মাত্র ৮ হাজার টাকা। কিন্তু ওই সময়ে জব্দকৃত বিক্রি গোপন করেছে ৭৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। এতে ভ্যাট ১১ লাখ ৬০ হাজার টাকা আদায়যোগ্য।
দুটি প্রতিষ্ঠান মোট বিক্রি গোপন করেছে ৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এতে ভ্যাট আদায়যোগ্য ৬৮ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। সময়মতো সরকারি কোষাগারে ভ্যাট জমা না দেওয়ায় ওই টাকার উপর মাসে ২ শতাংশ হারে ২৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা সুদ টাকা আদায়যোগ্য। ওই মোতাবেক প্রতিষ্ঠান দুটি মোট ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে ৯৩ লাখ ৪৭ হাজার টাকা।
ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরের ডিজি ড. মঈনুল খান বলেন, ভ্যাট ফাঁকির দায়ে সোমবার প্রতিষ্ঠান দুটির বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। চূড়ান্ত বিচারাদেশের জন্য সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেট (ঢাকা পশ্চিম) মামলা দুটি পাঠানো হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের কার্যক্রম নিবিড়ভাবে মনিটর করার জন্য ঢাকা পশ্চিম ভ্যাট কমিশনারকে অনুরোধ করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :