শিরোনাম
◈ গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল ◈ পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার ২৭ বস্তা টাকা, গণনা চলছে ◈ তীব্র তাপপ্রবাহ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আরও ৭ দিন বন্ধের দাবি ◈ সাতক্ষীরায় এমপি দোলনের গাড়িতে হামলা ◈ চুয়াডাঙ্গার পরিস্থিতি এখন মরুভূমির মতো, তাপমাত্রা ৪১ দশমিক  ৫ ডিগ্রি ◈ ফরিদপুরে পঞ্চপল্লীতে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১ ◈ মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক

প্রকাশিত : ২৫ জানুয়ারী, ২০২১, ১১:০৭ দুপুর
আপডেট : ২৫ জানুয়ারী, ২০২১, ১১:০৭ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

একজন জজ মিয়া: জাদরেল এমপি থেকে দুস্থদের ঘরে (ভিডিও)

ডেস্ক নিউজ: একসময় ছিলেন সেনা কর্মকর্তা, সেখান থেকে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের দুইবারের এমপি। ছিল প্রভাব-প্রতিপত্তি ও অঢেল সম্পত্তি। কিন্তু সাবেক দুই স্ত্রী ও তিন মেয়েকে সহায়-সম্পত্তি লিখে দিয়ে তিনি এখন নিঃস্ব। তারা কেউ খোঁজ না নেওয়ায় তৃতীয় স্ত্রী ও এক শিশু সন্তান নিয়ে এখন তিনি মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ভাড়া বাসায় ছোট্ট একটি কক্ষে থাকছেন, কোন রকমে খেয়ে না খেয়ে কাটছে জীবন।

বলা হচ্ছে গফরগাঁও উপজেলার সাবেক এমপি এনামুল হক জজ মিয়ার দুরবস্থার কথা। তার এমন অবস্থার কথা জেনেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল। ফলশ্রুতিতে এবার তার হাতে উঠেছে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের জমি ও ঘরের চাবি। গেল শনিবার (২৩ জানুয়ারি) উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠানিকভাবে এসবের দলিলপত্র তার হাতে তুলে দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে অনুভূতি জানতে রোববার বিকেলে (২৪ জানুয়ারি) গফরগাঁও পৌর এলাকায় তার সেই ভাড়া বাসায় গেলে কথা হয় জজ মিয়ার সঙ্গে। এমন উদ্যোগে তিনি কথার শুরুতেই প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বলেন, যাক এখন আমার একটা জায়গা হল। মাথাগোঁজার ঠাই হল।

জজ মিয়ার সাথে আলাপচারিতায় আরও উঠে এসেছে তার সংসদ সদস্য থাকাকালীন অতীত সময়ের কথা। যেসময়ে তার হুংকার গফরগাঁওয়ে বাঘে-মহিষে এক ঘাটে পানি খেত। বললেন, দাপুটে এমপি ছিলাম, কোনদিন মানুষকে মিথ্যা আশ্বাস দিতাম না। আমি হাজার হাজার লোককে চাকরি দিয়েছি। গফরগাঁওয়ের উন্নয়নে কাজ করেছি। কোনদিন টাকার লোভ করিনি। কেউ অপরাধ করে আমার কাছ থেকে পার পায়নি।

একটা সময় ভালোবেসে যাদের নামে জমিজমা-সহায়সম্বল সব লিখে দিয়েছিলেন তারাই এখন তাকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে রাস্তায়। এক রুমের ভাড়া বাসায় শেষ জীবনে সঙ্গী তৃতীয় স্ত্রী ও এক ছেল। খাট কেনার সামর্থ নেই, বৃদ্ধ বয়সে থাকতে হয় মাটিতেই। হাত পেতে যা মিলে তা দিয়েই চলে সংসার।

জীবনের এমন কঠিন পরিণতির জন্য নিজের সরলতাকেই দায়ি করলেন জজ মিয়া। বলেন, এমন পরিণতি হবে তা কোনদিন ভাবতে পারিনি। যাদের সব দিয়েছি তারাই এখন আমাকে বঞ্চিত করেছে।

জীবন সায়াহ্নে এসে আট বছরের ছেলের ভবিষ্যতের চিন্তা করে একসময় হেলায় না নেওয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ এখন চাচ্ছেন জজ মিয়া।

তিনি বলেন, ঝুঁকি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছি। কয়েকবার মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে এসেছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা সনদটা আমি পাইনি। অনেকের কাছে ধর্না দিলেও মেলেনি সেই সনদ। যদি সনদটি পেতাম তাহলে আমার সন্তানটাকে লেখাপড়া করিয়ে মানুষ করতে পারতাম।

এনামুল হক জজের ব্যাপারে গফরগাঁও পৌরসভার মেয়র এস. এম ইকবাল হোসেন সুমন বলেন, তার দুরাবস্থার কথা জানতে পেরে ব্যক্তিগতভাবে তাকে সহযোগিতা করি এবং উনার ব্যাপারটা এমপি মহোদয়কে অবগত করি। পরে তিনি প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় তাকে জমি ও ঘর দিয়েছেন।

জানা গেছে, জাতীয় পার্টির সাবেক চেয়ারম্যান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করেন এনামুল হক ওরফে জজ মিয়াকে। তার শাসনামলে ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসন থেকে দু’বার সংসদ সদস্য হন জজ। বিয়ে করেছিলেন হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের পালিত মেয়ে নাজুকে।

রাজনীতিতে শক্তপোক্ত হলেও তার বক্তিজীবন মোটেও গোছানো ছিল না। একসময় প্রথম স্ত্রী-সন্তান তার কাছ থেকে সহায়-সম্পত্তি লিখিয়ে নিয়ে এক মেয়েকে নিয়ে চলে যান আমেরিকায়। এরপর দ্বিতীয় স্ত্রী নাছিমা হকের সাথেও হয় তার বিবাহবিচ্ছেদ। ঢাকার পুরানা পল্টন ও মিরপুর কাজী পাড়ায় তার বিশাল দুটি বাড়ি দ্বিতীয় ঘরের দুই সন্তানকে লিখে দেন। স্থানীয়ভাবে যা ছিল তাও বিক্রি করে দেন তিনি আস্তে আস্তে। সবশেষে ১২ শতাংশ জমি একটি মসজিদের নামে লিখে দিয়ে নিঃস্ব হন তিনি। এখন তিনি তৃতীয় স্ত্রী রুমা ও ৮ বছরের সন্তান নুরে এলাহীকে নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন এরশাদ শাসনামলের দাপুটে এ সংসদ সদস্য। সূত্র: বার্তা নিউজ ২৪

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়