শিরোনাম
◈ গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল ◈ পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার ২৭ বস্তা টাকা, গণনা চলছে ◈ তীব্র তাপপ্রবাহ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আরও ৭ দিন বন্ধের দাবি ◈ সাতক্ষীরায় এমপি দোলনের গাড়িতে হামলা ◈ চুয়াডাঙ্গার পরিস্থিতি এখন মরুভূমির মতো, তাপমাত্রা ৪১ দশমিক  ৫ ডিগ্রি ◈ ফরিদপুরে পঞ্চপল্লীতে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১ ◈ মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক

প্রকাশিত : ২৫ জানুয়ারী, ২০২১, ০৮:২৬ সকাল
আপডেট : ২৫ জানুয়ারী, ২০২১, ০৮:২৬ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সমস্যা শিক্ষক রাজনীতিতে, বললেন বিশিষ্ট শিক্ষকরা

নিউজ ডেস্ক: শিক্ষাঙ্গনে বড় সমস্যা শিক্ষকদের অতিরিক্ত রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়া। বিশেষ করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক এখন সরাসরি রাজনৈতিক দলের সদস্য। অনেকে রয়েছেন জেলা ও উপজেলা কমিটিতেও। তারা শিক্ষকতার চেয়ে বেশি সময় দেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে। আবার কেউ কেউ আওয়ামী লীগ-বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের চেয়েও বেশি দলীয় অবস্থান প্রদর্শনে ব্যস্ত। সিনিয়র শিক্ষকরা মনে করেন, রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা অতীতেও শিক্ষকদের ছিল। কিন্তু এখনকার মতো ভয়াবহ অবস্থা অতীতে কখনো হয়নি। তাই এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে এখনই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। দেশ ও মানুষের প্রশ্নে শিক্ষক রাজনীতি অবশ্যই থাকবে কিন্তু দলবাজিতে বেশি যুক্ত হলে সমস্যা হয়। সম্মানজনকভাবে সবকিছুতে কাজ করা দরকার বলে মনে করেন অনেক প্রবীণ শিক্ষক। সার্বিক অবস্থা নিয়ে কথা বলেছেন বিশিষ্ট শিক্ষকরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেছেন, আমাদের দেশে সমস্যা হয়ে গেছে, এখন রাজনীতি বলতে কিছু নেই। রাজনীতির নামে চলছে অপরাজনীতি। যে কারণে রাজনীতি করার জন্য শুধু লবিং, গ্রুপিং নয়, টাকা পয়সা পর্যন্ত লেনদেন হয়। এখন রাজনীতি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জায়গায় নেই। রাজনীতিতে আদর্শ অনেক দূরে সরে গেছে। এখন শিক্ষকদের এই বাস্তবতা মেনে নিয়ে দায়িত্বশীলতার আচরণ করতে হবে। আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক আরও বলেন, অতীতে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ছাত্র-শিক্ষকরাও ছিলেন। তারাই আমাদের অনুপ্রাণিত করেছেন। সেই আদর্শকে সামনে রেখেই আমরা এগিয়েছি। কিন্তু সময়ের পরিবর্তন হয়ে গেছে। অন্য দশজন পেশাজীবী যেভাবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন শিক্ষকরাও সেভাবে রাজনীতি করছেন। এটা দুঃখজনক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেছেন, শিক্ষকতা ছাড়া রাজনৈতিক দল কিংবা অন্য কোনো পদের প্রতি মোহ থাকা শিক্ষকদের জন্য উচিত নয়। তবে সচেতন নাগরিক হিসেবে প্রত্যেকেরই ব্যক্তি স্বাধীনতা থাকতেই পারে। কিন্তু শিক্ষক হিসেবে যখন আপনি থাকবেন, তখন এটাকেই বড় করে দেখতে হবে। তিনি আরও বলেন, একজন আদর্শিক শিক্ষকের সঙ্গে শিক্ষকতা ছাড়া কোনো লবিং, গ্রুপিং যায় না। যখন কোনো একটি পদের জন্য একজন শিক্ষক লবিং করবেন তখন এটা তার অযোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে। তিনি কোনো পদের জন্য যোগ্য নন। এমনকি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ পাওয়ার জন্য কোনো লবিং করা উচিত নয়। এটা অন্যরকম বার্তা দেয়। আদর্শবান শিক্ষকের জন্য এটা গ্রহণযোগ্য নয়। এটাকে নেতিবাচকভাবেই দেখা উচিত।

শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ফায়েজ বলেন, দেশে এমন অনেক শিক্ষক আছেন, কোনো রাজনীতির সঙ্গেই যুক্ত নন। আবার অনেকেই আছেন রাজনীতি করছেন। এটা ব্যক্তি স্বাধীনতার ওপর নির্ভর করে। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে তার চিন্তা-চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটতেই পারে। এটাকে আটকে ফেলা কঠিন কাজ। তবে মনে রাখতে হবে, আমি শিক্ষক, আমি শিক্ষক, আমি শিক্ষক। এরপর অন্য কিছু। একজন শিক্ষককে অবশ্যই সচেতন ও সতর্ক থাকতে হবে। নিরপেক্ষতার জায়গা থেকে ছাত্রদের পাঠদান করতে হবে। ছাত্রদের পড়াশোনা করানো বা প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে নিজের রাজনীতি যেন চাপিয়ে দেওয়া না হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও সাবেক ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী বলেছেন, শিক্ষকরা রাজনীতি সচেতন হবেন। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করতে পারেন। কিন্তু দলীয় লেজুড়বৃত্তি শিক্ষকদের মানায় না। শিক্ষকদের প্রধান কাজ পাঠদান, গবেষণা। দলীয় কার্যক্রম প্রদর্শনের চেয়ে দেশের শিক্ষার মানোন্নয়নে নজর দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, শিক্ষকরা কতটুকু যাবেন সেটা তাদের বিবেক থেকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তার মুখ্য কাজ শিক্ষা ও গবেষণা। তার প্রাসঙ্গিক বিষয় হলো, সামাজিক দায়িত্ববোধ, গণতন্ত্র। এসবের আলোকে তিনি রাজনীতি করতে পারেন। কিন্তু তার বাইরে গিয়ে পার্টির কার্ড হোল্ডারদের মতো কাজ করলে তা এই পেশার সঙ্গে খাপ খায় না। পাঠদান, গবেষণা বাদ দিয়ে পার্টি, দলীয় অবস্থান প্রদর্শনে ব্যস্ত থাকলে চলবে না। পদ-পদবি পেতে নিজের পেশার সম্মান বিকিয়ে দেওয়া কোনো শিক্ষকের কাছে সমাজ প্রত্যাশা করে না। সমাজ এবং দেশ এ ধরনের আচরণকে ভালোভাবে দেখে না। সূত্র বাংলাদেশ প্রতিদিন

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়