অনলাইন ডেস্ক: নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে বেড়ে উঠেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় টেলিভিশন টকশো উপস্থাপক ল্যারি কিং। নিউইয়র্কের মানুষ কিংবদন্তি এই সাংবাদিককে সব সময় নিজের ঘরের সন্তান হিসেবেই মনে করে। আর তাই ব্রুকলিনে তাঁর বেড়ে ওঠা বাড়িটিকে ঐতিহ্যের স্থাপনা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এমন উদ্যোগ আগেও একবার নেওয়া হয়েছিল। ২৩ জানুয়ারি ল্যারি কিংয়ের মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে নিউইয়র্কে শোকের ছায়া নেমে আসে।
বিশ্বখ্যাত উপস্থাপক ল্যারি কিংয়ের বাল্যকাল ও শৈশব কেটেছে ব্রুকলিনের ব্যানসনহার্স্ট এলাকায়। নিউইয়র্ক নগরের ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর বাড়িটিকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ল্যারি কিংয়ের জীবিত থাকা অবস্থায় একবার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
ডেমোক্রেটিক দলের ব্রুকলিন বরোর প্রেসিডেন্ট এরিখ অ্যাডাম বলেন, ল্যারি কিংয়ের বাড়িটিকে ঐতিহ্যের স্থাপনা হিসেবে ল্যান্ডমার্ক কমিশন আগে অনুমোদন না দেওয়াটা দুঃখজনক। হয়তো তখন ল্যারি কিং জীবিত ছিলেন বলে এমনটি করা হয়েছিল।
এরিখ অ্যাডাম বলেন, এখন আর ল্যারি জ্যীবিত নন। নতুন করে তাঁর বাল্যকালের বাড়িকে ঐতিহ্যের স্থাপনা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আবেদন জানানো হবে।
ইউরোপ থেকে আসা অভিবাসীর সন্তান ছিলেন ল্যারি কিং। তাঁর বাল্যকালের বাড়িতে এখন অন্য মানুষের বসবাস।
এরিখ অ্যাডাম বলেন, বর্তমান বাসিন্দাদের সম্মতিতেই এই বাড়িটিকে ঐতিহ্যের স্থাপনা হিসেবে ঘোষণা করা হবে। নিউইয়র্কে আসা পর্যটকেরা ব্রুকলিনের এক সন্তানের সাফল্যের উত্থান সম্পর্কে জানতে পারবে। বিশেষ ধরনের পোশাক পরে সাবলীলভাবে অগুনতি মানুষের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ল্যারি কিং।
এরিখ অ্যাডাম বলেন, এসব সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে মার্কিন জনগণকে নানাভাবে তথ্য দিয়ে প্রভাবিত করে গেছেন ল্যারি কিং।
নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো ল্যারি কিংয়ের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে বলেছেন, ব্রুকলিনে বড় হওয়া বালক ল্যারি কিং নিউজ মেকারদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে সাংবাদিক হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। পেশাগত জীবনে ৫০ হাজারের বেশি বিখ্যাত মানুষের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন তিনি।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে লস অ্যাঞ্জেলেসের সিডারস-সিনাই মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। ২৩ জানুয়ারি তাঁর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট থেকে মৃত্যুর খবরটি প্রথম জানানো হয়।
দীর্ঘ ৬৩ বছর ধরে রেডিও, টেলিভিশন, ডিজিটাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ল্যারি হাজারো সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার। ল্যারির অনন্য অর্জন তাঁকে সম্প্রচারমাধ্যমের দিকপাল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। পেশাজীবনে নানা স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে পিবোডি ও অ্যামি অ্যাওয়ার্ড।
সত্তরের দশকে ল্যারি কিং বাণিজ্যিক নেটওয়ার্ক ‘মিউচুয়াল ব্রডকাস্টিং সিস্টেম’-এ রেডিও অনুষ্ঠান ‘দ্য ল্যারি কিং শো’ করে জনপ্রিয়তা লাভ করেন। এরপর ১৯৮৫ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত সিএনএনে ‘ল্যারি কিং লাইভ অন সিএনএন’ নামের অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন। রাজনীতিবিদ, ক্রীড়াবিদ, বিনোদনজগতের তারকা, ষড়যন্ত্রতত্ত্বের প্রবক্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিশিষ্টজনের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তিনি।-প্রথম আলো