শিরোনাম
◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ মুজিবনগর সরকারের ৪০০ টাকা মাসিক বেতনের কর্মচারি ছিলেন জিয়াউর রহমান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি ◈ টাইমের প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকায় বাংলাদেশের মেরিনা ◈ দেশের মানুষকে ডাল-ভাত খাওয়াতে  ব্যর্থ হয়েছিল বিএনপি : প্রধানমন্ত্রী ◈ দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েল ফসফসরাস বোমা হামলা ◈ ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপায় নিহতদের ৬ জন একই পরিবারের ◈ কেএনএফ চাইলে আবারও আলোচনায় বসার সুযোগ দেওয়া হবে: র‌্যাবের ডিজি ◈ ওবায়দুল কাদেরের হৃদয় দুর্বল, তাই বেশি অবান্তর কথা বলেন: রিজভী ◈ মুজিবনগর দিবস বাঙালির শৃঙ্খলমুক্তির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় দিন: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২০ জানুয়ারী, ২০২১, ১০:১৩ দুপুর
আপডেট : ২০ জানুয়ারী, ২০২১, ১০:১৩ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে বাংলাদেশ সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

মনিরুল ইসলাম: [২] সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

[৩] তিনি বলেছেন, উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় লাল সবুজের নিশান নিয়ে আওয়ামী লীগ দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী করোনা পরিস্থিতিতে অনেক দেশে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিলেও বাংলাদেশ তা অনেকটাই এড়াতে পেরেছে। ২০২০ সালের সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ।

[৪] বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশনে এ সংক্রান্ত লিখিত প্রশ্নটি উত্থাপন করেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য বেগম রওশন আরা মান্নান। জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরো জানান, ব্রিটেনের অর্থনৈতিক গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর ইকোনোমিক্স এ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ এর ’ওয়াল্ড ইকোনমিক লিগ টেবিল ২০২১’ রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশ এখন যে ধরণের অর্থনৈতিক বিকাশের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তা অব্যাহত থাকলে ২০৩৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশ হবে বিশ্বের ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতি। এ রিপোর্ট মূলত সামনের বছর এবং আগামী ১৫ বছরে বিশ্বে কোন দেশের অর্থনীতি কি হারে বাড়বে তারই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এই রিপোর্ট অনুযায়ী ২০৩৫ সাল নাগাদ ১৯৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান অনেক ধাপ উপরে উঠে ২৫ নম্বরে পৌঁছে যাবে। ২০২০ সালের সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ।

[৫] একই প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ফলে জনগণের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, দেশের মানুষের বর্তমান মাথাপিছু আয় বেড়ে ২ হাজার ৬৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। যা ২০০৬ সালে মাত্র ৫৪৩ ডলার। তিনি বলেন, কৃষিতে বাংলাদেশের সাফল্য ঈর্ষনীয়। কৃষিজমি কমতে থাকাসহ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও বৈরী প্রকৃতিতেও খাদ্যশস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উদাহরণ। ধান, গম ও ভুট্টা বিশ্বের গড় উৎপাদনকে পেছনে ফেলে ক্রমেই এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। খাদ্যশস্য উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশের স্থান দশম। বাংলাদেশ আজ চালে উদ্বৃত্ত দেশ। ২০১৯ সালে বিশ্বে মাছের উৎপাদনে সর্বকালের রেকর্ড ভেঙ্গেছে। এসব সাফল্য অর্জিত হয়েছে সরকারের সঠিক ও সময়োপযোগী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের কারণে।

[৬] সরকারী দলের সদস্য কাজিম উদ্দিন আহমেদের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, শিগগিরই ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম শুরু হবে। আমাদের সরকারের সময়পোযোগী এ সকল দিক নির্দেশনা, উদ্যোগ, পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে দেশে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুহার বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম। দেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতি ও অর্থনীতিতে তার প্রভাব বিবেচনায় রেখেই ইতোমধ্যে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুমোদন করা হয়েছে। এ পরিকল্পনার বাস্তবায়ন মেয়াদকাল হবে জুলাই ২০২০ থেকে জুন ২০২৫ পর্যন্ত। কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারির ফলে সৃষ্ট বিরূপ আর্থ-সামাজিক প্রভাবকে প্রশমিত করতে সরকার কর্তৃক গৃহীত তাৎক্ষণিক ও স্বল্পমেয়াদি পদক্ষেপসমূহ কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি করা। বৈদেশিক সফর এবং বিলাসবহুল ব্যয়কে নিরুৎসাহিত করা। তিনি আরো বলেন, করোনার সময় ৬ হাজার ৯৯০ জন চিকিৎসক, ৫ হাজার ২৪ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স, ৩৮১ জন ফার্মাসিস্ট, ২০২ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া, স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে ৪ হাজার ২১৭ জন চিকিৎসককে করোনাভাইরাস সংক্রমণ সংক্রান্ত তথ্য ও চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য হটলাইনে যুক্ত করা হয়েছে।

[৭] চাকুরিচ্যুত প্রবাসীদের নতুন কর্মসংস্থানের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনা মহামারী শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ফেরত আসা প্রবাসীদের মধ্যে যারা পুনরায় সেসব দেশে ফেরত যেতে ইচ্ছুক, তাদের পুনরায় সেসব দেশে বা অন্য দেশে প্রেরণ ও পুনর্বাসনের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করা হয়েছে।
সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বেগম সুলতানা নাদিরার প্রশ্নের লিখিত জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না- এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ২ শতাংশ খাসজমি বন্দোবস্ত প্রদানপূর্বক একক গৃহ নির্মাণের মাধ্যমে দেশব্যাপী প্রথম পর্যায়ে ৬৬ হাজার ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারের জন্য গৃহনির্মাণ করে দেওয়ার কার্যক্রম চলছে। পর্যায়ক্রমে ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৫২২টি পরিবারকে গৃহনির্মাণ ও ব্যারাকের মাধ্যমে পুনর্বাসন করা হবে।

[৮] তিনি আরও জানান, ১৯৯৬ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর ঘূর্ণিঝড় আক্রান্ত ও নদী ভাঙ্গন কবলিত ভূমিহীন, গৃহহীন ও ছিন্নমূল পরিবর পুনর্বাসনের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সরকার আশ্রায়ণ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। ১৯৯৭ সাল হতে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৪৭৩টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে আশ্রায়ন প্রকল্পের মাধ্যমে পুনর্বাসন করা হয়েছে। এছাড়া ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৬০০ পরিবারের জন্য বিশেষ ডিজাইনের ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। খুরুশকুল আশ্রায়ণ প্রকল্পটি জলবায়ু উদ্বাস্তুদের জন্য বিশ্বের সর্ববৃহৎপুনর্বাসন প্রকল্প।

[৯] বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ মশিউর রহমান রাঙার প্রশ্নের লিখিত জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, বর্তমান সরকার উন্নয়নের সরকার। দেশকে ডিজিটালাইজড এবং মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীতকরণের লক্ষ্যে রূপকল্প-২০২১, দেশকে উন্নত দেশের কাতারে সামিল করার লক্ষ্যে রূপকল্প-২০৪১ এবং দীর্ঘমেয়াদী টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে ডেল্টা প্লান-২১০০ ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ তে উচ্চতর পর্যায়ের ৩টি জাতীয় অভীষ্ট এবং ব-দ্বীপ সংশ্লিষ্ট ৬টি নির্দিষ্ট অভীষ্ট নির্ধারণ কর হয়েছে। ব-দ্বীপ সংশ্লিষ্ট অভীষ্টসমূহ উচ্চতর পর্যায়ের অভীষ্ট অর্জনে অবদান রাখবে। উচ্চতর পর্যায়ের ৩টি জাতীয় অভীষ্ট হচ্ছে- ২০৩০ সালের মধ্যে চরম দারিদ্র্য দূরীকরণ, উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জন এবং ২০৪১ সাল নাগাদ একটি সমৃদ্ধ দেশের মর্যাদা অর্জন।

[১০] সরকারি দলের সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহ’র প্রশ্নের লিখিত জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, জাতিসংঘের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞান বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো ’ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ইন দ্য ফিল্ড অব ক্রিয়েটিভ ইকোনমি’ নামে একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। গত ২০২০ সালের ১১ ডিসেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কো নির্বাহী পরিষদের শরৎকালীন ২১০তম অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, যা জাতিসংঘের কোন অঙ্গসংস্থা কর্তৃক এই প্রথমবারের মত আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রবর্তন করা হলো।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়